tag:blogger.com,1999:blog-4627620045997724582024-03-24T00:34:58.162+06:00অনুশীলনশিল্প-সাহিত্যের চর্চাভূমি ও একটি কিশোর সাময়িকীগ্রন্থগতhttp://www.blogger.com/profile/00674984669281399123noreply@blogger.comBlogger204125tag:blogger.com,1999:blog-462762004599772458.post-68058503977503505872024-03-24T00:32:00.002+06:002024-03-24T00:34:27.043+06:00আমি চেয়েছিলাম / খন্দকার আল ইমরান<div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEhyBpgSqHLsON5JqB0l8QjBygDoaGmTyihSxyMcWlyW5xEsejr0FzLuutg63x_4Z3U-K3WV_wupzMcz2_ZLg9y1q8D3snd6wUtwC6xZpss_6bYIAEUScQqSo_ozogZudcEVEqcrzDYcAWv9Q__MD5x4jH265-xnT-8jKuvFHDnKYjqas6qJ-w8MRbGSWY5N/s320/1599496072333%20(1).png" imageanchor="1" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img border="0" data-original-height="171" data-original-width="320" height="171" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEhyBpgSqHLsON5JqB0l8QjBygDoaGmTyihSxyMcWlyW5xEsejr0FzLuutg63x_4Z3U-K3WV_wupzMcz2_ZLg9y1q8D3snd6wUtwC6xZpss_6bYIAEUScQqSo_ozogZudcEVEqcrzDYcAWv9Q__MD5x4jH265-xnT-8jKuvFHDnKYjqas6qJ-w8MRbGSWY5N/s1600/1599496072333%20(1).png" width="320" /></a></div><br /><p><br /></p><p>১.</p><p>আকাশ আমাকে কখনো ভালবাসেনি আবার কখনো আমাকে পরিত্রাণও করেনি, উড়ে যেতে চেয়েছিলাম পাখি হয়ে কিন্তু পাখা তো আর গজায়নি। মাটি আমাকে ভালবাসেনি আবার কখনো পরিত্রাণও করেনি, চেয়েছিলাম কাফন পেচিয়ে আমি মাটিতে লুটিয়ে পরবো মাটি আমাকে ভক্ষণ করবে, তাও সে করেনি। সাগর আমাকে ভালবাসেনি আবার পরিত্রাণও করেনি, আমি চেয়েছিলাম ডুবরী হয়ে জলের তলদেশে পরে থাকতে কিন্তু সেই জলের মাছেরা আমাকে তাদের সাথে নেয়নি।</p><p><br /></p><p>২. </p><p>আমি ছিলাম পরিত্যক্ত কোনো এক জলাশয়ের কাগজের নৌকার নাবিক। তাই চেয়েও পারিনি আমি বেশী দূর এগোতে দাঁড় বেয়ে। আমি তো চাইনি তোমাদের জলাশয়কে নষ্ট করতে। চেয়েছিলাম পৃথিবীর এই বাস্তবতায় সমাজ নামক অধ্যায়কে আপন করতে। তোমরা নষ্ট করেছো সেই সমাজ। তাই আমি প্রত্যাখ্যানও করেছি তোমাদের সমাজকে তাই তোমরা আমাকে আগাছা ভাবো কিন্তু কী তোমরা ভুলে গেছো এরকম আগাছা দিয়ে যে ওষুধ তৈরি হয় তা দিয়ে তোমার সমাজ চলে!</p><p><br /></p><p>৩.</p><p>প্রকৃতির এক অতি তুচ্ছ জীব উই পোকা। আমি চেয়েছিলাম তোমার বইয়ের উই পোকা হতে । যখন তুমি বই খুলে কবিতা পড়তে আমি বইয়ের ফাঁক থেকে তোমাকে দেখতাম। ছুতে চাওয়াকে বলে না ভালবাসা নাই বা বলে দেহ ভক্ষণ করাকে। কাউকে ভালোবেসে অসীম দূরত্ব থেকে তার জন্যে প্রার্থনার নামই ভালবাসা।</p><p><span style="font-family: georgia;"><b><br /></b></span></p><p><span style="font-family: georgia;"><b>লেখক : যুগ্ন আহবায়ক; পরিবেশ বীক্ষণ, কুড়িগ্রাম</b></span>।</p>রিদওয়ান পর্বhttp://www.blogger.com/profile/14189854163753216345noreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-462762004599772458.post-176691351011940332024-02-18T16:54:00.003+06:002024-02-18T16:56:10.561+06:00শিল্প ও সত্য - ২ / মো. আরাফাত হোসেন রাফি<p> </p><div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEi2nE3VQOi0vee7Ei5yw5xc7mlfND4LBFGCn0dERRPps2LQWYauDvuyNmMz79leJYXZB6o7BLXbQFPNpEXYINGduzP8ZRvajkAzfK9Kg0wE2o6u8Kc8kJ_Uuxck4JgSkUFkThYVidnfkbVeaZL1eRIdA8SrO735bxNpbdenxV5FQnNkOR2pLj1U4apmjcGV/s736/bb3b479251878b7f93e93ec0fcd27f00.jpg" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img border="0" data-original-height="552" data-original-width="736" height="240" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEi2nE3VQOi0vee7Ei5yw5xc7mlfND4LBFGCn0dERRPps2LQWYauDvuyNmMz79leJYXZB6o7BLXbQFPNpEXYINGduzP8ZRvajkAzfK9Kg0wE2o6u8Kc8kJ_Uuxck4JgSkUFkThYVidnfkbVeaZL1eRIdA8SrO735bxNpbdenxV5FQnNkOR2pLj1U4apmjcGV/s320/bb3b479251878b7f93e93ec0fcd27f00.jpg" width="320" /></a></div><p><br /></p><p>শিল্পীর স্বপ্ন বলতে প্রকৃত অর্থে কী বোঝায় এবং তা আমাদের কী জানান দেয়?</p><p><br /></p><p>একজন সুন্দরী নারীর চিত্র কাকে মডেল ধরে আঁকা হয়েছে তা জরুরি নয়, বরং তা সুন্দরের আদর্শ প্রকাশ কি না সেটাই গুরুত্বপূর্ণ। পালমা ভেকিয়োর ABlonde Woman বিশেষ কোনো নারীর প্রতিকৃতি নয়, বরং আদর্শ সুন্দরী নারীর প্রতিরূপ কিংবা বলা যেতে পারে যে ভেকিয়োর কল্পনায় ধরা পড়া নারীর আদর্শ রূপ বা আদল। রেনেসাঁ চিত্রীরা সচেতনভাবে মানুষের আদর্শ রূপ তুলে ধরেছেন। আদর্শায়ন আমাদের প্লেটোর গড়ন সম্পর্কিত তত্ত্ব মনে করিয়ে দেয়। ‘আদর্শায়নে শিল্প বিশেষ কোনো বস্তুকে নয়, গড়নকে অনুকরণ করে’, তিনি বলেছিলেন। কিন্তু বিতর্ক করে বলা যায় যেকোনো কিছুই অনুকরণ করে নির্মিত হয় না, কারণ আদর্শ বা স্বপ্ন শিল্পকর্মটি সমাপ্ত হওয়ার আগে মূর্ত হয়ে ওঠে না। প্লেটো মনে করতেন যে গড়নই হলো চূড়ান্ত বাস্তবতা এবং গড়নের জ্ঞানই গভীর সত্যের জ্ঞান। অনুকরণের মাধ্যমে তাকে প্রকাশ করলে সত্যই প্রকাশ করা হয়। যদি আমরা প্লেটোর গড়ন সম্পর্কিত তত্ত্ব গ্রহণ নাও করি, আদর্শায়ন কোনো সত্য হয়তো প্রকাশ করে থাকে। আদর্শায়ন মানুষের শৈল্পিক বিচারের একটি প্রকাশ, যা উপলব্ধির ভেতর দিয়ে নিজস্ব বিচার-বিশ্লেষণের সঙ্গে তুলনা সম্ভব হয়ে ওঠে। একটি আদর্শে অভিজ্ঞতার প্রতিফলন থাকে এবং তাকে একটি মানদণ্ড মনে করে নিজস্ব অভিজ্ঞতার স্বরূপটি জানা যায়। শিল্প সাধারণের যে মনোযোগ আকর্ষণ করে থাকে তাও এক ধরনের সত্যের প্রকাশ বলে মনে করা হয়। একটি ব্যক্তি বা বস্তু কত বেশি বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত তা-ই দর্শকের মনোযোগ কেড়ে থাকে। Van Gogh’s Chair সেই রকম একটি চিত্রকর্ম। দৈনন্দিন জীবনে যা আমাদের দৃষ্টি এড়িয়ে যায়, শিল্পী সেই সত্য দেখে থাকেন এবং তার বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত অস্তিত্বের মূল্যায়ন করেন। সেই কারণেই আমরা শিল্পকে এতটা মূল্যবান মনে করি। কিন্তু সব শিল্পই স্বপ্ন বা সত্য তুলে ধরার চেষ্টা করে না। অনেক শিল্পকর্ম আছে, যা বিশেষ কোনো উদ্দেশ্য নিয়ে নয়, শুধু উপভোগের জন্য সৃষ্টি। আবার শিল্প থেকে অনেক তথ্য প্রাপ্তির প্রত্যাশা শিল্প উপভোগের ধরনটিকে বুদ্ধিবৃত্তিক করে তোলে। আমরা সবসময় সাদৃশ্য, পরোক্ষ মিল, বারতা, স্বপ্ন ইত্যাদি খুঁজে ফিরি, কিন্তু শিল্পীর স্বপ্ন শুধু সত্য প্রকাশের জন্য মূল্যবান নয়, তার প্রকাশধর্মী, আবেগধর্মী ইত্যাদি বৈশিষ্ট্যের জন্যও বটে। আবার চিত্রকর্ম থেকে সবসময় বারতা পাওয়া যায় না। আর তথ্য বা বারতার ওপর সবসময় জোর দেওয়া হলে শিল্প হিসেবে একটি চিত্রকর্ম যা দিতে পারত তা পাওয়া সম্ভব হয় না।</p><p><br /></p><p>কখনো কখনো শিল্পকর্ম সত্য না মিথ্যা তা নির্ণয়ে ঐতিহ্যের ওপর নির্ভর করা হয়। কিন্তু এ বিষয়েও ভিন্নমত রয়েছে। শিল্পকর্ম ঐতিহ্য দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয় না। খুব কমসংখ্যক শিল্পকর্মেরই ঐতিহ্যের সূত্র রয়েছে। অনেক সমালোচকই বিশ্বাস করেন যে শিল্প সবসময় সত্য তুলে ধরে, যা ওই শিল্পকর্মের মূল্যায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। কিন্তু সবচেয়ে বাস্তববাদী বা স্বভাববাদী ধারার চিত্রকলাও অনেক ক্ষেত্রে ঐতিহ্যসূত্র তুলে ধরে না বা কিছু বোঝায়ও না। যেমন, সৈকতে হাঁটতে হাঁটতে ভেসে আসা একটি কাঠ পাওয়া গেল যার আকৃতি পাখির মতো। এটা দেখে বিস্মিত হওয়া যায় বটে, কিন্তু তা পাখিকে উপস্থাপন করে না। এটা পাখির মতো হলেও পাখি নয়। এটা একটি কাঠ। এই সাদৃশ্য সত্যের অন্তর্গত নয়। সাদৃশ্য ও উপস্থাপনার মধ্যে পার্থক্য আছে। শিল্পকর্ম, শিল্পবস্তু ও প্রথার মধ্যে একটি আন্তসম্পর্ক আছে। শিল্পবস্তুকে শিল্পকর্মে তুলে ধরার জন্য সাদৃশ্য ও প্রথার প্রয়োজন রয়েছে। এই দুইয়ের মাঝে যে সম্পর্ক তা একে অপরের পরিপূরকই শুধু নয়, তা একের সঙ্গে অন্যের সম্পর্কের ফাঁকটুকুও পূরণ করে থাকে। যেখানে এই দুইয়ের সম্পর্ক গভীর সেখানে ঐতিহ্যসূত্র ততই অপ্রয়োজনীয় হয়ে পড়ে, কারণ এই চিত্রকর্মগুলো রং, রেখা, বায়ব্য ও রৈখিক পরিপ্রেক্ষিতসহ বাস্তবতা তুলে ধরে এবং দর্শকরা তাকে বস্তু ও ঐক্ষিক জগতের উপস্থাপনা ব্যতিরেকে আর কিছু ভাবতে পারে না। কিন্তু আসলে তা জগতকে সঠিকরূপে তুলে ধরে না। চিত্রকলার ক্ষেত্রে যেখানে সাদৃশ্য খুব কম সেখানেও তা জগতের কোনো কিছুর রূপ বা আদল তুলে ধরে। বিভিন্ন শিল্পীর হাতে একই জিনিসের রূপ বা আদলের নির্মাণ ভিন্ন হতে পারে, কিন্তু চূড়ান্তভাবে তা মূলবস্তুকেই মনে করিয়ে দেয়। অর্থ্যাৎ শৈলীর ভিন্নতা থাকলেও শেষমেশ তা বাস্তবতাই তুলে ধরে। দৃশ্য চিত্রণে পরিপ্রেক্ষিত নির্মাণ আমাদের কাছে ‘সঠিক’ মনে হয় আর এই ধারণাটি আমরা উত্তরাধিকার সূত্রে লাভ করেছি। এই শৈলীগত সূক্ষ্মতা রেনেসাঁ যুগের অর্জন। কিন্তু তার পরও বেশির ভাগ ছবিতে এই বৈশিষ্ট্যের বিচ্যুতি লক্ষ্য করা যায়। চিত্রপটে স্থান ছাড়ার বিষয়টিও একটি শৈল্পিক দক্ষতা যার সঙ্গে চিত্রের ‘সঠিক’ হওয়া না হওয়ার ধারণাটি যুক্ত। কিন্তু ছবিতে সঠিক রূপ বা আদলে জগতের বস্তুপুঞ্জ তুলে ধরাই শেষ কথা নয়। তার সঙ্গে কোনো ঘটনা, কাহিনী বা বিষয় জড়িত থাকতে পারে যা ওই ছবির অন্তর্নিহিত সত্য।</p><p><br /></p><p><span style="font-family: times;"><b>লেখক : শিক্ষার্থী, নিটার, প্রযুক্তি ইউনিট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।</b></span></p><div><br /></div>রিদওয়ান পর্বhttp://www.blogger.com/profile/14189854163753216345noreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-462762004599772458.post-23370071827456009882024-01-20T22:38:00.002+06:002024-01-21T01:03:37.685+06:00শিল্প ও সত্য / মো. আরাফাত হোসেন রাফি<p><br /></p><div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><span style="text-align: left;"><div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEhzV12r2fTcv_V4S0ZB-l9mRKhXVcMRjUudzWK2QYeHr8HNf4ieni1RR7k2zTJ64rI3vIZErUrYQWoT6dE68amhteQIdbejOf1ATdunuZadnextSsSEfL6UPnxC90d4IzSBO_mCH8hNwWK56vx3r2clcEFO_y3mIli5hg-RT_pong_gEStgKLV2-al1Mr6J/s901/Freediver-72_2.jpg" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img border="0" data-original-height="464" data-original-width="901" height="165" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEhzV12r2fTcv_V4S0ZB-l9mRKhXVcMRjUudzWK2QYeHr8HNf4ieni1RR7k2zTJ64rI3vIZErUrYQWoT6dE68amhteQIdbejOf1ATdunuZadnextSsSEfL6UPnxC90d4IzSBO_mCH8hNwWK56vx3r2clcEFO_y3mIli5hg-RT_pong_gEStgKLV2-al1Mr6J/s320/Freediver-72_2.jpg" width="320" /></a></div><br /><br /></span></div><div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><span style="text-align: left;">শিল্প সম্পর্কিত একটি প্রচলিত প্রশ্ন হলো, শিল্প কি দর্পণ যেখানে জীবনের প্রতিফলন দেখা যায়? কিছু অস্পষ্টতা ও বিভ্রান্তি মাঝেমধ্যে নানা বিতর্ক উসকে দিলেও এর উত্তর মোটামুটি হ্যাঁ সূচক। আমরা জীবনে যে ধরনের আবেগ, ভাবনা, নীতি-নৈতিকতার দ্বন্দ্ব, সুখ-দুঃখ ইত্যাদির অভিজ্ঞতা লাভ করি শিল্পের সেই একই ধরনের অনুভূতি জাগিয়ে তোলার ক্ষমতা রয়েছে। যে মানুষের শিল্প সম্পর্কে প্রতিক্রিয়া জানানোর ক্ষমতা আছে তিনিই এ বিষয়ে একমত হবেন। </span></div><p>নব্যধ্রুপদী তত্ত্ব অনুযায়ী শিল্প অনুকৃতি, সৌন্দর্য ও নৈতিক গুরুত্ব—এই তিনভাবে সত্যের সঙ্গে সম্পর্কিত।</p><p>আবার বিশ্লেষণধর্মী অভিজ্ঞতাবাদী তত্ত্ব অনুযায়ী সত্যের সঙ্গে শিল্পের প্রয়োজনীয় কোনো সম্পর্ক নেই। শিল্পের রম্যবাদী তত্ত্ব বলছে যে শিল্প অধিবিদ্যক সত্য প্রকাশ করে। গ্রিক দার্শনিক প্লেটো বলেছিলেন, "শিল্পী বাহ্যিক আদলের অনুকারী হওয়ায় সত্য থেকে অনেক দূরে অবস্থান করে।" তাঁর মতে, "যে জীবনের অবস্থান সত্য থেকে অনেক দূরে শুধু সেই জীবনের বিপজ্জনক ও অগভীর অনুকৃতিই হলো দুঃখ-কষ্ট জাগিয়ে তোলা নয় বরং আমাদের জন্য একটি ধর্মীয় বার্তা ছেড়ে যাওয়া।</p><p>এই দৃষ্টিভঙ্গি শিল্পে বস্তুর সঠিক উপস্থাপনাকে সত্য হিসেবে তুলে ধরেনি। শিল্পী যা প্রত্যক্ষ করেন তার হুবহু অনুকৃতি নির্মাণ করেন না, বরং বাস্তবতার গভীরের এক অনুভূতি তুলে ধরতে সচেষ্ট হন। শিল্পী দৃশ্যগ্রাহ্য বস্তুর মাধ্যমে তার ‘স্বপ্ন’ তুলে ধরেন। এই দৃষ্টিভঙ্গি বাহ্যিকভাবে কোনো বস্তু কী দেখায় আর কী প্রকাশ করে তার একটি পার্থক্য নির্দেশ করে।</p><p>যে শিল্পকর্মটি কোনো স্বপ্ন প্রকাশ করছে বলে কারো কাছে মনে হচ্ছে, অন্যের কাছে তা-ই প্রাণহীন ও নির্জীব। কোনো বিশেষ বৈশিষ্ট্যের পৌনঃপুনিকতা শিল্পীকে মুদ্রাদোষাক্রান্ত করার পাশাপাশি তাঁর কাজের গুরুত্ব কমিয়ে দেয় এবং তাঁর স্বপ্নও তখন পুরনো হয়ে যায়। একটি শিল্পকর্ম কোনো কিছু প্রকাশ করার আগে থেকেই নির্মিত হয়, কিন্তু তা যদি সত্য বর্জিত হয় তাহলে তা ব্যর্থ হয়েছে বলে আমরা মত দিই। শিল্পীর স্বপ্ন ত্রুটিপূর্ণ বলে তাঁকে খারিজ করে দেওয়ার চেষ্টা করি।</p><p><b>লেখক : শিক্ষার্থী, নিটার, প্রযুক্তি ইউনিট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়</b>।</p><p><br /></p><div><br /></div>রিদওয়ান পর্বhttp://www.blogger.com/profile/14189854163753216345noreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-462762004599772458.post-50770943191316728402023-12-05T12:06:00.004+06:002023-12-05T12:09:22.315+06:00দুটি কবিতা / তারেক খান মজলিশ তারা<p> </p><div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEidYkq6UPody9TGMmdYQjZdPgv5nJxMD4x4Vnmjb_n9wFjoVHkQ0LWgVgSfHQzQXdT-_5wWQlWdoCkNMW3mjBg7Bzuz18K6xmvunHHeXmqFhCC8CVHANM-t94MJFXKUf9s1Atx63TrUEUD3WRO8mqhes5Qk_v3T_i7cC6RZ1H3pFobZ2MUoL9XjQvA-A3n1/s500/1599391663796%20(1).png" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img border="0" data-original-height="264" data-original-width="500" height="169" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEidYkq6UPody9TGMmdYQjZdPgv5nJxMD4x4Vnmjb_n9wFjoVHkQ0LWgVgSfHQzQXdT-_5wWQlWdoCkNMW3mjBg7Bzuz18K6xmvunHHeXmqFhCC8CVHANM-t94MJFXKUf9s1Atx63TrUEUD3WRO8mqhes5Qk_v3T_i7cC6RZ1H3pFobZ2MUoL9XjQvA-A3n1/s320/1599391663796%20(1).png" width="320" /></a></div><br /><p></p><p><br /></p><p><b>কলমাত্মকথা</b></p><p><br /></p><p>একটি খাতা একটি কলম </p><p>হাজার কথা বলে</p><p>এই কলমেই বলা কথা</p><p>সবাই মেনে চলে।</p><p><br /></p><p>ভিন্ন প্রকার কলম খাতায়</p><p>ভিন্ন জনের মত</p><p>এক নিমিষেই ওলটপালট</p><p>আইন-আদালত।</p><p><br /></p><p>যেই কলমে জীবন গড়ে</p><p>সেই কলমেই ভাঙে</p><p>সাদা খাতা কেউ পড়েনা </p><p>লেখার পরে মানে।</p><p><br /></p><p>গুরুজনের কলম ছড়ায়</p><p>উদ্দীপনার আলো</p><p>সেই আলোতেই আঁধার কাটে</p><p>মন্দেরা হয় ভালো।</p><p><br /></p><p>এক কলমের খোঁচায় গেল</p><p>শত শত প্রাণ</p><p>আরেক কলম মুক্তি লেখে</p><p>শিনা করে টান।</p><p><br /></p><p>যেই কলমে লেখা বাণী</p><p>পুণ্য হয়ে যায়</p><p>সেই পুণ্যের বিপরীতে</p><p>পাপও লেখা রয়।</p><p><br /></p><p>কলম প্রথম প্রকাশ করে</p><p>বোবা মনের ভাষা</p><p>কখনো সুখে দুঃখে আবার</p><p>কখনো সর্বনাশা।</p><p><br /></p><p>এই কলমে অমর হলো</p><p>রবি নজরুলের বাণী</p><p>কত খাতা পড়লো ছেঁড়া</p><p>পেতে চরণ খানি।</p><p><br /></p><p><br /></p><p><b>নবোদ্রোহী</b></p><p></p><p><br /></p><p>আমি নিহারিকা নক্ষত্র হিমাচল গিরিপথ</p><p>বজ্রপাতের অগ্নি,</p><p>আমি রক্ত ঝরা সৈনিকের ঐ</p><p>ছেড়ে আসা পথ সঙ্গী।</p><p><br /></p><p> আমি বিস্ফোরিত এটমবোমার</p><p>ধ্বংসলীলার তাণ্ডব,</p><p>আমি মন্ত্র ভুলে অস্ত্র হাতে</p><p>সাজাই পূজার মণ্ডপ।</p><p><br /></p><p>আমি আজরাইল বেসে মৃত্যু ঘেসে</p><p>মৃত্যুরে করি পান,</p><p>আমি শাসকনামের শোষক খুঁজে</p><p>রুহুতে মারি টান।</p><p><br /></p><p>(সংক্ষেপিত)</p><p><br /></p><p><br /></p><p><br /></p><p><br /></p>রিদওয়ান পর্বhttp://www.blogger.com/profile/14189854163753216345noreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-462762004599772458.post-22262125296804880652023-11-09T23:15:00.000+06:002023-11-09T23:15:03.088+06:00কুড়িগ্রামে হেমন্তের কবিতা উৎসব অনুষ্ঠিত<p></p><div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgJ98oRUeKsy3hReyTo92JD3qJDVCDf0psOjcyUxppzVJztrqDDxE0vfEMj3rQhwsdOt6ke5zrZghnTl9LlvHjRItHdqhcDQ4ol349Mb-gLpF3A3MNCHPC2LLprc02xRzy4SEZgeBp5xnjRsmHlyUtEDTN4PRt58pV5fieZrLR4c3_vbFlV-CYNJk-Iv8dN/s742/IMG-20231108-WA0014_1.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img border="0" data-original-height="494" data-original-width="742" height="213" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgJ98oRUeKsy3hReyTo92JD3qJDVCDf0psOjcyUxppzVJztrqDDxE0vfEMj3rQhwsdOt6ke5zrZghnTl9LlvHjRItHdqhcDQ4ol349Mb-gLpF3A3MNCHPC2LLprc02xRzy4SEZgeBp5xnjRsmHlyUtEDTN4PRt58pV5fieZrLR4c3_vbFlV-CYNJk-Iv8dN/s320/IMG-20231108-WA0014_1.jpg" width="320" /></a></div><br /> <p></p><p>কুড়িগ্রাম সাহিত্যসভার পঞ্চম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে গত ৮ই নভেম্বর,২০২৩ ডিসি অফিস সংলগ্ন সরোবরে ‘হেমন্তের কবিতা উৎসব-১৪৩০’ অনুষ্ঠিত হয়েছে৷ 'হেমন্তের কবিতা উৎসব-১৪৩০' উদ্বোধন করেন জাতীয় শিল্পকলা একাডেমীর প্রাক্তন উপ-পরিচালক, বিশিষ্ট নাট্যকার গোলাম সারোয়ার৷ উদ্বোধন উপলক্ষ্যে রাধাচুড়া গাছ রোপন করা হয়৷ এরপর সম্প্রতি প্রয়াত কবি আসাদ চৌধুরী, মলয় রায়চৌধুরী, প্রাবন্ধিক সুশান্ত বর্মণের মাতা ও সারা বিশ্বে চলমান যুদ্ধে যে নিরপরাধ জনসাধারণের মৃত্যু হচ্ছে সবার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়৷</p><p>স্বাগত বক্তব্য রাখেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব অধ্যক্ষ রাশেদুজ্জামান বাবু৷ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক কবি আহম্মেদুল কবিরের সভাপতিত্বে ও সাদিকুর রহমানের সঞ্চালনায় আয়োজনে কবিতাপাঠ ও সাহিত্যালোচনা করেন কুড়িগ্রাম ও ভারত থেকে আগত কবিগণ৷ আয়োজনে ভারত থেকে আগতদের মধ্যে আলোচনা করেন কবি ও প্রাবন্ধিক সুবীর সরকার, লোকমানস সম্পাদক কবি দেবাশিস ভট্টাচার্য ও কথা লাহরী সম্পাদক কবি সৈকত সেন। কুড়িগ্রাম থেকে আলোচনা করেন সাংবাদিক ইউসুফ আলমগীর, কবি আশীষ বকসী, বিন্দু সম্পাদক কবি সাম্য রাইয়ান, কুড়িগ্রাম ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি অনিরুদ্ধ প্রণয় প্রান্তিক, হিজিবিজি সম্পাদক রাজ্য জ্যোতিসহ আরো অনেকে।</p><p>বিকেল চারটায় শুরু হয়ে অনুষ্ঠান চলে সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত৷ কবিতায় মুখরিত হয়ে ওঠে কুড়িগ্রাম সরোবর৷ এছারাও আয়োজনে অতিথিদের হাতে শুভেচ্ছা স্মারক তুলে দেয়া হয় এবং বই উপহার দেয়া হয়৷</p><p><br /></p>রিদওয়ান পর্বhttp://www.blogger.com/profile/14189854163753216345noreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-462762004599772458.post-48730300225970127072023-10-27T23:00:00.004+06:002023-10-27T23:00:48.126+06:00সাগর এমদাতের কবিতা<p></p><div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEjPl3AMOF52WlmHyelJXrWrBTBnEqmdl-zcA4XXHpcgshIrrouwgbXHlHZOSP36O2bfXuNil64fChkv2b7IzglVC8USrfCuoMKXRFYf7qKlp5aN4qZVeXiXgCx4HE7wuYWBtYnvMJWEGnI1ZFpOSYKyO4Ta__9bGIeS1-IVUhETeIdhDtIyO3cEsbqWAA-x/s1280/IMG-20231027-WA0000-01.jpeg" imageanchor="1" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img border="0" data-original-height="1280" data-original-width="853" height="320" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEjPl3AMOF52WlmHyelJXrWrBTBnEqmdl-zcA4XXHpcgshIrrouwgbXHlHZOSP36O2bfXuNil64fChkv2b7IzglVC8USrfCuoMKXRFYf7qKlp5aN4qZVeXiXgCx4HE7wuYWBtYnvMJWEGnI1ZFpOSYKyO4Ta__9bGIeS1-IVUhETeIdhDtIyO3cEsbqWAA-x/s320/IMG-20231027-WA0000-01.jpeg" width="213" /></a></div><br /> <p></p><p><br /></p><p> <b>চিত্রায়ণ</b> </p><p><br /></p><p>অভাবি আমি স্নিগ্ধ পবনের,</p><p>এলো চুল তোমার হয়েছে তার ব্যারিকেড! </p><p>মুচোন কর হে মহীয়সী অভাব মোর,</p><p>খুলে দাও ব্যারিকেড। </p><p><br /></p><p>শুভ্রদন্তের হাসিতে তোমার কপোল জুড়ে টোল,</p><p>স্কন্দের অংশ জুড়ে বেণির বুনন! </p><p>সেই বেণিও করেছে মোরে অভাবি,</p><p>মুচোন কর হে মহীয়সী অভাব মোরে।</p><p><br /></p><p>ভালে মোর লিখে দাও তোমার কৃষ্ণবর্ণ বদন,</p><p>দলিল কর মোর নামে তোমার ওষ্ঠযূগল!</p><p>মুচোন কর হে মহীয়সী অভাব মোর,</p><p>থলে ভরে দাও তোমার স্নিগ্ধতার সিক্ত চুল!</p><p><br /></p><p>যে পবনের অভাবি আমি দেউলিয়া!</p><p>তুমি তার বাঁধা, বাঁধা তোমার তন্বী গড়ন দেহে,</p><p>কপোলের টোল।</p><p>আমি ঋণ চাই তোমার বেঁকে যাওয়া ঠোঁটের হাসি;</p><p><br /></p><p>বেখেয়ালি ইচ্ছার অভাব মোর,</p><p>অভিমান তোমার হয়েছে ব্যারিকেড! </p><p>মুচোন কর অভাব মোর হে মহীয়সী, </p><p>খুলে দাও ব্যারিকেড!</p><p><br /></p><p>তুমি তো মহীয়সী ভারেভবানি!</p><p>কৃষ্ণতার রূপ, কঙ্কন জুড়ার মতো উজ্জ্বল তুমি!</p><p>কচিপাতার মতো সজীব, ভ্রুযূগল যেন যোদ্ধার ধনুক!</p><p>নাক যে তার তীর-ঠোঁট যেন তোমার গোলাপ পাপড়ি।</p><p>পা যেন তোমার যোদ্ধার তরবারি!</p><p><br /></p><p><br /></p><p> <b>আলোর প্রতিকৃতি</b></p><p><br /></p><p>দেখেছি তারে শত আলোক বর্ষদূরে!</p><p>কখনো ছায়াপথ, কখনো উল্কা, কখনো ধূমকেতুর মাঝে তার একক কর্তৃত্ব; পৃথিবীর সব বৃক্ষের অন্নদাতা সে।</p><p>দীপ্ত মেজাজে পৃথিবীর প্রহরী হয়ে!</p><p><br /></p><p>যাকে উপমিত কিছু কল্পিত রমণীর মুখ,</p><p>সেই ধূসর রমণী শশী তার আলোর কৃপায় উজ্জ্বল!</p><p><br /></p><p>তার একটু অভিমানে পৃথিবী হতে পারে বরফ খণ্ড!</p><p>মেজাজী হলে ভূমি হবে চৌচির। </p><p>সকল সজীব শস্য ক্ষেত পুরে হবে মরুভূমি! </p><p><br /></p><p>তার থেকে শুরু তাপের পূজা,</p><p>সৃষ্টি করেছে অগ্নি পূজক কনফুসিয়াস! </p><p>তার পায়ে ভিক্ষা মাঙে ইতালির ভিসুভিয়াস। </p><p>সে'ত এক জ্বলন্ত অগ্নি পিণ্ড; বিধাতার উনুন!</p><p><br /></p><p>আকাশচুম্বী অট্টালিকায় থাকা কিছু জীবের জন্য অভিশাপ সে; ছেড়া কাঁথায় তীব্র শীতে ভাইব্রেশন </p><p>দেহের জন্য সে এক চরম আশীর্বাদ। </p><p><br /></p><p>আগুনের ওহমের প্রাচীর ভেঙ্গে প্রভাতে আগমণ!</p><p>ঈশ্বরের উপহার সে; তারে বলি পৃথিবীর সে এক জ্বলন্ত ভিসুভিয়াস! আলোর প্রতিকৃতি।</p><div><br /></div>রিদওয়ান পর্বhttp://www.blogger.com/profile/14189854163753216345noreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-462762004599772458.post-76920559109305779232023-10-27T10:57:00.003+06:002023-10-27T15:10:41.901+06:00মিজান খন্দকার সাহিত্য পুরস্কার ও স্মারক বক্তৃতা -২০২৩ অনুষ্ঠিত<p></p><div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEiXjVruAFHGLwETs7eTjMBbFGOvw_RhHAiflUg3KohTqAMn0QQ5jdq7JHPF-aEXmhe3HvgUuDBam_iVzmZxZ0JbNU9T-fSYBLl_hu1h-Ww0Jwrh9-i049NukbxbI3qIzfskpQ_oNhZlV_wVZIhzmoA7i9ngXDznI32JEiX3Omi7_6TK9z9lTX0PvqoL24PR/s768/IMG-20231026-WA0025_1.jpg" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img border="0" data-original-height="525" data-original-width="768" height="219" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEiXjVruAFHGLwETs7eTjMBbFGOvw_RhHAiflUg3KohTqAMn0QQ5jdq7JHPF-aEXmhe3HvgUuDBam_iVzmZxZ0JbNU9T-fSYBLl_hu1h-Ww0Jwrh9-i049NukbxbI3qIzfskpQ_oNhZlV_wVZIhzmoA7i9ngXDznI32JEiX3Omi7_6TK9z9lTX0PvqoL24PR/s320/IMG-20231026-WA0025_1.jpg" width="320" /></a></div><p></p><p>তীব্র কুড়িগ্রামের আয়োজনে কুড়িগ্রাম পাবলিক লাইব্ররীতে গত ২৫ অক্টোবর, ২০২৩ মিজান খন্দকার স্মারক বক্তৃতা ও সাহিত্য পুরষ্কার অনুষ্ঠিত হয়েছে। 'সব বৃক্ষ মহোদয় হয় না' কাব্যগ্রন্থের জন্য এবারের মিজান খন্দকার সাহিত্য পুরস্কার-২০২৩ কবি মোকলেছুর রহমানকে প্রদান করা হয়। 'মিজান খন্দকারের কবিতায় যাপিত জীবনের রূপ বৈচিত্র' বিষয়ের উপর মিজান খন্দকার স্মারক বক্তৃতা উপস্থাপন করেন অনুশীলন সম্পাদক রিদওয়ান পর্ব।</p><p><br /></p><p>তীব্র কুড়িগ্রাম সম্পাদক সুশান্ত বর্মণের সভাপতিত্বে ও সাদিকুর রহমানের সঞ্চালনায় আয়োজনে বক্তব্য রাখেন মিজান খন্দকার সাহিত্য পুরস্কার ও স্মারক বক্তৃতা-২০২৩ এর প্রধান অতিথি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ শাহাবুদ্দিন, 'সব বৃক্ষ মহোদয় হয় না' কাব্যগ্রন্থের উপর বক্তব্য উপস্থাপন করেন কবি আহাম্মেদুল কবির; বক্তব্য রাখেন কুড়িগ্রাম উদীচী সভাপতি নেজামুল হক বিলু, কবি আল মাহমুদ হেলালুজ্জামান, একাল সম্পাদক জুলকারনাইন স্বপন। শুভেচ্ছা জানিয়ে বক্তব্য রাখেন কুড়িগ্রাম ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি অনিরুদ্ধ প্রণয় প্রান্তিক, হিজিবিজি সম্পাদক রাজ্য জ্যোতি, পদ্মকলি খেলাঘর আসরের সংগঠক রুহুল আমিন হৃদয় ও অন্যান্যরা। আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন কবি মিজান খন্দকারের সহধর্মিণী জেসমিন আরা পারুল।</p><p><br /></p><p>কবি মোকলেছুর রহমানকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানায় ছাত্র ইউনিয়ন কুড়িগ্রাম জেলা সংসদ, বিন্দু, হিজিবিজি, অনুশীলন ও পদ্মকলি খেলাঘর আসর। কবি মোকলেছুর রহমানকে ফুলেল মালা পড়িয়ে বরণ করে নেন তীব্র কুড়িগ্রাম সম্পাদক সুশান্ত বর্মণ। এছারাও তীব্র কুড়িগ্রাম থেকে অনুশীলন সম্পাদক রিদওয়ান পর্বকে স্মারক বক্তৃতার জন্য সম্মাননা প্রদান করা হয়।</p><div><br /></div>রিদওয়ান পর্বhttp://www.blogger.com/profile/14189854163753216345noreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-462762004599772458.post-37825656798170392832023-10-22T23:23:00.000+06:002023-10-22T23:23:05.572+06:00কুড়িগ্রামে আর্ট ফেস্টিভ্যাল অনুষ্ঠিত<p></p><div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEidOZExxbo49KK-MpxerJX8IuOyiS8fQO8R62VmB5Abv2o7pmDVq0IdNNydzlohXA23mALI92K-lFSN1Tnkfo9A4s2wsV5Ulv0BODeRHTsqPCyxMfLbXlbESdcwjnl4UbkXvDsXElRePQNbAe7yj_SIkCaFND_TQwpIaQ5EqxZ-zQ4CZ1a8qz9sxX5iABpX/s686/IMG-20231021-WA0077_1.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img border="0" data-original-height="355" data-original-width="686" height="166" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEidOZExxbo49KK-MpxerJX8IuOyiS8fQO8R62VmB5Abv2o7pmDVq0IdNNydzlohXA23mALI92K-lFSN1Tnkfo9A4s2wsV5Ulv0BODeRHTsqPCyxMfLbXlbESdcwjnl4UbkXvDsXElRePQNbAe7yj_SIkCaFND_TQwpIaQ5EqxZ-zQ4CZ1a8qz9sxX5iABpX/s320/IMG-20231021-WA0077_1.jpg" width="320" /></a></div><br /> <p></p><p>কুড়িগ্রাম ইশকুল, হিজিবিজি ম্যাগাজিন , অনুশীলন ও কুড়িগ্রাম সাহিত্যসভার যৌথ আয়োজনে ও উৎসর্গ নার্সিং ইন্সটিটিউট এর সহযোগিতায় ডিসি পার্কে(সরোবর) অনুষ্ঠিত হলো আর্ট ফেস্টিভ্যাল। বৃক্ষরোপণ করে আর্ট ফেস্টিভ্যালের উদ্বোধন করেন কুড়িগ্রাম পুলিশ সুপার আল আসাদ মোঃ মাহফুজুল ইসলাম। আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কুড়িগ্রাম পৌরসভার মেয়র কাজিউল ইসলাম ও বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রাশেদুজ্জামান বাবু। উৎসর্গ নার্সিং ইনষ্টিটিউটের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন খোরশেদ আলম। আর্ট ফেস্টিভ্যালটি সঞ্চালনা করেন কুড়িগ্রাম সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জান্নাতুল ফিরদাউস মিম। </p><p><br /></p><p>মোট ছয়টি ইভেন্টে আর্ট ফেস্টিভ্যালটি অনুষ্ঠিত হয়েছে। নাচ, গান, কবিতা আবৃত্তি, চিত্রপ্রদর্শনী, লাইভ পেইন্টিং ও হিজিবিজির মোড়ক উন্মোচনে মুখরিত হয়ে ওঠে শিশু-কিশোর সমারোহের পরিবেশ। লাইভ পেইন্টিং ইভেন্টে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন কুড়িগ্রাম পৌরসভার মেয়র কাজিউল ইসলাম ও বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রাশেদুজ্জামান বাবু। উপস্থিত শিশু-কিশোরদের সাথে সম্মিলিতভাবে হিজিবিজি ম্যাগাজিনের মোড়ক উন্মোচন করেন মেয়র কাজিউল ইসলাম, কুড়িগ্রাম সাহিত্যসভার আহাম্মেদুল কবির, হিজিবিজি সম্পাদক রাজ্য জ্যোতি, অনুশীলন সম্পাদক রিদওয়ান পর্ব, কুড়িগ্রাম ইশকুলের সংগঠক সান্নিধ্য বর্মা স্বরুপ, আবৃত্তিশিল্পী ফাতিহা তাফসির বর্ষা, সংগীতশিল্পী আফ্রিদা আবেদিনসহ আরো অনেকে।</p><p>এছাড়াও ফেস্টিভ্যালে কুড়িগ্রামের কবি সাম্য রাইয়ানকে নিয়ে প্রকাশিত তারারা পত্রিকাটি কুড়িগ্রামের বিভিন্ন পাঠাগারের হাতে তুলে দেন কুড়িগ্রাম পৌরসভার মেয়র কাজিউল ইসলাম, কুড়িগ্রাম ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি অনিরুদ্ধ প্রণয় প্রান্তিক ও হিজিবিজি সম্পাদক রাজ্য জ্যোতি। </p><p>শিশু-কিশোর সংগঠন কুড়িগ্রাম ইশকুলের সদস্য হওয়ার জন্য শিশু-কিশোরদের আহবানও জানানো হয় ফেস্টিভ্যালটিতে।</p><div><br /></div>রিদওয়ান পর্বhttp://www.blogger.com/profile/14189854163753216345noreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-462762004599772458.post-58046235833957975062023-10-15T08:38:00.001+06:002023-10-15T08:38:38.971+06:00তক্কে তক্কে গপ্পো অনুষ্ঠিত<p><br /></p><p><br /></p><p><br /></p><div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEh9fhtnJwo4dwp-g8vvf1YTIaJrYQqiiiqmKDlDAYLi7HDq_aSnIuJjwJzZ4aeIsw3vHXGCpTOa-DfOlagBuWkuMuEVxIoc0HkY7oU0qItQIXTYSrabHvZLserj_NQNlFe7CrSmPq4INtq8wyaiOF4TrNciaWXS8VObfasiFv1K6zrDrQiivqPqypUyzDoG/s775/IMG-20231013-WA0003_1.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img border="0" data-original-height="400" data-original-width="775" height="165" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEh9fhtnJwo4dwp-g8vvf1YTIaJrYQqiiiqmKDlDAYLi7HDq_aSnIuJjwJzZ4aeIsw3vHXGCpTOa-DfOlagBuWkuMuEVxIoc0HkY7oU0qItQIXTYSrabHvZLserj_NQNlFe7CrSmPq4INtq8wyaiOF4TrNciaWXS8VObfasiFv1K6zrDrQiivqPqypUyzDoG/s320/IMG-20231013-WA0003_1.jpg" width="320" /></a></div><br /><p>অনুশীলন থেকে ধারাবাহিক পাঠচক্র "তক্কে তক্কে গপ্পো" আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তক্কে তক্কে গপ্পে বিভিন্ন বিষয়ের উপর ধারাবাহিক ভাবে পাঠচক্র অনুষ্ঠিত হবে।</p><p>তক্কে তক্কে গপ্পের প্রথম আয়োজন "তক্কে তক্কে গপ্পো-১" " তক্কে তক্কে গপ্পো কেনো, কীভাবে " বিষয়ের উপর গত ১২ই অক্টোবর কুড়িগ্রাম সরোবরে অনুষ্ঠিত হয়। "তক্কে তক্কে গপ্পো-১" এ আলোচনা করেন অনুশীলন সম্পাদক রিদওয়ান পর্ব। পরবর্তী পাঠচক্র " তক্কে তক্কে গপ্পো-২" এ আলোচনা করবেন ক্রিয়েটিভ ডিজাইনার জাকির ইমরান উজ্জ্বল। উল্লেখ্য, প্রতিবার অনুশীলনের ফেসবুক পেজ থেকে ঘোষণা দিয়ে তক্কে তক্কে গপ্পের দিনক্ষণ জানিয়ে দেয়া হবে।</p><div><br /></div>রিদওয়ান পর্বhttp://www.blogger.com/profile/14189854163753216345noreply@blogger.com0Kurigram, Bangladesh25.8133074 89.6482884999999929.3977755119929 54.492038499999992 42.228839288007094 124.80453849999999tag:blogger.com,1999:blog-462762004599772458.post-9859023032157075302023-10-10T18:55:00.009+06:002023-10-10T19:19:15.522+06:00কবি মোকলেছুর রহমানের সাক্ষাৎকার<p></p><div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEjIuuD0PplgS1y69Bsqh5hLE6RANIGOd5OmIn8eQn2sPKFupPHi4F5sNRCVQ6Orz5E7kF_57KQeoCeJJ6EeHW8uQu2OIzBvCz31ZVi50jqkbY0t5HsZ9RiCmSST3VvJuAeMnYs0iQFhV1QWV6o3CKEVn-9cHLJH5ANBeNlKC00b0cvn6KQQrPQLbOvk5XAM/s1800/1696937418054.png" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img alt="মিজান খন্দকার সাহিত্য পুরস্কার ২০২৩ পাওয়ায় কবি মোকলেছুর রহমানের সাক্ষাৎকার" border="0" data-original-height="1012" data-original-width="1800" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEjIuuD0PplgS1y69Bsqh5hLE6RANIGOd5OmIn8eQn2sPKFupPHi4F5sNRCVQ6Orz5E7kF_57KQeoCeJJ6EeHW8uQu2OIzBvCz31ZVi50jqkbY0t5HsZ9RiCmSST3VvJuAeMnYs0iQFhV1QWV6o3CKEVn-9cHLJH5ANBeNlKC00b0cvn6KQQrPQLbOvk5XAM/s16000/1696937418054.png" title="মিজান খন্দকার সাহিত্য পুরস্কার ২০২৩ পাওয়ায় কবি মোকলেছুর রহমানের সাক্ষাৎকার" /></a></div><br /><br /><div><span style="font-family: arial;">( আজ, ১০ই অক্টোবর, ২০২৩ মিজান খন্দকার সাহিত্য পুরস্কারে ভূষিত হলেন কবি মোকলেছুর রহমান। তীব্র কুড়িগ্রাম পেজ থেকে আসা ঘোষণায় বলা হয়েছে, " 'সব বৃক্ষ মহোদয় হয় না' কাব্যে জীবনচারণের নিরাভরণ রূপ, শব্দচারিমার সৌকর্য এবং আবেগের শৈল্পিক উপস্থাপনের জন্য মোকলেছুর রহমানকে 'মিজান খন্দকার সাহিত্য পুরস্কারে' ভূষিত করা হলো।" আজ অপরাহ্নে কবি মোকলেছুর রহমান সংক্ষিপ্ত সাক্ষাৎকারে অনুশীলন সম্পাদক রিদওয়ান পর্বের মুখোমুখি হয়েছেন। ) </span><p></p><p> </p><p>অনুশীলন: শুভ দিন, শুভ অপরাহ্ণ। প্রথমেই মিজান খন্দকার সাহিত্য পুরস্কার-২০২৩ পাবার জন্য আপনাকে অভিনন্দন জানাই। </p><p>উত্তর: শুভ অপরাহ্ন। শুরুতে কৃতজ্ঞতা জানাই কর্তৃপক্ষকে। মিজান খন্দকার সাহিত্য পুরস্কার-২০২৩ পাওয়ার আনন্দটা, অনুভূতিটা একেবারেই অন্য রকম।</p><p>অনুশীলন: পুরস্কারের ঘোষণা জেনে কেমন লাগছে তা জানতে পারি কি?</p><p>উত্তর: পাওয়া না পাওয়ার এ পৃথিবীতে, এরকম পুরস্কারের ঘোষণা জেনে মনে হচ্ছে এটা ভালোবাসা ও সাহিত্য কর্মের অমূল্য প্রাপ্তি। যা সাহিত্যের প্রতি দায়িত্ব বহুগুণে বাড়িয়ে দিল।</p><p>অনুশীলন: প্রথম কবিতার বই প্রকাশের পরই এ পুরস্কার পেলেন, এই ব্যাপারটি কীভাবে দেখছেন? </p><p>উত্তর: আমার প্রথম কবিতার বই 'সব বৃক্ষ মহোদয় হয় না’ দুই দশকেরও অধিক সময়ের কাজের নমুনা। আমার কবিতা চর্চা প্রগাঢ় সমাজ-বাস্তবতা, হৃদয় নিঙড়ানো ভালোবাসা ও আবেগের সংমিশ্রণজাত। এ পুরস্কার প্রাপ্তি যেমন আনন্দের, একই সঙ্গে নির্মল সুখেরও বটে।</p><p>অনুশীলন: বই প্রকাশে আপনার ভবিষ্যত পরিকল্পনা জানতে ইচ্ছুক৷ কিছু বলবেন?</p><p>উত্তর: আগামীতে বই প্রকাশে ভবিষ্যত পরিকল্পনাতে বলবো; প্রতিশ্রুতিশীল, মননশীল লেখনী, লিখে যাওয়া ও প্রবন্ধের বই প্রকাশ করা। সাথে কবিতার বইতো আসবেই।</p><p>অনুশীলন: আমার সাথে কথা বলার সময় দেয়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। আমরা ২৫ অক্টোবর পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে আপনার সাথে দেখা হওয়ার আশা করি।</p><p>উত্তর: 'অনুশীলন' সম্পাদককে ধন্যবাদ ও ভালোবাসা। আগামী ২৫ অক্টোবর দেখা হচ্ছে, আনন্দের আয়োজনে।</p><p>অনুশীলন: আপনাকে আবারও ধন্যবাদ এবং আমার পক্ষ থেকে অশেষ অভিনন্দন।</p><p>উত্তর: স্নেহাস্পদ 'অনুশীলন' সম্পাদক অকৃত্রিম ভালোবাসা রইলো। ভালো থাক নিরন্তর।</p></div>রিদওয়ান পর্বhttp://www.blogger.com/profile/14189854163753216345noreply@blogger.com1tag:blogger.com,1999:blog-462762004599772458.post-80992733566063058812023-08-15T22:53:00.045+06:002023-10-10T19:02:24.988+06:00দুটি কবিতা // রিদওয়ান পর্ব<p><b style="font-family: courier;"></b></p><div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><b style="font-family: courier;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEhgl-sx8-a6XRQDMoR903zcQo_tyYIxqNo1_9FP6LieYIaDXuM6aTzRHLIfBY-XL95q2B6RwPkdwdVKhqazuaqCAcc8Yfp6kAmYq4NvcnDybHlVf_Z5zxRSQ8mT1TmCV4_8L2krR0mtbHMzDE6QNrxD_tr7ECRTwIDbvKXu2RlA5w4omGvz2kHFox4lrMlb/s500/1599391663796.png" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img border="0" data-original-height="264" data-original-width="500" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEhgl-sx8-a6XRQDMoR903zcQo_tyYIxqNo1_9FP6LieYIaDXuM6aTzRHLIfBY-XL95q2B6RwPkdwdVKhqazuaqCAcc8Yfp6kAmYq4NvcnDybHlVf_Z5zxRSQ8mT1TmCV4_8L2krR0mtbHMzDE6QNrxD_tr7ECRTwIDbvKXu2RlA5w4omGvz2kHFox4lrMlb/s16000/1599391663796.png" /></a></b></div><b style="font-family: courier;"><br />ট্রাফিক জ্যাম</b><p></p><p><span style="font-family: courier;"><b><br /></b></span></p><p><span style="font-family: inherit;">লিপিবদ্ধ অভিমান গুলো আটকে আছে </span></p><p><span style="font-family: inherit;">দীর্ঘ ট্রাফিক জ্যামে, </span></p><p><span style="font-family: inherit;">কর্দমাক্ত বৃক্কে বারবার ফিরে আসা যায়</span></p><p><span style="font-family: inherit;">দেবীর চন্দ্রিমায় দীর্ঘশ্বাস দীর্ঘায়িত করতে</span></p><p><span style="font-family: inherit;">অভিজ্ঞতার রৌদ্রজ্জ্বল ছায়ায় বেড়ে উঠছি</span></p><p><span style="font-family: inherit;">সুইয়ের বুননে বেপরোয়া ঝড় হয়ে</span></p><p><span style="font-family: inherit;">তোমার উঠোনে বিস্ফোরিত হবো বলে</span></p><p><br /></p><p><br /></p><p><span style="font-family: courier;"><b>জলের গুঞ্জন</b></span></p><p><br /></p><p>তোমাকে ছোঁয়ার ইচ্ছে আমার জলের গুঞ্জনে</p><p>চরণ আমার ভিজতে চায় তোমারই তীরে</p><p>জলের জন্য জলের গভীরে জলছোঁয়ার তৃষনা</p><p>গভীরে যাবার ইচ্ছে আমার প্রাপ্ত প্রায়</p><p>তোমার শব্দ সংকেত বিধানিলো গতিবেগ</p><p>হলাম শান্তিনিকেতনে প্রশান্তি খোজা শিকার শুশুক </p><p><br /></p><p><br /></p><p><br /></p>রিদওয়ান পর্বhttp://www.blogger.com/profile/14189854163753216345noreply@blogger.com1tag:blogger.com,1999:blog-462762004599772458.post-78163056544463388182023-05-02T13:48:00.003+06:002023-05-02T13:48:58.044+06:00খেলাঘর : প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর শুভেচ্ছাঞ্জলি<div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEhQccWR_H55SwI33PyxJOPQks5nC1qrONvLsxGYt29lG2g9mjaQMCWy17zlN3gXqgR9UF2RZJcbplOPjb8ISnW2hxza8KBjeSxl6YWilvJq4TsmZHjnBW_03K-iU8sDU9R5fX3LByakUC09uJx-LlP3Y3Tda_A4gHvV_f0ZLhQuFh2qNbjy5e_H9yJe/s750/images%20(8).jpeg" imageanchor="1" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img border="0" data-original-height="390" data-original-width="750" height="166" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEhQccWR_H55SwI33PyxJOPQks5nC1qrONvLsxGYt29lG2g9mjaQMCWy17zlN3gXqgR9UF2RZJcbplOPjb8ISnW2hxza8KBjeSxl6YWilvJq4TsmZHjnBW_03K-iU8sDU9R5fX3LByakUC09uJx-LlP3Y3Tda_A4gHvV_f0ZLhQuFh2qNbjy5e_H9yJe/s320/images%20(8).jpeg" width="320" /></a></div><div><br /></div><div style="text-align: justify;"><b>লিখেছেন: আবদুল্লাহ আল মোহন</b></div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;">১.</div><div style="text-align: justify;">জাতীয় শিশু-কিশোর সংগঠন কেন্দ্রীয় খেলাঘর আসর। আজ ২ মে খেলাঘরের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। ১৯৫২ থেকে ২০১৯, এক মহাকাব্যিক যাত্রার পদরেখা অংকন করে এগিয়ে চলছে খেলাঘর শিশু সংগঠনটি। আজকের আনন্দদিনে সংশ্লিষ্ট সকলকে জানাই শুভেচ্ছা, আর প্রয়াত-জীবিত প্রতিষ্ঠাতাদের স্মৃতির প্রতিও জানাই শ্রদ্ধাঞ্জলি। মুক্তবুদ্ধির বিকাশের আঙ্গিনায় খেলাঘর সমৃদ্ধ আলোকবর্তিকা, ‘খেলাঘর’ সুন্দর সমাজের স্বপ্ন দেখে। তাই খেলাঘর পৃথিবীর সকল অধিকার বঞ্চিত শিশুর পক্ষে, শান্তির পক্ষে। আজকের যারা শিশু তারাই আগামী দিনের কর্ণধার। বাংলাদেশের শিশু কিশোরদের যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে প্রয়োজন তাদের শরীর ও মনের পরিপূর্ণ বিকাশ সাধন। সেই বিকাশের লক্ষ্যে খেলাঘর সুদীর্ঘ অর্ধশত বছরের ও অধিক সময় ধরে বাংলাদেশের প্রতিটি অঞ্চলে প্রতিনিয়ত শিশু অধিকার বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছে।</div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;">২.</div><div style="text-align: justify;">খেলাঘর আজ শুধু একটি সংগঠন নয়, সমৃদ্ধ এক ইতিহাসের নাম। আমরা গর্ব সহকারে বারংবার বলে থাকি, আমাদের শিশুরাই আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। আর খেলাঘর দেশের শিশু ও কিশোরদের সুপ্ত প্রতিভা বিকাশে কাজ করে যাচ্ছে। বিজ্ঞান মনষ্ক আদর্শ নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলা খেলাঘরের অন্যতম কাজ। শিশু-কিশোরদের মানসিক বিকাশে যে সংগঠনটি একসময় অগ্রগণ্য ভূমিকা পালন করেছিলো, সেই সংগঠনই খেলাঘর । বিগত ৬৭ বছরে খেলাঘর অনেক গুণী মানুষের জন্ম দিয়েছে। খেলাঘর মহান ’৫২-এর ভাষা আন্দোলনের ফসল। বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে রয়েছে এ সংগঠনের বন্ধুদের ত্যাগ। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় নতুন প্রজন্মকে গড়ে তুলতে খেলাঘর আন্দোলনকে শাণিত করতে যে যার অবস্থান থেকে আরেকটু বেশি সক্রিয় হবো সেই প্রত্যাশা করতেই পারি।</div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;">৩.</div><div style="text-align: justify;">পত্রিকার পাতাভিত্তিক সাহিত্যকর্ম দিয়ে শুরু হলেও ক্রমে তা সংগঠনে রূপ নেয়। গঠিত হতে থাকে শাখা সংগঠন। খেলাঘর কার্যক্রম শিশুকিশোর আন্দোলন হিসেবে ছড়িয়ে যায় সারা দেশে। তৎকালীন সংগঠকদের সচেতনতার মাত্রা বোঝা যায় মহান মুক্তিযুদ্ধে নিজস্ব ব্যানারে খেলাঘরের অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে। স্বাধীন বাংলাদেশে এক পর্যায়ে খেলাঘরের শাখা সংগঠনের সংখ্যা দাঁড়ায় চারশ’টির অধিক। এই যে ব্যাপক বিস্তৃতি তা একদিনে হয় নি, হয় নি কোন এক জনের দ্বারাও। সারা দেশের প্রগতিশীল একঝাঁক উজ্জ্বল, উচ্ছ্বল দেশপ্রেমিক তরুণ কর্মীদলের একাগ্র নিষ্ঠা আর কর্মের ফসল আমাদের খেলাঘরের সেই সব উজ্জ্বল সোনালী দিনগুলো। আমরা তাদের প্রত্যেককে শ্রদ্ধা আর ভালোবাসায় স্মরণ করি।</div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;">৪.</div><div style="text-align: justify;">সাংস্কৃতিক আন্দোলন ও শিশু-কিশোরদের সুপ্ত প্রতিভা বিকাশে ঐতিহ্যবাহী সংগঠন খেলাঘর আসর আসর বিশেষ ভূমিকা পালন করছে। অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়তে তরুণ প্রজন্মকে বই পড়াসহ নানান ধরনের সৃজনশীল কর্মকান্ড পরিচালনার মাধ্যমে সুপ্ত প্রতিভা বিকাশে সদা তৎপর। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই শিশুকিশোরদের সঠিকভাবে গড়ে তোলার জন্য খেলাঘর কাজ করে আসছে। অসাম্প্রদায়িক, বিজ্ঞানমনস্ক ও মানবিকবোধসম্পন্ন মানুষ গড়ে তোলা সংগঠনটির মূল লক্ষ্য। খেলাঘর শিশুকিশোরদের সুস্থ দেহ ও মন গঠন, সাহিত্য, সংস্কৃতি, বিজ্ঞান ও তথ্য প্রযুক্তির চর্চা এবং সৃজনশীল কাজের মধ্য দিয়ে প্রতিভার বিকাশ এবং বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি ও শিক্ষার প্রসারে আগ্রহী এবং প্রীতি, ঐক্য ও পারস্পরিক সহযোগিতা, মাতৃভূমি ও মাতৃভাষার প্রতি ভালোবাসার উপর গুরুত্বারোপ করে। এই সংগঠনটি পৃথিবীর সকল শান্তি, স্বাধীনতা ও মুক্তিকামী মানুষের সাথে একাত্মতার উপর ভিত্তি করে সকল কর্মকান্ড বিন্যস্ত করে। </div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;">৫.</div><div style="text-align: justify;">খেলাঘরের জন্ম ১৯৫২ সালের ২ মে। এই দিন দৈনিক সংবাদ-এর সাপ্তাহিক শিশু সাহিত্যপাতা খেলাঘর আত্মপ্রকাশ করে। আমরা জানি, প্রাথমিক পর্যায়ে সংবাদ ব্যাপক জনগোষ্ঠীর দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারে নি সত্য, কিন্তু বাম রাজনীতির কর্মীরা সংবাদকে নিজেদের পত্রিকা হিসেবেই ভাবতেন। সংবাদ পত্রিকাটির অন্যতম আকর্ষণীয় পাতা ছিল ‘খেলাঘর’। এ পাতার প্রথম সম্পাদক ছিলেন কবি ও শিশু সাহিত্যিক হাবীবুর রহমান। খেলাঘরকে ঘিরে একদল তরুণ ও উদীয়মান লিখিয়ে ভিড় জমায়। কবি হাবিবুর রহমান ছিলেন খেলাঘরের ‘ভাইয়া’। দৈনিক সংবাদের বংশাল অফিসে খেলাঘর আসর গড়ে উঠে। একে কেন্দ্র করে ঢাকার বিভিন্ন স্থানে শাখা খেলাঘর আসর গড়ে উঠতে থাকে। পুরনো ঢাকার জেলখানা রোডে দীন মোহাম্মদ নবীর নেতৃত্বে প্রথম শাখা আসর গঠিত হয় ‘আমাদের খেলাঘর’ নামে। ১৯৫৬ সালের ২২ জুলাই দৈনিক সংবাদের অফিসে এক নির্বাচনী সভায় কেন্দ্রীয় খেলাঘর পরিচালনার জন্য একটি কমিটি গঠিত হয়। সাংবাদিক সৈয়দ নূরউদ্দিন ও তরুণ লেখক আল কামাল আব্দুল ওহাব নবগঠিত কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৫৭ সালে দ্বিতীয় কেন্দ্রীয় কমিটি গঠিত হয়। ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহর ছেলে মুহম্মদ সফিউল্লাহ সভাপতি ও আল কামাল আব্দুল ওহাব সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। </div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;">৬.</div><div style="text-align: justify;">১৯৫২-৬০ সময়কালে সাহিত্যচর্চা ছিল খেলাঘরের প্রধান কাজ। ১৯৬৪ সালে বজলুর রহমান খেলাঘরের ভাইয়ার দায়িত্ব গ্রহণ করার পর খেলাঘর সমাজভিত্তিক শিশু সংগঠনের রূপ নেয়। বাঙালি জাতীয়তাবাদ এবং শোষণমুক্ত সমাজ এই সময়ে খেলাঘরের মৌলিক চেতনা হয়ে উঠে। ১৯৭১ সালে খেলাঘর মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে। মুক্ত স্বদেশে খেলাঘর শ্লোগান তৈরি করে ‘এসো গড়ি খেলাঘর, এসো গড়ি বাংলাদেশ’। এই সময়ে খেলাঘরের কান্ডারি ছিলেন সভাপতি বজলুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক জিয়াউদ্দীন আহমদ। ১৯৭৩ সালে খেলাঘরের প্রথম সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এই জাতীয় সম্মেলনে খেলাঘর শিশু অধিকার ও বিজ্ঞান আন্দোলনের সূচনা। ১৯৭৯ সালের জাতীয় সম্মেলন পর সারাদেশে বিপুলসংখ্যক শাখা আসর গড়ে উঠতে থাকে। বিভিন্ন জেলায় জেলাকমিটি গঠিত হয়। এরপর ১৯৮২, ১৯৮৬ ও ১৯৯২ সালে খেলাঘরের জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ১৯৯২ সালের পর খেলাঘরের চেয়ারম্যান ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ড. আলী আসগর ও আবদুল আজিজের নেতৃত্বে খেলাঘর বেশ গতিশীল হয়। ২০০২, ২০০৫ এবং ২০০৯ সালে খেলাঘরের জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ২০০৯-এর সম্মেলনে সংগঠন, শিক্ষা, শিশুর আইনি অধিকার, শিশুর স্বাস্থ্য (শারীরিক ও মানসিক), বিজ্ঞান ও পরিবেশ, সংস্কৃতি ও ক্রীড়া বিষয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ যুগ-পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়। এই যুগ-পরিকল্পনার লক্ষ্য হচ্ছে বাঙালির জাতীয় মুক্তিসংগ্রামের চেতনায় উজ্জীবিত এবং অসাম্প্রদায়িক, বিজ্ঞানমনস্ক ও মানবতাবোধসম্পন্ন প্রজন্ম গড়ে তোলা। </div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;">৭.</div><div style="text-align: justify;">সাহিত্যকর্ম দিয়ে কাজ শুরু হলেও খেলাঘরের কর্মকাণ্ড শুধু সাহিত্য রচনার মধ্যেই সীমিত থাকে নি। শুরুর দিকের সংগঠকরা ভেবেছিলেন, সচেতন সুনাগরিক গড়ে তোলার জন্য সাহিত্য সংস্কৃতির ভেতর দিয়ে শিশুকিশোরদের এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। খুবই ছোট আকারে কাজ শুরু হলেও উদ্যোক্তাদের অন্তর্দৃষ্টি ছিল গভীর আর দূরদৃষ্টি ছিল প্রখরতর। তারা দেখতে পেয়েছিলেন দেশের ভবিষ্যৎকে, স্থির করতে পেরেছিলেন উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ নির্মাণের ভিত্তিভূমি তৈরির কৌশল। বেছে নিয়েছিলেন সর্বকালে সর্বদেশে সবচেয়ে সম্ভাবনাময় বলে স্বীকৃত জনগোষ্ঠী শিশুকিশোরদের। যার ফলে স্বাধীন বাংলাদেশে আমরা বলতে পেরেছিলাম “আজকের খেলাঘর, আগামীদিনের বাংলাদেশ”। বর্তমানে খেলাঘর সারা দেশে প্রায় ৬৫০টি শাখা আসর রয়েছে। জেলা কমিটিগুলি শাখা আসরের পরিচর্যা করে। একটি কেন্দ্রীয় কমিটি সংগঠনের মূল দায়িত্ব পালন করে। ২০০৯ সালের জাতীয় সম্মেলনে প্রফেসর মাহফুজা খানম চেয়ারপার্সন ও ডা. লেলিন চৌধুরী সাধারণ সম্পাদক হিসেবে খেলাঘরের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। </div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;">৮.</div><div style="text-align: justify;">খেলাঘর শিশুর বিকাশ, শিশুর অধিকার প্রতিষ্ঠা ও লিঙ্গ বৈষম্য দূরীকরণসহ সাহিত্য, সংস্কৃতি, বিজ্ঞান ও ক্রীড়ার ক্ষেত্রে কাজ করে যাচ্ছে। স্বাধীনতার পর থেকে বিভিন্ন দেশের শিশু সংগঠনের সাথে খেলাঘর নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করে। যারা এককালে খেলাঘর করতেন তাদেরই একটা বড় অংশ মেধা ও বুদ্ধিবৃত্তির জায়গায় অগ্রগণ্য মানুষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। খেলাঘর মূলত শিশুকিশোরদের জন্য হলেও সংগঠনের পরিচালনায় প্রয়োজন সৎ, নিষ্ঠাবান, দক্ষ, চরিত্রবান এবং সমাজ ও মানুষের প্রতি দায়বদ্ধ একদল কর্মীবাহিনীর। যাদের কাছ থেকে সংগঠনের শিশুকিশোর ভাইবোনেরা উপর্যুক্ত গুণাবলী হাতেকলমে শিখবে। সংগঠকরা যদি দক্ষ ও প্রশিক্ষিত না হয়, তবে কোন সংগঠন উন্নতি লাভ করতে পারে না। উপর্যুক্ত গুণাবলীসম্পন্ন কর্মীদলের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে কেন্দ্রীয় খেলাঘর আসর থেকে শুরু করে একেবারে শাখা আসর পর্যন্ত অর্থাৎ সংগঠনের সর্বস্তরে। আমাদের ভুলে গেলে চলবে না যে, আজকের খেলাঘর অনেক ত্যাগী কর্মী ও সংগঠকের মেধা আর শ্রমের ফসল। একে বাঁচিয়ে রাখা বর্তমান ও ভবিষ্যৎ উভয় প্রজন্মের জন্যই প্রয়োজন। খেলাঘর আন্দোলন দীর্ঘজীবী হোক।</div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;">৯.</div><div style="text-align: justify;">গুণিজনেরা অভিযোগের সুরে বলে থাকেন, আগে পাড়া-মহল্লায় সকাল-বিকেল হারমোনিয়ামের বাজনা শুনতে পেতাম। সংস্কৃতিচর্চা করত শিশু-কিশোরেরা। কিন্তু আজ টেলিভিশনে সিরিয়ালের কারণে তা আর পাওয়া যায় না। বাবা-মায়েরাও সন্তানদের পর্যন্ত সময় দেন না। এই নিস্ফলা সময়ে খেলাঘর আরো বেশি সক্রিয় ভূমিকা পালনে এগিয়ে এলে সুস্থ সংস্কৃতি চর্চাই কেবল বাড়বে না, স্বদেশপ্রেমী সুনাগরিকের সৃষ্টিতেও জোরালো অবদান রাখবে বলে আশাবাদি। এক্ষেত্রে রাষ্ট্র ও সরকারের সংশ্লিষ্টজনদের ইতিবাচক সক্রিয় সদিচ্ছা যেমন প্রয়োজন তেমনি আমাদের পারিবারিক ও প্রাতিষ্ঠানিক সহযোগিতামূলক অংশীদারিত্বও আরো জোরদার করা দরকার। পরীক্ষার ফলাফল কেন্দ্রিক জীবনমুখী এককেন্দ্রিক ভাবনার প্রবল চেতনার জলে প্লাবনভূমিতে ‘মানুষ’ হওয়ার শিশুদের স্বাভাবিক পরিবেশ দারুণভাবে প্রশ্নবিদ্ধ। যেমন প্রশ্নবিদ্ধ পরিবারের, সমাজ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভূমিকাও । এই দুর্যোগকালে আমাদের সুস্থচিন্তা চর্চায়, মানবিক সমাজ গড়তে খেলাঘরের মতোন সংগঠনগুলোর ভূমিকাকে কোনভাবেই অবহেলা করা সঠিক বিবেচনার কাজ হবে না।</div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;">১০.</div><div style="text-align: justify;">সুন্দর সমাজ গড়ার ঐতিহ্যবাহী সংগঠন খেলাঘর-এর নিরন্তর সাফল্য যেমন কামনা করি তেমনি সর্বস্তরের মানুষের শুভবোধের জাগরণে এ জাতীয় শিশু সংগঠনগুলো আরো সজীবতা পাবে, সেই প্রত্যাশাও করি প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠা দিবসে।</div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;">(তথ্যসূত্র : বাংলাপিডিয়া, বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা, ইন্টারনেট)</div>Unknownnoreply@blogger.com3tag:blogger.com,1999:blog-462762004599772458.post-35449279544880013672022-09-11T13:27:00.002+06:002022-09-11T13:27:41.040+06:00রফিকুল আলম<p><br /></p><p></p><div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEje6D8HVa6Nc2DVVw305sTx_B7yJsGn4HqU1wliyCuLkFpFYbkxdBTdTpNZVUT5GzrY23uN4W3kLqBNSCXl3971j8gg9gOHlESH6DqGwRWa7WIHID7stmDikblAJx3EHw8SLGL4KtWNd430sw16FoPt_gRme7TXVdyMRABjgGlq_DUf0wnEGpqxVJ0q/s320/1599391663796.png" imageanchor="1" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img border="0" data-original-height="169" data-original-width="320" height="169" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEje6D8HVa6Nc2DVVw305sTx_B7yJsGn4HqU1wliyCuLkFpFYbkxdBTdTpNZVUT5GzrY23uN4W3kLqBNSCXl3971j8gg9gOHlESH6DqGwRWa7WIHID7stmDikblAJx3EHw8SLGL4KtWNd430sw16FoPt_gRme7TXVdyMRABjgGlq_DUf0wnEGpqxVJ0q/s1600/1599391663796.png" width="320" /></a></div><br />বিদেশের বিশ্ববিদ্যালয়েও ছাত্র রাজনীতি আছে। কিন্তু তাদের ছাত্র রাজনীতি কেমন জানেন? —তাদের ছাত্র ইউনিয়ন আছে। প্রতিনিধি আছে। ছাত্র প্রতিনিধিরা ছাত্রদের অধিকার নিয়ে কাজ করে। আওয়াজ তুলে। ইউনিভার্সিটির শিক্ষা ও গবেষণার মান বাড়ানোর জন্য কাজ করে। ছাত্রদের জীবনযাত্রার মান বৃদ্ধির জন্য কাজ করে। স্টুডেন্টরা যেনো পাশ করেই কর্মজীবনে ঢুকতে পারে সেসব নিয়ে কাজ করে। জব ফেয়ারের আয়োজন করে। ছাত্র প্রতিনিধিরা বছরের পর বছর ছাত্র থাকে না। চার বছরের কোর্স চার বছরেই শেষ করে বিদায় নেয়। নির্বাচনের পদ নিয়ে মারামারি করে না। ওরা কারো চামচামি করে না। নেতার ছবি পূজা করে না। হল দখল করে না। ক্যাম্পাস দখল করে না। সকাল-বিকাল দলাদলি নিয়ে থাকে না। —এই হলো ওদের ছাত্র রাজনীতির সংক্ষিপ্ত রূপ। <p></p><p><br /></p><p>বিদেশের কোন ইউনিভার্সিটিতে ঢুকে নেতার ছবি পাবেন না। দেয়ালে দেয়ালে পোস্টার পাবেন না। মিছিল মিটিং করে রাস্তা বন্ধ করতে দেখবেন না। মারামারি করে ইউনিভার্সিটি বন্ধ করে রাখবে না। ক্যাম্পাসে নেতার পেছনে স্লোগান দিবে না। স্টকহোম ইউনিভার্সিটিতে গিয়ে ছাত্র ইউনিয়নের নির্বাচনে ভোট দিয়েছিলাম—একটা পোস্টার তো দূরের কথা, একটা লিফলেটও দেখি নাই। অনলাইনে ভোট দিয়েছি। পরে সেই ইউনিয়ন ওদের এক মন্ত্রীকে ডেকে এনে একটা মিটিং করেছিলো। আন্ডারগ্রেজুয়েটের স্টুডেন্টরা যেভাবে মন্ত্রীকে প্রশ্ন করেছে—সে দৃশ্য আমি কোনদিনও ভুলবো না। মন্ত্রীর চেহারা লাল হয়ে গেছে। মন্ত্রীর সাথে কোন চেলা-চামচা ছিলো না। মন্ত্রী কোন স্টুডেন্টকে বলে নাই—চুপ করো! —এই হলো ওদের ছাত্র রাজনীতি। নেতারা ভয়ে ওদের ইউনিয়নের সাথে মিটিং করতে চায় না। </p><p><br /></p><p>আমাদের দেশের ইউনিভার্সিটিতে যে রাজনীতি, সেটা হলো মুক্ত চিন্তাকে ধ্বংস করার রাজনীতি। তরুণরা যেনো কথা বলতে না পারে, ভাবতে না পারে, চিন্তা-চেতনায় জাগ্রত হতে না পারে, সেই রাজনীতি। ক্যাম্পাস টহল দাও, যেনো অন্যরা কথা বলতে না পারে। হল দখল করো—হলগুলো যেনো তাদের বাবার সম্পদ! </p><p>—এগুলোকে রাজনীতি বলে, নাকি গুণ্ডামি বলে? </p><p>ক্যাম্পাসে নিজের দলের নেতা-নেত্রীর পূজা করো। পোস্টারে ছেয়ে দাও। নেতার গুণগাণ করো। নিজের দলের নেতারা যদি নিকৃষ্টতম কাজও করে, তাহলে সেটার পক্ষে সাফাই গাও। —এটাকে রাজনীতি বলে, নাকি নোংরামি বলে? বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি হলে—সরকার দলীয় ছাত্র নেতারা কোন কথা বলে না। বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা নেই—সেগুলো নিয়ে কথা বলে না। বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা সেশন জটে ভুগছে—সেগুলো নিয়ে কথা বলে না। —তাহলে কিসের ছাত্র রাজনীতি এটা? </p><p><br /></p><p>ছাত্ররা রাজনীতি করবে কিন্তু চামচামি না। ছাত্ররা লিডারশিপ শিখবে কিন্তু ধ্বংসাত্মক কাজ না। ছাত্ররা সমাজ গড়বে কিন্তু শিক্ষাকে দূরে রেখে না। ছাত্ররা নেতৃত্ব শিখবে কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে না। ছাত্ররা নেতা হবে কিন্তু নেতার সুরে কথা বলে নয়। যে দেশে গুণ্ডামি-পাণ্ডামিকে ছাত্র রাজনীতির নাম দিয়ে যুগের পর যুগ টিকিয়ে রাখা হয়, সে দেশে পঞ্চাশ বছরে কেন, একশো বছরেও কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিশ্ব তালিকায় আসবে না। </p><p><br /></p><p>আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষাঙ্গণে যে দলীয় ছাত্র রাজনীতি, সেগুলো হলো দলের স্বার্থে। দুনিয়ার কোন দেশ তার তরুণদের দিয়ে শিক্ষাঙ্গণে এমন বিধ্বংসী সংস্কৃতি গড়ে তোলেনি। ছাত্র রাজনীতির নামে শিক্ষাকে ধ্বংস করেনি। এমন কি আফ্রিকার ক্ষুধাপীড়িত কোন দেশও না।</p>Unknownnoreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-462762004599772458.post-88480040423302435282022-09-05T19:57:00.005+06:002022-09-05T20:07:32.963+06:00কমরেড মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম-এর একটি দুর্লভ সাক্ষাৎকার।<p></p><p></p><div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEg0Yj0LsUtZ6M7W7MDw-2ygFPaEoB56ecJmzXoJ_TDwN9LvMssDXfE5-mkViYA0viYk2SqWEwwc462Xvp5g7GnS0rJtKtkUXEtIQE2Dm-WMuSOqfQCoau0bpkGBugO4mVk3Wae0aJb3Q3Fx7GC4EWJzqV5-rj2HeDDVXPMlmaaXNQlMXw__HnTuK1wu/s720/%E0%A6%AE%E0%A7%81%E0%A6%9C%E0%A6%BE%E0%A6%B9%E0%A6%BF%E0%A6%A6%E0%A7%81%E0%A6%B2-%E0%A6%87%E0%A6%B8%E0%A6%B2%E0%A6%BE%E0%A6%AE-%E0%A6%B8%E0%A7%87%E0%A6%B2%E0%A6%BF%E0%A6%AE.jpg" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img border="0" data-original-height="435" data-original-width="720" height="193" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEg0Yj0LsUtZ6M7W7MDw-2ygFPaEoB56ecJmzXoJ_TDwN9LvMssDXfE5-mkViYA0viYk2SqWEwwc462Xvp5g7GnS0rJtKtkUXEtIQE2Dm-WMuSOqfQCoau0bpkGBugO4mVk3Wae0aJb3Q3Fx7GC4EWJzqV5-rj2HeDDVXPMlmaaXNQlMXw__HnTuK1wu/s320/%E0%A6%AE%E0%A7%81%E0%A6%9C%E0%A6%BE%E0%A6%B9%E0%A6%BF%E0%A6%A6%E0%A7%81%E0%A6%B2-%E0%A6%87%E0%A6%B8%E0%A6%B2%E0%A6%BE%E0%A6%AE-%E0%A6%B8%E0%A7%87%E0%A6%B2%E0%A6%BF%E0%A6%AE.jpg" width="320" /></a></div><p></p><div style="text-align: justify;"></div><blockquote><div style="text-align: justify;"><span style="color: red;">মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম। তুখোড় রাজনীতিক, মুক্তিযোদ্ধা ও স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম ডাকসু ভিপি। বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) বর্তমান সভাপতিও তিনি। তাঁর সংগ্রামমুখর জীবনের গল্প শুনেছেন রুদ্র আরিফ। ছবি তুলেছেন কাকলী প্রধান</span></div><div style="text-align: justify;"><span style="color: red;">দৈনিক কালের কন্ঠ, ২৯ মার্চ, ২০১৯</span></div></blockquote><div style="text-align: justify;"></div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;"><b>ছোটবেলায়ই নিজের নাম থেকে ‘খান’ শব্দটি বাদ দিয়েছিলেন...</b></div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;">আমি জন্মেছি ১৯৪৮ সালের ১৬ এপ্রিল ভোরবেলা, সাভারের গেন্ডা গ্রামে। আমার নাম ছিল মুজাহিদুল ইসলাম খান। ডাকনাম সেলিম। ষাটের দশকে পাকিস্তানের সামরিক স্বৈরশাসক ছিলেন আইয়ুব খান। তখন থেকেই নিজের নাম থেকে ‘খান’ শব্দটি বাদ দিয়ে সেখানে ডাকনাম সংযুক্ত করেছি। আমার বাবা মোসলেহ উদ্দিন খান ছিলেন সরকারি চাকরিজীবী। মা উম্মেহানি খানম ছিলেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের নেত্রী। তাঁদের আট সন্তানের মধ্যে আমিই একমাত্র পুত্র ও তৃতীয় সন্তান। আমার যখন এক বছর বয়স, তখন বাবার চাকরিসূত্রে আমরা ঢাকায় চলে আসি। আমার প্রাথমিক শিক্ষার হাতেখড়ি সিদ্ধেশ্বরী স্কুলে। এরপর নয়াপল্টনে আমাদের নতুন বাসার কাছাকাছি ঢাকা কলেজিয়েট ব্রাঞ্চ স্কুলে ভর্তি হই। বর্তমানে বিলুপ্ত সেই স্কুলে কিছুদিন পড়ার পর ১৯৫৭ সালে ভর্তি হই সেন্ট গ্রেগরি স্কুলে। প্রায় প্রতিটি ক্লাসেই আমি প্রথম হতাম। ১৯৬৫ সালে ইংরেজি মাধ্যমে এসএসসি পাস করি। ফল প্রকাশের পর দেখলাম, সম্মিলিত মেধাতালিকায় অষ্টম হয়েছি।</div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;"><b>সে সময়ে ‘আসিয়া’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছিলেন...</b></div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;">আমার জীবনের একটা পর্ব একটু ভিন্ন ধরনের ছিল। রেডিওতে তখন কবি ফররুখ আহমদের পরিচালনায় শিশুদের জন্য একটি অনুষ্ঠান হতো ‘খেলাঘর’। সেখানে এক দিন আমাকে বলা হলো, “তোমাকে কবি ইকবালের লেখা ‘বাচ্চো কি দোয়া’র বাংলা অনুবাদ আবৃত্তি করতে হবে।” করলাম। আমাকে পাঁচ টাকা সম্মানী দেওয়া হলো। সেই টাকা দিয়ে নানাকে একটা টুপি আর একটা ‘রাইটার’ কলম কিনে দিয়েছিলাম। ওই যে রেডিওতে আমার আনুষ্ঠানিক অংশগ্রহণ শুরু হলো, এর পর শুধু আবৃত্তিই নয়, বরং প্রধানত বিভিন্ন নাটকে শিশু চরিত্রের অভিনয়ে নিয়মিত অংশ নিয়েছি। এভাবে আমি দ্রুতই তখনকার সেরা সব অভিনেতা-অভিনেত্রীর সংস্পর্শে চলে আসি। ওই সময় ফতেহ লোহানী মাঝেমধ্যে রেডিওতে আসতেন। লোকগল্প থেকে ‘আসিয়া’ নামের একটি কাহিনি অবলম্বনে সেই নামেই সিনেমা বানানোর সিদ্ধান্ত নিলেন তিনি। নায়কের ছোটবেলার চরিত্রে আমাকে অভিনয় করতে বললেন। আমি তখন ক্লাস ফাইভ-সিক্সে পড়ি। ‘আসিয়া’র নায়িকা ছিলেন সুমিতা দেবী, নায়ক ছিলেন শহীদ। তিনি প্রবাসী। আমার জানা মতে, এর পর তিনি আর কোনো সিনেমায় অভিনয় করেননি। যেদিন শুটিং শুরু হলো, আমার তখন ১০১-১০২ ডিগ্রি জ্বর। জ্বর নিয়েই শুটিংয়ে গেলাম। একটা দৃশ্য ছিল, মেলায় মুখোশ পরা মানুষের অংশগ্রহণে পুতুলনাচ। সেই নাট্যদলের ভেতর একজন ছিলেন কামাল লোহানী। ‘আসিয়া’র সংলাপ রচনায় ফতেহ লোহানীকে কেন্দ্র করে সে সময়কার সব তরুণ শিল্পী-সাহিত্যিক হাত লাগিয়েছিলেন। অর্থ সংকটের কারণে একে একে দুই বছর পার হয়ে গেল, তবু সিনেমাটির কাজ শেষ হচ্ছিল না। ফলে প্রথম দৃশ্যে আমি যতটুকু লম্বা, দেখা গেল শেষ দৃশ্যে তার চেয়ে একটু বেশি লম্বা হয়ে গিয়েছি। আসলে বাংলাদেশে বাংলা সিনেমার মধ্যে প্রথম শুটিং শুরু হয়েছিল ‘আসিয়া’র; কিন্তু প্রথম প্রদর্শিত হয়েছিল ‘মুখ ও মুখোশ’। কারণ ওদের টাকা ছিল বলে তাড়াতাড়ি শেষ করতে পেরেছিল। ‘আসিয়া’ই আমার অভিনীত প্রথম ও শেষ সিনেমা। যদিও মঞ্চনাটক ও রেডিওর নাটকে স্কুলজীবনের পুরোটা সময়ই জড়িত ছিলাম, তবে স্কুলের শেষ জীবনটা আমার জন্য ‘অভিনেতা’র পর্ব থেকে ‘ভালো ছাত্রে’র পর্বের সূচনালগ্ন। ভালো ছাত্রের পর্ব থেকে শুরু হলো ‘রাজনীতি’ পর্ব। অনেকে খোঁচা দিয়ে বলেন, ‘ছিলে অভিনেতা, হয়ে গেলে জননেতা!’</div><br /><div style="text-align: justify;"><b>রাজনৈতিক চেতনা জাগ্রত হলো কখন?</b></div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;">ষাটের দশকে নামকরা স্কুলগুলোতে স্কাউট আন্দোলন জোরদার হয়েছিল। আমাদের স্কুলের তখনকার বিখ্যাত ‘ফিফথ ট্রুপে’র ট্রুপ লিডার ছিলাম আমি। স্কাউট আন্দোলন করতে গিয়েই সিগন্যালিং, সেতু নির্মাণ, রান্নাবান্না, সাঁতার ইত্যাদি বিষয়ে পারদর্শী হয়ে উঠি। প্রতি মাসেই দু-একবার সাপ্তাহিক ছুটির দিনে ট্রুপের সদস্যদের নিয়ে ঢাকার আশপাশের কোনো না কোনো গ্রামে তাঁবু ফেলে ক্যাম্পিং করতাম। অন্যদিকে জুনিয়র রেড ক্রস কর্মী হিসেবে বিভিন্ন সমাজসেবামূলক কাজে অংশ নিতাম। ১৯৬২ সালে রেড ক্রসের শতবর্ষ উপলক্ষে যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছিলাম। তখন আমার ১৪ বছর বয়স। তত্কালীন পূর্ব পাকিস্তান থেকে আমিসহ মাত্র দুজন ছাত্র এই ভ্রমণের জন্য মনোনীত হয়েছিল। স্কুলজীবনেই আমার ভেতর দেশপ্রেমের চেতনার স্ফুরণ ঘটে। এ কারণে যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণকালে প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডির সঙ্গে হোয়াইট হাউসের রোজ গার্ডেনে দেখা করার সময় আমার পরনে ছিল বাঙালির ঐতিহ্যবাহী পোশাক—স্বদেশি পায়জামা-পাঞ্জাবি। আমেরিকা থেকে ফিরে লন্ডন ও জেনেভায় গিয়েছিলাম। অন্যদিকে শারীরিক পরিশ্রম সব সময়ই আমার ভালো লাগে। ছোটবেলা থেকেই শ্রম ও শ্রমজীবীদের প্রতি সম্মান ও মমত্ব অনুভব করি। বাজারে বা স্কুলে যাওয়া-আসার পথে অনেক সময় মুচির জুতা সেলাই করার কৌশল, ঝালাইকারের দক্ষতা, কাঠমিস্ত্রির নকশা আঁকা ইত্যাদি কাজ তাঁদের পাশে বসে মন দিয়ে দেখতাম। স্কুলজীবনে অঙ্কে প্রায় সব সময়ই ১০০-তে ১০০ পেতাম। ‘সায়েন্স ফেয়ারে’ অংশ নিয়ে একাধিকবার পুরস্কার জিতেছি। স্কুলের অ্যাসাইনমেন্ট হিসেবে একবার ‘জীবনের লক্ষ্য’ রচনায় লিখেছিলাম, ‘বৈজ্ঞানিক হয়ে এমন একটি যন্ত্র আবিষ্কার করতে চাই, যা দিয়ে একজন মানুষ ১০০ জনের সমান কাজ করতে পারবে।’ লেখা শেষ হতেই খেয়াল হলো, তাহলে তো অবশিষ্ট ৯৯ জনই বেকার হয়ে যাবে! তখন অনুভব করলাম, দেশের ও মানুষের জন্য ভালো কিছু করতে হলে শুধু বিজ্ঞানচর্চা করলেই চলবে না, একই সঙ্গে সমাজ ও অর্থনীতি নিয়েও ভাবতে হবে। এরই মধ্যে স্কুলজীবনের নানা ঘটনা ও আমেরিকা সফরের অভিজ্ঞতা মিলিয়ে একটা সাম্রাজ্যবাদবিরোধী চেতনা আমার মনে উঁকি দিতে থাকে।</div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;"><b>কোন জিনিসটি আপনাকে পথ দেখিয়েছে?</b></div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;">এসএসসির পরপরই নটর ডেম কলেজের লাইব্রেরি থেকে মার্ক্স-এঙ্গেলসের একটি রচনাসমগ্র এনে পড়তে দিয়েছিলেন মনজুরুল আহসান খান। সম্পর্কে তিনি আমার খালাতো ভাই। সেই রচনাবলিতে থাকা ‘কমিউনিস্ট ইশতেহার’ পড়ে মার্ক্সীয় মতবাদের প্রতি তীব্র আকর্ষণ অনুভব করলাম। এত দিন নিজের ভেতর যে প্রশ্নগুলো জমে ছিল, যে স্বপ্ন নিজে নিজে দেখতাম, সেগুলোর একটা উত্তর ও ব্যাখ্যা খুঁজে পেলাম। এরপরই সুর্দিষ্টভাবে সমাজতন্ত্র, সাম্যবাদ ও মার্ক্সবাদের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠি। যোগ দিই ছাত্র ইউনিয়নে। ছাত্ররাজনীতির সুবিধার্থেই নটর ডেম কলেজের বদলে ঢাকা কলেজে ভর্তি হই এবং বাসা ছেড়ে উঠি কলেজ হোস্টেলের ৩০৩ নম্বর রুমে। ১৯৬৫ সালেই কমিউনিস্ট পার্টির গ্রুপে সংগঠিত হয়ে পরিকল্পিতভাবে মার্ক্সবাদের পাঠ নেওয়া শুরু করি। উনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থানের পর গোপন কমিউনিস্ট পার্টির পূর্ণ সদস্যপদ পেয়েছি।</div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;">এ সময়ে ঢাকা কলেজের পাশাপাশি ঢাকার বিভিন্ন স্কুলে ছাত্র ইউনিয়ন গড়ে তোলার কাজ করেছি। বেশ কয়েক বছর ঢাকা মহানগর ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব ছিল আমার কাঁধে। ১৯৬৬ সালে ছাত্র ইউনিয়নের দশম জাতীয় সম্মেলনে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নির্বাচিত হই। এর ধারাবাহিকতায় ১৯৬৯ সালে সহসাধারণ সম্পাদক, পরের বছর সাধারণ সম্পাদক হয়েছি।</div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;"><b>কলেজে পড়ার সময়ই প্রথম কারাভোগ করেন?</b></div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;">১৯৬৬ সালের ছাত্র আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়ায় কলেজ থেকে আমাকে বহিষ্কার করা হয়। পরে জগন্নাথ কলেজ থেকে এইচএসসির দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষা দিয়ে পাস করেছিলাম। ১৯৬৬ সালের ৭ জুন ছয় দফা দাবিতে আওয়ামী লীগের ডাকা পূর্ণ দিবস হরতালে কমিউনিস্ট পার্টিও সমর্থন দিয়েছিল। পার্টির নির্দেশ ছিল, ‘জনতার সঙ্গে থাকো’। সেই হরতালে পিকেটিং করতে গিয়ে স্টেডিয়ামের সামনের রাজপথ থেকে গ্রেপ্তার হই। এক মাসের কারাদণ্ড দিয়ে আমাকে জেলে পাঠানো হয়। এর পর আন্দোলন-সংগ্রামের জন্য একাধিকবার কারাভোগ করতে হয়েছে আমাকে।</div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;"><b>বিশ্ববিদ্যালয়জীবন কেমন ছিল?</b></div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;">১৯৬৭ সালে ইন্টারমিডিয়েট পাস করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগে ভর্তি হই। মুহসীন হলের ৬৬০ নম্বর রুমে থাকতাম। আমার সাবসিডিয়ারি সাবজেক্ট ছিল পরিসংখ্যান ও সমাজবিজ্ঞান। লেকচার শোনার আগ্রহ থেকে অন্য বিভাগের ক্লাসেও হাজির হতাম, বিশেষ করে দর্শন বিভাগের ড. গোবিন্দ চন্দ্র দেব (জে. সি. দেব) ও রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রফেসর মোজাফ্ফর আহমদ চৌধুরী স্যারের ক্লাস মিস দিতে চাইতাম না। টিএসসিতে ‘টেলেন্ট শো’ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রতিবছর ডিপার্টমেন্টে প্রথম হওয়া ছাত্রদের পুরস্কৃত করা হতো। সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় সব শিক্ষকই উপস্থিত থাকতেন। ১৯৬৮ সালের বার্ষিক পরীক্ষায় আমাদের বিভাগে আমি প্রথম হয়েছিলাম। সেই অনুষ্ঠানে একজন শিক্ষক আমার সম্পর্কে বলেছিলেন, ‘এখন আমরা আপনাদের পরিচয় করিয়ে দেব এমন একজনের সঙ্গে যে এবার কলাভবনের সেরা বিভাগের সেরা ছাত্র, যে সারা দিন ক্লাস, নোট, লাইব্রেরি ওয়ার্ক নিয়ে লোকচক্ষুর অন্তরালে থাকে, তাকে হয়তো আপনারা চিনবেন না।’ কিন্তু আমি মঞ্চে ওঠার সঙ্গে সঙ্গেই সবাই অট্টহাসিতে ফেটে পড়ল। কারণ লোকচক্ষুর আড়ালে থাকব কি, আমাকে তো সবাই ক্যাম্পাস দাপিয়ে বেড়ানো ছাত্রনেতা বলে চেনেই! এই ঘটনা আমার বিশ্ববিদ্যালয়জীবনের এক সুখস্মৃতি হয়ে আছে।</div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;"><b>সে সময়ের কিছু কর্মকাণ্ড সম্পর্কে জানতে চাই।</b></div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;">১৯৭০ সালের নির্বাচনের আগে দেশে ব্যাপক জলোচ্ছ্বাস হয়। আমি তখন স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে একটানা দেড় মাস নোয়াখালীর চরবাটায় থেকে সেখানকার বন্যার্তদের জন্য ত্রাণ ও পুনর্বাসনের কাজ করেছি। এ সময় পুনর্বাসনের দাবিতে চরবাটা থেকে মাইজদী কোর্ট পর্যন্ত হাজারো মানুষের মিছিল নিয়ে ডিসির অফিস ঘেরাও করেছিলাম। অন্যদিকে মহাসংগ্রামের ধারাবাহিকতায় একাত্তরের মার্চেই শুরু হয়েছিল আমাদের সশস্ত্র সংগ্রামের প্রত্যক্ষ প্রস্তুতি। ছাত্র ইউনিয়নের কর্মীরা তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের খেলার মাঠে অস্ত্র চালনার প্রশিক্ষণ নিয়েছিল। মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহে রাইফেল কাঁধে আমাদের এক বিশাল ব্রিগেড বাহিনী খেলার মাঠ থেকে বের হয়ে শহরের প্রধান সড়কগুলোতে সুসজ্জিত প্যারেড সংগঠিত করেছিল। এসব কর্মকাণ্ডের নেতৃত্ব দেওয়ার সৌভাগ্য হয়েছিল আমার।</div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;"><b>মুক্তিযুদ্ধের দিনগুলো কেমন ছিল?</b></div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;">পঁচিশে মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আমাদের প্রতিরোধ প্রচেষ্টা ব্যর্থ হলে ক্যাম্পাস ধ্বংসস্তূপ ও বধ্যভূমিতে পরিণত হয়। একসময় আমি ভারতে গিয়ে ন্যাপ-কমিউনিস্ট পার্টি-ছাত্র ইউনিয়ন যৌথ গেরিলা বাহিনীর যোদ্ধা হিসেবে বিশেষ গেরিলা ট্রেনিং নিই। প্রথম ব্যাচে ট্রেনিং নিয়ে পূর্বাঞ্চলীয় সেক্টরে অপারেশন কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রচুর শিক্ষার্থীকে তখন সহযোদ্ধা হিসেবে পেয়েছি। ১৩ ডিসেম্বর ২০০ জনের একটি বড় গেরিলা দলকে কমান্ড করে, অনেকটা ‘ফোর্সড মার্চে’র কায়দায় ঢাকার উপকণ্ঠের শ্রীনগর, দোহার ও কেরানীগঞ্জ থানার সংযোগস্থলের প্রখ্যাত চুরাইন গ্রামে এসে হাজির হই। তার পর নেতাদের সঙ্গে বসে আমরা ঢাকায় ঢোকার চূড়ান্ত পরিকল্পনা করি। সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, মাহবুব জামানের নেতৃত্বে একটি ছোট গ্রুপ মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া হয়ে ঢুকবে। আর মূল বাহিনী ঢুকবে আমার নেতৃত্বে, কেরানীগঞ্জ হয়ে। সেই লক্ষ্যে ১৬ ডিসেম্বর ভোরবেলা আমরা যাত্রা প্রক্রিয়া শুরু করি। মার্চরত অবস্থায়ই বিকেলবেলা খবর পাই, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী আত্মসমর্পণ করেছে। পরদিন সকালে পুরো বাহিনী নিয়ে বুড়িগঙ্গা পার হয়ে, হেঁটে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আসি। সেখানে আমি সহযোদ্ধাদের শপথ করাই। শহীদ মিনারে রাইফেল উঁচিয়ে গেরিলা বাহিনীর শপথ নেওয়ার যে আলোকচিত্রটি খুবই সুপরিচিত, সেটি আমাদেরই। এ দিনই বিশ্ববিদ্যালয়ের এনেক্স ভবনে আমি গেরিলা ক্যাম্প স্থাপন করি। বিশ্ববিদ্যালয়ের যে প্রাঙ্গণ থেকে ৯ মাস আগে ‘মুক্তি না হয় মৃত্যু’ শপথ নিয়ে আমরা যাত্রা শুরু করেছিলাম, এভাবে সেখানেই অস্ত্র হাতে বিজয়ীর বেশে ফিরে সবাই একত্র হলাম।</div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;"><b>দেশ গড়ার কাজে কিভাবে অংশ নিয়েছিলেন?</b></div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;">‘লাখো শহীদের রক্তে মুক্ত স্বদেশ, এসো এবার দেশ গড়ি’—এই স্লোগানে গোটা ছাত্রসমাজকে উদ্বুব্ধ করার চেষ্টা করেছি। ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে স্বাধীন দেশের জন্য শিক্ষানীতির প্রস্তাবিত খসড়া রচনার কাজটি হাতে নিলাম। এক মাসের মাথায় আমার নেতৃত্বে ছাত্র ইউনিয়ন দেশবাসীর সামনে ‘শিক্ষানীতি কমিটি’র প্রস্তাবনা তুলে ধরল। স্টেডিয়ামে আমাদের সব গেরিলা যোদ্ধার অস্ত্র জমাদানের অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুর হাতে অস্ত্র জমা দিলাম। তিন-চার মাসের মধ্যেই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ছাত্র ইউনিয়নের তিন দিনব্যাপী ত্রয়োদশ জাতীয় সম্মেলনের আয়োজন করলাম। এত বড় ও জাঁকজমকপূর্ণ সম্মেলন ঢাকায় এর আগে কখনো হয়নি। সম্মেলন চত্বরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী, অধ্যাপক মোজাফ্ফর আহমেদ ও কমরেড মণি সিংহের বিশাল প্রতিকৃতি আমরা স্থাপন করেছিলাম। দেশ-বিদেশের অনেক নামি অতিথি সেখানে হাজির হয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু ছিলেন প্রধান অতিথি। সেই সম্মেলনেই আমাকে ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি নির্বাচন করা হয়। এর পরপরই অনুষ্ঠিত হয় ডাকসুর নির্বাচন। সেখানে দুই ছাত্রলীগের প্রার্থীদের সম্মিলিত ভোটের চেয়েও অনেক বেশি ভোট পেয়ে, বিপুল ব্যবধানে স্বাধীন দেশের প্রথম ডাকসু ভিপি নির্বাচিত হয়েছি।</div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;"><b>ভিপি হিসেবে আপনার কর্মকাণ্ড কী ছিল?</b></div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;">বিশ্ববিদ্যালয়ের মল এলাকার সৌন্দর্যকরণ, ডাকসু ভবন নির্মাণের পরিকল্পনা প্রণয়ন, ‘অপরাজেয় বাংলা’ ভাস্কর্যটি নির্মাণ, শহীদ মিনার পুনর্নির্মাণ, একুশের প্রভাতফেরির জন্য শহীদ মিনারের সাজসজ্জা ও অলংকরণ প্রভৃতি কাজ করেছি। এ ছাড়া আবাসিক সমস্যা সমাধানের জন্য স্বেচ্ছাশ্রমের সহায়তায় টিনশেড নির্মাণ করে এফ রহমান হল সচলের ব্যবস্থা করেছি। চালু করা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় সিনেট। সেই সিনেটে প্রথম ছাত্র প্রতিনিধি হিসেবে যোগ দিই আমিসহ পাঁচজন। ‘ডাকসু বার্তা’ পত্রিকা প্রকাশ করেছি। প্রতিষ্ঠা পেয়েছে ‘নাট্যচক্র’। সংগঠিত হয়েছে বড় বড় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, নাট্য উত্সব, সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা। প্রবর্তন করা হয়েছে ‘শিক্ষাবর্ষ সূচনা দিনের’ অনুষ্ঠানমালা। প্রতিবছর সেই দিনটিতে প্রতি বিভাগের শিক্ষক-ছাত্রদের একত্র হওয়া, ছাত্ররা সালাম করে ও ফুল দিয়ে শিক্ষকদের প্রতি শ্রদ্ধা ও ভক্তি প্রদর্শন এবং সামান্য বক্তৃতা শেষে সবাই মিলে শহীদ মিনারে গিয়ে পুষ্পমাল্য অর্পণ—এটাই ছিল অনুষ্ঠানসূচি। বিভাগীয় নোটিশ বোর্ডে সেরা ছাত্রদের ছবি ও নাম টাঙানোর ব্যবস্থাও চালু করা হয়েছিল। অটো প্রমোশন, নকলপ্রবণতা, পরীক্ষা পেছানোর অন্যায় আবদার—এসবের বিরুদ্ধেও শক্ত অবস্থান নিত ডাকসু। সে জন্য একবার নকলবাজ ছাত্ররা ডাকসু অফিস হামলাও করেছিল!</div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;">১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষে ডাকসুর উদ্যোগে প্রতিদিন হাজার হাজার হাতে রুটি তৈরি করে হেলিকপ্টারের সাহায্যে দুর্গম এলাকায় পাঠানো, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও মুহসীন হল মাঠে ট্রাক্টর দিয়ে চাষ করে বীজতলা স্থাপন ও বিনা মূল্যে ধানের চাড়া বিতরণ—এসব পদক্ষেপও আমরা নিয়েছিলাম। নিরক্ষরতা দূরীকরণ, ভুয়া রেশন কার্ড উদ্ধার, অধিক খাদ্য ফলাওসহ বিভিন্ন অভিযান পরিচালনার জন্য গ্রীষ্মের ছুটিতে চার-পাঁচ সপ্তাহের জন্য ১০-১২ জনের শত শত ব্রিগেড দেশব্যাপী পাঠিয়েছিলাম। সে বছরেরই ১ জানুয়ারি ‘ভিয়েতনাম সংহতি মিছিলে’র নেতৃত্ব দিয়েছি। সেই মিছিলে পুলিশের গুলিতে দুই ছাত্র মতিউল ও কাদের শহীদ হন; আমিসহ অনেক ছাত্র-ছাত্রীই আহত হয়েছিলাম। স্বাধীন দেশে প্রথম ছাত্র হত্যার সেই ঘটনার প্রতিবাদে আমার নেতৃত্বে এক অভূতপূর্ব আন্দোলন গড়ে ওঠে। বঙ্গবন্ধুর আজীবন ডাকসু সদস্যপদ প্রত্যাহার, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর অপসারণ, বিচার বিভাগীয় তদন্তের ব্যবস্থা, ইউএসআইএস অফিস স্থানান্তর, ভিয়েতনামের অস্থায়ী বিপ্লবী সরকারে স্বীকৃতিসহ আমাদের প্রায় সব দাবি সরকার মেনে নিতে বাধ্য হয়। এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্ট আমাকে সে দেশ সফরের আমন্ত্রণ জানিয়ে চিঠি পাঠালে, সদ্য সমাপ্ত রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের শত্রু দেশটির সেই আমন্ত্রণপত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলার সভায় আমি টুকরো টুকরো করে ছিঁড়ে ফেলেছিলাম। ১৯৭৩ সালে প্রথম শ্রেণিতে পাস করে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাজীবন শেষ হলেও, ভালো চাকরি কিংবা অধ্যাপনার সুযোগ না নিয়ে পেশাদার বিপ্লবী ও সার্বক্ষণিক পার্টিকর্মীর জীবন বেছে নিয়েছি। এর মধ্যে ডাকসুর ভিপি হিসেবে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত ছাত্র আন্দোলনেও জড়িত ছিলাম।</div><br /><div style="text-align: justify;"><b>বঙ্গবন্ধুকে হত্যার প্রতিবাদ করেছিলেন...</b></div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;">১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করা হলে, এর প্রতিবাদে আমার নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এবং ৪ নভেম্বর ঢাকার রাজপথে প্রথম প্রতিবাদ মিছিল হয়। জেলখানায় চার নেতা হত্যার প্রতিবাদে ৫ নভেম্বর হরতাল আহ্বান করি এবং আন্দোলন এগিয়ে নিই। এ কারণে ১৯৭৮ সালের শেষ পর্যন্ত, একটানা দুই বছর বিনা বিচারে নিরাপত্তা বন্দি হিসেবে আমাকে কারাভোগ করতে হয়। সে সময় প্রায় দুই মাস আমাকে সেনা নিয়ন্ত্রিত বন্দিশিবিরে নির্মম নির্যাতন সইতে হয়েছে। এর পর ১৯৮০ সালে পার্টির তৃতীয় কংগ্রেসে আমি কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নির্বাচিত হই। এর দুই বছরের মধ্যে পার্টির সর্বোচ্চ নেতৃত্ব সংস্থা সম্পাদকমণ্ডলীতে (বর্তমানে প্রেসিডিয়াম) সদস্যের দায়িত্ব লাভ করি। তৃতীয় কংগ্রেসের পর পার্টি আমাকে ক্ষেতমজুরদের নিয়ে কাজ করার দায়িত্ব দেয়। কিন্তু কাজ শুরুর আগেই আমাকে আবারও কারারুদ্ধ করা হয়েছিল। কারাগার থেকে বেরিয়ে সারা দেশের বিভিন্ন গ্রামাঞ্চলে ঘুরে ক্ষেতমজুর আন্দোলনের নীতি, কৌশল, দাবিদাওয়া ইত্যাদি নির্ধারণ করেছি। আমার উপস্থাপিত থিসিসের ওপর ভিত্তি করে ১৯৮১ সালের ১৮ মার্চ এক সম্মেলনের মাধ্যমে আমারই নেতৃত্বে ‘ক্ষেতমজুর সমিতি’ গঠন করা হয়। এক দশকের বেশি সময় এই সংগঠনের প্রথমে সাধারণ সম্পাদক ও পরে সভাপতির দায়িত্ব আমি পালন করেছি।</div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;"><b>জাতীয় রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণ কখন থেকে?</b></div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;">১৯৮২ সালের পর থেকেই জাতীয় রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে আমার প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণ বাড়তে থাকে। ১৯৯০ সালে রচিত ঐতিহাসিক ‘তিন জোটের রূপরেখা’র প্রথম খসড়াটি আমিই তৈরি করেছি। এরশাদের শাসনামলে আমাকে একাধিকবার স্বল্প সময়ের জন্য কারাবরণ এবং বহুবার গ্রেপ্তার এড়িয়ে পলাতক থেকে আন্দোলনের কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে হয়েছে। নব্বইয়ের দশকের শুরুতে পার্টির নেতৃত্বের একটি প্রধান অংশ বিলোপবাদী চিন্তায় আক্রান্ত হয়ে কমিউনিস্ট পার্টিকে রূপান্তরের উদ্যোগ নিয়েছিল। সেই কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পার্টির অস্তিত্ব রক্ষার আন্তঃপার্টি সংগ্রামে আমি নেতৃত্ব দিয়েছি। ১৯৯৩ সালের জুন মাসে বিশেষ সম্মেলন করে বিলোপবাদী নেতৃত্ব অপসারণ এবং পার্টিকে পুনর্গঠন করা হয়। সেই সম্মেলনেই আমাকে পার্টির সাধারণ সম্পাদক নির্বাচন করা হয়। ১৯ বছর সেই দায়িত্ব পালনের পর ২০১২ সালে আমি পার্টির সভাপতি নির্বাচিত হয়েছি।</div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;"><b>দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের দিকে তাকিয়ে নিজের সম্পর্কে মূল্যায়ন?</b></div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;">রাজনীতির রুগ্ণতা দূর করে সুস্থ ধারা ফিরিয়ে আনার জন্য এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশকে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করার জন্য আমি এখনো নীতিনিষ্ঠ প্রয়াস চালাচ্ছি। আমি মনে করি, দেশপ্রেমের কোনো একক রূপ নেই। নানা রূপে দেশপ্রেমের বহিঃপ্রকাশ ঘটতে পারে। প্রগতির ক্ষেত্রেও কেউ একচেটিয়াত্ব দাবি করতে পারে না। সুতরাং বহুমাত্রিকতায়, বহু রূপে সেটার প্রকাশ ঘটা সম্ভব। ‘আমি তো ওই কাজটা করতে পারলাম না’—এ ধরনের কোনো দুঃখবোধ থাকা উচিত নয়। যে কাজটা করতে পারলাম, সেটার ভেতর আমার দেশপ্রেম ও প্রগতির মনোভাব প্রতিফলিত হলো কি না, সেই সম্পর্কে সচেতন থেকে কাজ করে যাওয়াটাই গুরুত্বপূর্ণ।</div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;"><b>আপনার ব্যক্তিগত জীবন?</b></div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;">আমি বিয়ে করেছি ১৯৭৯ সালে। স্ত্রী নাসিমা সুলতানা একজন সরকারি কর্মকর্তা। আমাদের মেয়ে স্বর্ণালী ইসলাম যুক্তরাষ্ট্রে ন্যানো টেকনোলজি বিষয়ে উচ্চশিক্ষা নয়ে ফিরে এসেছে। ছেলে তৌহিদুল ইসলাম খান (সুমন্ত) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি বিভাগে পড়ছে।</div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;">(পুরানা পল্টন, ঢাকা; ২৪ মার্চ ২০১৯)</div><p></p>Unknownnoreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-462762004599772458.post-70359156207005006202022-09-05T14:46:00.006+06:002022-09-05T19:55:26.816+06:00জলে কুমির ডাঙায় বাঘ | মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম<div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEg0Yj0LsUtZ6M7W7MDw-2ygFPaEoB56ecJmzXoJ_TDwN9LvMssDXfE5-mkViYA0viYk2SqWEwwc462Xvp5g7GnS0rJtKtkUXEtIQE2Dm-WMuSOqfQCoau0bpkGBugO4mVk3Wae0aJb3Q3Fx7GC4EWJzqV5-rj2HeDDVXPMlmaaXNQlMXw__HnTuK1wu/s720/%E0%A6%AE%E0%A7%81%E0%A6%9C%E0%A6%BE%E0%A6%B9%E0%A6%BF%E0%A6%A6%E0%A7%81%E0%A6%B2-%E0%A6%87%E0%A6%B8%E0%A6%B2%E0%A6%BE%E0%A6%AE-%E0%A6%B8%E0%A7%87%E0%A6%B2%E0%A6%BF%E0%A6%AE.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img border="0" data-original-height="435" data-original-width="720" height="193" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEg0Yj0LsUtZ6M7W7MDw-2ygFPaEoB56ecJmzXoJ_TDwN9LvMssDXfE5-mkViYA0viYk2SqWEwwc462Xvp5g7GnS0rJtKtkUXEtIQE2Dm-WMuSOqfQCoau0bpkGBugO4mVk3Wae0aJb3Q3Fx7GC4EWJzqV5-rj2HeDDVXPMlmaaXNQlMXw__HnTuK1wu/s320/%E0%A6%AE%E0%A7%81%E0%A6%9C%E0%A6%BE%E0%A6%B9%E0%A6%BF%E0%A6%A6%E0%A7%81%E0%A6%B2-%E0%A6%87%E0%A6%B8%E0%A6%B2%E0%A6%BE%E0%A6%AE-%E0%A6%B8%E0%A7%87%E0%A6%B2%E0%A6%BF%E0%A6%AE.jpg" width="320" /></a></div><div style="text-align: justify;">অনেক আগেই, আশির দশকের শুরুর দিক থেকে, এদেশে বেজে উঠেছিল সাম্প্রদায়িক জঙ্গিশক্তির ভয়ার্ত উত্থানের বিপদ সংকেত। জামায়াত-শিবিরের রগ কাটা ও গান পাউডার দিয়ে আগুনে পুড়িয়ে মারার ঘটনাবলীর মধ্য দিয়ে ঘটেছিল তার সূত্রপাত। কিন্তু সেই বিপদ সংকেতকে তখন যথাযথ গুরুত্ব দেয়া হয়নি। ‘এক দফা এক দাবি– এরশাদ তুই করে যাবি’ শ্লোগানে মনযোগ কেন্দ্রীভূত করে রাখার চেষ্টা হয়েছিল। ফলে জামায়াত-শিবিরের বিরুদ্ধে সংগ্রামের বিষয়টি সেভাবে গুরুত্ব পায়নি। এই দানবীয় শক্তি বেড়ে ওঠার সুযোগ পেয়েছিল।</div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;">এই অপশক্তির হাত থেকে প্রথম বড় আঘাতটি এসেছিল ১৯৯৯ সালে যশোরে অনুষ্ঠিত বামপন্থী ঘরানার প্রগতিবাদী সাংস্কৃতিক সংগঠন উদীচীর জাতীয় সম্মেলনে বোমা হামলার ভেতর দিয়ে। তারপর ২০০১ সালে সংগঠিত হয়েছিল কমিউনিস্ট পার্টির পল্টনের জনসভার বোমা হত্যাকাণ্ড। তার কিছুদিনের মধ্যেই বোমা হামলা চালানো হয়েছিল রমনা বটমূলে ছায়ানটের নববর্ষের অনুষ্ঠানে। পরবর্তীতে একের পর এক ঘটেছিল দেশব্যাপী সিরিজ বোমা হামলা, আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলার ঘটনা ইত্যাদি। এক্ষেত্রে যেটি খেয়াল করার বিষয় তা হলো, সেসময় থেকে সাম্প্রদায়িক জঙ্গি অপশক্তি অনেকটা খোলামেলাভাবেই তার তৎপরতা ক্রমাগত বাড়িয়ে গেছে। অথচ, একটি সুসমন্বিত স্বল্পমেয়াদী ও দীর্ঘমেয়াদী জাতীয় কর্মকৌশল গ্রহণ করার মধ্য দিয়ে, এই ভয়াবহ বিপজ্জনক শক্তিকে মোকাবেলা ও নিশ্চিহ্ন করার মতো উপযুক্ত পদক্ষেপ আজ পর্যন্ত গ্রহণ করা হয়নি। এই বিপদ মোকাবেলার কর্তব্যের প্রতি যথাযথ নজর দেয়ার বদলে দেশের তথাকথিত ‘মূলধারার’ দুটি রাজনৈতিক দল ও তাদের জোটের মনযোগ কেন্দ্রীভূত থেকেছে মূলত রাষ্ট্র ক্ষমতা নিয়ে পরস্পরের মধ্যে প্রতিযোগিতা ও ‘গদির জন্য নোংরা কামড়া-কামড়ির’ মধ্যে।</div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;">বেশ কিছুদিন ধরে সাম্প্রদায়িক জঙ্গিবাদী শক্তি ব্যক্তিগত হত্যা-সন্ত্রাস চালিয়ে তাদের অভিসন্ধি কার্যকর করার নতুন পন্থা গ্রহণ করেছে। এখন টার্গেট করা মানুষদেরকে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হচ্ছে। ব্লগার, মুক্ত চিন্তার মানুষ, পুরোহিত-ভিক্ষু-যাজক, বিদেশি নাগরিকদের টার্গেট করে হত্যা করা শুরু হয়েছে। মন্দির-মঠ-গীর্জা- ইমামবারা ইত্যাদির ওপর বোমা হামলা করা হচ্ছে। এসবের দ্বারা একদিকে সাম্প্রদায়িক জঙ্গি গোষ্ঠীগুলো তাদের শক্তি প্রদর্শন করতে, অন্যদিকে ভয় ও আতংকের পরিবেশ সৃষ্টি করে জাতীয়-আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে তোলপাড় তুলে আরো বড় রাজনৈতিক পরিকল্পনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে নেমে পড়েছে। তাদের এসব তৎপরতার সাথে সংযোগ স্থাপিত হচ্ছে আইএস, আল-কায়দা ইত্যাদি আন্তর্জাতিক জঙ্গিবাদী নেটওয়ার্কের। আন্তর্জাতিক এসব জঙ্গি গোষ্ঠীর নেপথ্যের জন্মদাতা ও লালনকারী সাম্রাজ্যবাদ, বিশেষত: মার্কিন-ইসরাইল চক্র। একথা আজ বিশ্বব্যাপী সুবিদিত। এভাবে, সাম্প্রদায়িক জঙ্গিবাদের অপতৎপরতাকে কেন্দ্র করে, সাম্রাজ্যবাদের ভূ-রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের খেলার জালে বাংলাদেশকে আটকে ফেলার চেষ্টা আজ প্রায় সফল হতে চলেছে। চতুর্দিক থেকে আজ এক ঘোরতর বিপদ আমাদের দেশকে ঘিরে ধরেছে।</div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;">দেখা যাচ্ছে যে, দেশের ওপর সশস্ত্র সাম্প্রদায়িক জঙ্গিবাদের বিপদটি আসছে দু’দিক থেকে। একদিকে ধর্মান্ধ উগ্র সাম্প্রদায়িক শক্তি ও অন্যদিকে সাম্রাজ্যবাদ। দু’দিক থেকে আসা এই প্রচণ্ড হামলার মুখে দেশের শান্তি, স্থিতিশীলতা ও জনজীবনের ন্যূনতম স্বস্তি-নিরাপত্তা চুরমার হতে বসেছে কেবল তাই নয়, দেশের স্বার্বভৌমত্ব ও অস্তিত্বও আজ হুমকির মুখে এসে পড়েছে। দেশের বিদ্যমান অর্থনৈতিক-সামাজিক-রাজনৈতিক কাঠামো বজায় থাকলে এই বিপদ ও হুমকি থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যে সম্ভব হবে না, বরঞ্চ তা যে বর্ধিত মাত্রায় ও নব-নব রূপে ক্রমাগত আবির্ভূত হতে থাকবে, সে কথা গত কয়েক দশকের অভিজ্ঞতা দ্বারা প্রমাণিত। কারণ, এ প্রামাণ্য তথ্যটি কেউ অস্বীকার করতে পারবে না যে, এসময়কালে এই একই আর্থ-সামাজিক কাঠামোর মধ্যে দেশ পরিচালিত হওয়ার ফলে সাম্প্রদায়িকতা ও সাম্রাজ্যবাদের বিপদ কেবল ক্রমাগত বৃদ্ধিই পেয়েছে। অনেক তথ্য আড়াল করে রেখে, অনেক বিষয়ের ওপর আপোসের প্রলেপ চাপিয়ে, একটু-একটু করে ক্রমাগত আত্মসমর্পণ করে একধরনের ভাব দেখানোর চেষ্টা হয়েছে যে সবকিছু ‘স্বাভাবিক’ রয়েছে এবং ‘কন্ট্রোলে’ আছে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষেএখন প্রায় সবকিছুর ওপর ‘কন্ট্রোল’ এদেশ ও দেশবাসীর কাছ থেকে কার্যত বহুলাংশে হাতছাড়া হয়ে অন্যত্র স্থানান্তরিত হয়ে গেছে।</div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;">ক্রমাগত শক্তিশালী হয়ে ওঠা সাম্প্রদায়িক জঙ্গিবাদের বিপদ সম্পর্কে বর্তমান ও বিগত সরকারগুলোর উদাসিনতা ও দায়িত্বহীনতা ক্ষমার অযোগ্য। বিএনপি গুলশান ও শোলাকিয়ার সশস্ত্র আক্রমণ ও হত্যাকাণ্ডের সাম্প্রতিক ঘটনার নিন্দা করেছে। কিন্তু একথা কি সে অস্বীকার করতে পারবে যে তাদের শাসনামলেই জামায়াত পুনর্বাসিত হয়েছিল, গোলাম আজমের নাগরিকত্ব প্রদান করা হয়েছিল, যুদ্ধাপরাধীদের মন্ত্রীসভায় স্থান করে দেয়া হয়েছিল, জেএমবি ও বাংলা ভাইয়ের জন্ম দেয়া ও সৃজন করা হয়েছিল ইত্যাদি। বিএনপি এখনো জামায়াতকে তার জোট সঙ্গী করে রেখেছে। ইসলাম-পছন্দ দল হিসেবে নিজেকে জাহির করে সে নিজেকে তার একক চ্যাম্পিয়ান হিসেবে দাবি করে চলেছে। ইসলাম ও অন্ধ ভারত-বিরোধীতার কার্ড খেলে সে আওয়ামী লীগের ওপরে টেক্কা দেয়ার চেষ্টা করছে। এ বিষয়ে এধরনের আরো অনেক কথা উল্লেখ করার মতো আছে। আসলে সবকিছুই ‘হলো ক্ষমতার খেলার’ ভেল্কিবাজি!</div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;">একই সাথে এটিও দেখা যাচ্ছে যে, অনুরূপভাবে আওয়ামী লীগের কাছেও ক্ষমতার ইস্যুটিই মুখ্য হয়ে আছে এবং সে তুলনায় নীতি-আদর্শের প্রশ্নটি গৌণ বলে বিবেচিত আছে। ক্ষমতার সমীকরণ মিলানোর প্রয়াসে বিএনপি কর্তৃক একচেটিয়াভাবে ইসলামী কার্ড ব্যবহারের ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগও এখন ভাগ বসানোর পথ নিয়েছে। সাম্প্রদায়িকতাকে আদর্শগতভাবে ও রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলার কাজে গুরুত্ব দেয়ার বদলে সে নিজেকে ‘বিএনপির চেয়ে কোনভাবেই কম ইসলাম-পছন্দ নই’ বলে প্রমাণ করতে মরিয়া চেষ্ট চালাচ্ছে। জামায়াতকে নিষিদ্ধ করবো করবো বলে বহুদিন ধরে প্রতিশ্রুতি দিতে থাকলেও বছরের পর বছর ধরে সে এ কর্তব্যটি ঝুলিয়ে রেখেছে। জামায়াতের নেতাকর্মীদেরকে তার দলে স্বাগত জানানো হচ্ছে। সংবিধানে ‘ধর্মনিরপেক্ষতার’ মূলনীতি ফিরিয়ে আনা সত্ত্বেও, জিয়াউর রহমানের ‘বিসমিল্লাহ’ ও এরশাদের ‘রাষ্ট্রধর্ম ইসলামের’ বিধান বহাল রাখা হয়েছে। আওয়ামী লীগ ও তার সরকারের কাজকর্মে এধরনের গুরুতর পদস্খলনের দৃষ্টান্তের অভাব নেই।</div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;">আরেকটি গুরুতর কথা হলো, আওয়ামী লীগ ও বিএনপি উভয় দলই অনেক বছর ধরে কার্যতঃ একধরনের ‘আদর্শবর্জিত বিরাজনীতিকরণের’ ধারায় তাদের দলীয় কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে। ক্ষমতাই এখন তাদের কাছে প্রধান ও একমাত্র লক্ষ্য, নীতি-আদর্শের বিষয়টি সেক্ষেত্রে প্রয়োজনমতো পরিত্যাজ্য। এভাবে, দেশের ‘মূলধারার’ রাজনীতিতে একটি ভয়ঙ্কর রকম মতাদর্শগত শূন্যতার সৃষ্টি হয়েছে। সেই শূন্যতা পূরণের সুযোগ বামপন্থীদের ছিল। কিন্তু তারা নানা মতে ও দলে বিভক্ত। তাছাড়া, তারা অনেকে বিভ্রান্ত ও পথচ্যুত। ফলে বামপন্থীরা সেই শুন্যতা পুরণে এখনো অপরাগ হয়ে আছে। সৃষ্ট শুন্যতার ষোল আনা সুযোগ নিয়ে অনেকটা এগিয়ে যেতে স্বক্ষম হয়েছে সাম্প্রদায়িক ও জঙ্গিবাদী শক্তিগুলো।</div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;">বিগত দশকগুলোতে দেশের অর্থনীতি ও সমাজ পরিচালিত হয়েছে ‘বাজার অর্থনীতির’ দর্শনের ভিত্তিতে। বাজার অর্থনীতি একদিকে জন্ম দিয়েছে ‘বাজার রাজনীতির’ ও অন্যদিকে ‘লুটপাটতন্ত্রের’। সমাজে বৈষম্য, কর্মহীনতা, বেকারত্ব ইত্যাদি বেড়েছে। জনগণ অসাম্প্রদায়িক-গণতান্ত্রিক পথে তাদের ভাত-কাপড়ের সমস্যা নিরসনের কোনো নিদর্শন ও সম্ভাবনা দেখতে পাচ্ছে না। ফলে হতাশা ও ক্ষোভ তাদেরকে একধরনের জীবনবিমূখ উন্মাসিকতা ও আত্মকেন্দ্রীকতার গণ্ডিতে আবদ্ধ করে ফেলছে। এর ফলে সাম্পদ্রায়িক জঙ্গিবাদের উদ্ভব ও প্রসারের এক উর্বর ক্ষেত্র তৈরি হয়েছে। দেশে যদি শক্তিশালী শ্রেণি সংগ্রাম ও জোরদার বামপন্থী আন্দোলন থাকতো তাহলে জনগণ অসাম্প্রদায়িক-গণতান্ত্রিক পথে তাদের ভবিষ্যৎ রচনার একটি পথ দেখতে পেত। কিন্তু সেক্ষেত্রে দুর্বলতা থাকার কারণে জনগণের মধ্যে অদৃষ্টবাদী চিন্তার প্রসার ঘটছে। এভাবেও সাম্প্রদায়িকতা ও সাম্প্রদায়িক জঙ্গিবাদের বিস্তারের পটভূমি ও সুযোগ প্রস্তুত হচ্ছে।</div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;">বিশ্ব পরিস্থিতিও সাম্প্রদায়িক জঙ্গিবাদের বিস্তারের জন্য সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছে। সেটি তা করেছে দু’ভাবে। প্রথমত: সোভিয়েত ইউনিয়নের বিলুপ্তির পর মার্কিন নেতৃত্বধীন তথাকথিত এককেন্দ্রীক বিশ্বে পশ্চিমা দুনিয়ার অর্থনৈতিক-রাজনৈতিক-সামাজিক-সাংস্কৃতিক আধিপত্য অপরাপর জাতি ও তাদের জীবন ধারার ওপর একচেটিয়াভাবে কর্তৃত্ববান হয়ে ওঠার বাস্তব আশংকা সৃষ্টি হয়েছে। এ ঘটনা পশ্চিমা দুনিয়ার বাইরে থাকা দেশের মানুষদের স্বকৃীয়তাকে অস্তিত্বহীন করে তোলার মতো বিপদের সম্মুখীন করে তুলেছে। স্বকীয় অস্তিত্ব বজায় রাখার জন্য তথাকথিত ‘বিশ্বায়নের’ দানবের বিরুদ্ধে প্রতিরোধের তাগিদ তাদের মধ্যে স্বাভাবিক কারণে অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছে। শুধু নিজ-নিজ দেশের ভেতরেই নয়, বিশ্ব পরিমণ্ডলেও প্রতিরোধের শক্তি গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তা তাদের মাঝে সমান মাত্রায় জেগে উঠেছে। বিশ্বের কোন শক্তির ওপর ভরসা করে সেই বৈশ্বিক প্রতিরোধ গড়ে তোলা যাবে? সোভিয়েত ইউনিয়ন তো নেই। তাই নতুন একটি বৈশ্বিক আন্দোলন প্রয়োজন। এরূপ পরিস্থিতিই ধর্মভিত্তিক সাম্প্রদায়িক জঙ্গিবাদ ও তার আন্তর্জাতিক কাঠামো গড়ে তোলার পটভূমি রচনা করে রেখেছে।</div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;">দ্বিতীয়ত: মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের নেতৃত্বাধীন বিশ্বায়নকে, তার অস্তিত্বের স্বার্থেই, সমরাস্ত্র শিল্প ও সেসবের ব্যবসা-বাণিজ্যের ওপর আরো বেশি করে নির্ভরশীল হতে হচ্ছে। কিন্তু প্রতিপক্ষ রূপে কোনো একটি শক্তি যদি তার শত্রু হিসেবে না থাকে এবং যদি যুদ্ধ-বিগ্রহ-হানাহানি না থাকে, তাহলে অস্ত্রের ব্যবসা হবে কিভাবে? দেশে দেশে অস্থিতিশীলতার পরিবেশ উস্কে দিতে না পারলে অস্ত্রপাতি কেনার মতো দেশ কোথায় পাওয়া যাবে? একটি দেশকে সন্ত্রাসে আক্রান্ত দেশ হিসেবে চিহ্নিত করতে না পারলে, সেই সুযোগে সে দেশে হস্তক্ষেপ করে গোটা বিশ্বকে সে ‘কন্ট্রোলে’ রাখবেই বা কি করে? </div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;">এসব কারণে সাম্রাজ্যবাদকে নিজের অস্তিত্বের স্বার্থেই, তার তেমন কোনো ভয়াবহ শত্রু না থাকলেও, সেরূপ শত্রু ‘পয়দা’ করতে হয়। সোভিয়েত ইউনিয়ন ছিল সাম্রাজ্যবাদের স্বাভাবিক প্রতিপক্ষ। তাই তাকে শত্রু রূপে চিহ্নিত করে একাজ চালানো হতো। এখন তাকে নিজের শত্রু নিজেকেই জন্ম দিতে হচ্ছে। এসব হিসেব থেকে সাম্রাজ্যবাদকেই ‘পয়দা’ করতে হয়েছে তালেবান, আল-কায়দা, আইএস ইত্যাদি ধর্মান্ধ সশস্ত্র ফ্যাসিস্ট জঙ্গি গোষ্ঠী। নিজেই এদের জন্ম দিয়ে ও লালন করে, এখন তাদেরকে দমন করার অজুহাতে সর্বত্র যুদ্ধ-হানাহানি-দেশ দখল ইত্যাদি সে চালিয়ে যাচ্ছে। </div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;">বাংলাদেশের ক্ষেত্রে সাম্রাজ্যবাদের নীল-নকসা এর বাইরে মোটেও নয়। গুলশান ও শোলাকিয়ায় জঙ্গিবাদী অ্যাকশানের পর তারা বাংলাদেশে হস্তক্ষেপ করার জন্য চাপ আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। তবে, প্রশ্ন রয়েছে যে গুলশান-শোলাকিয়ার কারণে হস্তক্ষেপের প্রশ্ন তোলা হচ্ছে, নাকি হস্তক্ষেপের প্রয়োজনে গুলশান-শোলাকিয়া ঘটানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে!</div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;">সাম্প্রদায়িক জঙ্গিবাদ ও সাম্রাজ্যবাদ– এই উভয় দিক থেকে স্বদেশ আজ চরম হুমকির মুখে। একথা আগে থেকেই টের পাওয়া যাচ্ছিল। একমাস আগেও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ সরকারের শীর্ষ ব্যক্তিরা বলেছেন “এসব হলো বিচ্ছিন্ন ঘটনা”। “সব দেশেই এরকম ঘটনা ঘটে থাকে”। “ভয়ের কিছু নেই, পরিস্থিতি পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আছে”। এসব মিথ্যা আশ্বাসে জনগণের মধ্যে সতর্কতার ও প্রতিরোধের প্রয়োজনীয়তাকে নিষ্ক্রিয় করে দেয়া হয়েছিল। পরিস্থিতির বিপদ সম্পর্কে জনগণকে সতর্ক করার বদলে তাদেরকে “সব ঠিক আছে” বলে তাদেরকে নিশ্চিন্তে ঘুমিয়ে থাকতে বলা হয়েছিল। এটি শুধু জনগণের সাথে প্রতারণা করার মতো কাজই নয়, তা ছিল একটি অপরাধও বটে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কার কথায় এমনটি করলেন? এর দায় তাকেই নিতে হবে।</div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;">পরিস্থিতি দাবি করে সাম্প্রদায়িক জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে ১৬ কোটি মানুষের সম্মিলিত সতর্ক পাহারা ও সক্রিয় প্রতিরোধ। প্রতিরোধ গড়তে হবে জামায়াতসহ সাম্প্রদায়িক শক্তি ও তাদের ছত্রছায়ায় বেড়ে ওঠা সশস্ত্র জঙ্গি শক্তির বিরুদ্ধে। এরূপ বিভৎস ও ভয়ঙ্কর শক্তির বিরুদ্ধে কার্যকর প্রতিরোধ গড়া শুধু সরকারি দলের বা তার জোটের কর্মী-ক্যাডার-সমর্থক দিয়ে পক্ষে সম্ভব হবে না। তাছাড়া সরকারি দলে তো জামায়াতীরা দলে-দলে ঢুকে বসে আছে। সরকারি দল-বিরোধীদল সহ সব দল, সামাজিক শক্তি, ব্যক্তি– সকলকে একযোগে নামতে হবে। প্রশ্নটি ‘জাতীয় ঐক্যের’ নয়। ‘জাতীয় ঐক্য’ গড়ে উঠতে পারে নির্দিষ্ট আর্থ-সামাজিক কর্মসূচির ভিত্তিতে। সে কর্মসূচিকে অবশ্যই হতে হবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা-ধারা তথা চার রাষ্ট্রীয় মূলনীতির ভিত্তিতে। কিন্তু এই মূহুর্তে যেটির জরুরি প্রয়োজন তা হলো সাম্প্রদায়িক জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে তথা জামায়ত-আনসারুল্লাহ-জেএমবি ইত্যাদি গং-এর বিরুদ্ধে একযোগে মাঠে নামা।</div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;">তাহলেই ১৬ কোটি মানুষ সক্রিয় প্রতিরোধে পথে নামবে। যেভাবে তারা নেমেছিল একাত্তরে। কিন্তু বিএনপি যদি জামায়াতকে জোটসঙ্গী করে রাখে তাহলে সাম্প্রদায়িক জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে একযোগে মাঠে নামার জন্য তার আহ্বানের ন্যূনতম কোনো বিশ্বাসযোগ্যতা থাকবে না। দেশের সামনে সাম্প্রদায়িক জঙ্গিবাদ ও বিদেশি হস্তক্ষেপের যে বিপদ তা থেকে আশু পরিত্রাণ পাওয়ার বিষয়টি তাই আপাতত: বহুলাংশে তাই নির্ভর করছে প্রথমত: বিএনপির জামায়াতের সঙ্গ ত্যাগ করা ও দ্বিতীয়ত: ক্ষমতার ইস্যুর উর্দ্ধে উঠে সরকারের বিএনপি সহ সব দলকে একযোগে মাঠে নামানোর উদ্যোগ গ্রহণের ওপরে। অন্যথায় ভয়ঙ্কর বিপদ অনিবার্য হয়ে উঠবে।</div>Unknownnoreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-462762004599772458.post-23936960161841036942022-09-02T15:32:00.001+06:002022-09-02T15:32:10.341+06:00 গল্প // লাশের অধিকার : মরিয়ম মেরিনা।।<p><br /></p><p></p><div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEhv-bBgyZmCdGfAWcBkZszOVVO37_bXQwqIDTiguA6xlyEUCuyP9JVmgFp0Bo8G-7YsilIvWozXZwYIUyRcvVhTa0QfzGJROW6UvSoB4pF9wDXa9Fxpxo_0-zcrtX8qhiWsmeR4tMYp6fglbm3uqRi4_m2bK6fj-3DtaR3M5pV1nru9SnzfTW_otsJd/s320/1599391663796.png" imageanchor="1" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img border="0" data-original-height="169" data-original-width="320" height="169" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEhv-bBgyZmCdGfAWcBkZszOVVO37_bXQwqIDTiguA6xlyEUCuyP9JVmgFp0Bo8G-7YsilIvWozXZwYIUyRcvVhTa0QfzGJROW6UvSoB4pF9wDXa9Fxpxo_0-zcrtX8qhiWsmeR4tMYp6fglbm3uqRi4_m2bK6fj-3DtaR3M5pV1nru9SnzfTW_otsJd/s1600/1599391663796.png" width="320" /></a></div><br />আজ অ্যালকোহল একটু বেশি গিলে ফেলেছে বাশার।চোখ মাথা ঝিমঝিম করছে।একটা দারুণ ঘোরে আছে সে।তার কাজের জন্য এই ঘোর অবশ্য খুব দরকার।যত বেশি ঘোরে থাকবে তত বেশি সে কাজে মনোযোগী হবে।<p></p><p><br /></p><p>জেল প্রাচীরের পাশ ঘেঁসে টলতে টলতে সে যখন মর্গের খুব কাছে আসলো জঙ্গল থেকে হুট করে একটা কালো বিড়াল তার পায়ের কাছে দু'বার পাক খেয়ে বেওয়ারিশ লাশের কবরগুলোর আড়াল হল।</p><p>যেখানে জেলখানার শেষ প্রাচীর,তার পাশেই মর্গ।পিচঢালা রাস্তা থেকে কয়েক কদম যেতে হয়।এরপাশেই বেওয়ারিশ লাশগুলোর করব তারপরেই স্থানীয় কবরস্থান।সেখানে শুনশান নীরবতা, বড় বড় গাছের ছায়া আর ধূ ধূ ফসল ক্ষেত।রাস্তার অপর প্রান্তে প্রসাশনিক এলাকার পরিত্যক্ত বিল্ডিং যা ঢাকা পরেছে বিশাল বিশাল কয়েকটি গাছে।কোন সরগম নেই।দিনেই একা এপথে কাউকে পাওয়া যায় না।মাঝেমধ্যে এখান থেকেই ভেসে আসে বিলাপ কান্না কিংবা খিলখিল হাসির অসহ্য শব্দ। </p><p><br /></p><p>শুধু বাশার নয়,পুবমুখী এই লাশকাটা ঘরে ছয় হাত টেবিলের উপর শব কাঁটে আরো অনেকে।</p><p>বাশার মুসলিম। লাশ কাটে মূলত ডোমেরা।কিন্তু ভাগ্যের লিখন।তার এ কাজটিকে সহজ মনে হয়। এদিক থেকে তাকে হিংস্র বলা যায়।</p><p>কাজটা তার নেশায় দাঁড়িয়েছে। শব দেখলেই যতক্ষণ না কেটেকুটে সর্বস্থ নেয় ততক্ষণ সে উন্মাদের মত আচরণ করে।এই কাটাকুটেই তার নেশা।এই নেশাকে আরো চরমপন্থী করে অ্যালকোহল।</p><p><br /></p><p>পিয়াসদা আগেই এসেছে।বারান্দার সিঁড়িতে বসে সিগারেটের ধোঁয়ায় নিজেকেই আড়াল করতে চায় সে।আমতলায় পাশে দু'জন দাঁড়িয়ে।বোঝাই যাচ্ছে,লাশের আপনজন।</p><p><br /></p><p>পিয়াসদা এই লাইনে আছে ১৩ বছর।বাশার আছে ৬ বছর।পিয়াস দার ঘর সংসার থাকলেও বাশার প্রথম ভালোবাসার কাছে হেরে গিয়ে বাউন্ডুলে।শেফালী তারে খুব ভালোবাসত।কিন্তু তার শয়তান বাপ মকবুল মিয়ার সাথে তার জোর করে বিয়ে দেয়।কে জানে...শেফালী এখন কেমন আছে।তার প্রথম প্রেম,প্রথম ভালোবাসা হারিয়ে যায় মকবুল মিয়ার টাকার কাছে।</p><p><br /></p><p>বারান্দার সিঁড়িতে ধপ করে বসে পিয়াসের হাতের সিগারেটে ভাগ বসায় বাশার।</p><p><br /></p><p>পশ্চিমের দোলা থেকে আসছে শীতল বাতাস।ঘরের মাঝে বরাবর ছ'হাতে টেবিলে শোয়া একটা লাশ।লাশের মুখের দিকে পিয়াস আর উল্টো দিকে বাশার।</p><p>দেহ কাঁটার মাঝ সময়ে চোখ আটকে যায় বাশারের।কী মায়া মুখে।অতলে ঘুমে যেন সে।আহা!!কী সুন্দর চোখের পাপড়ি, ফিনফিনে নাক,জোড় ভ্রু।</p><p>এমন সুন্দরী কেন যে নিজে মৃত্যুর কাছে ধরা,দেয় কে জানে?</p><p><br /></p><p>লাশ হস্তান্তর করে পিয়াসদা আর বাশার যখন স্থানীয় কবরস্থান পার হয়ে টিটিসি'র মোড়ে একজন উম্মাদ প্রেমিকের দেখা মিলল।</p><p>আচ্ছা প্রেমিকার লাশে প্রেমিকের কোন অধিকার থাকে না কেন?</p><p><br /></p><p><br /></p>Unknownnoreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-462762004599772458.post-21098238198783714952022-09-01T12:44:00.003+06:002022-09-01T12:57:03.037+06:00 গদ্য/ বন্ধুত্ব: মরিয়ম মেরিনা <div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgIt7hw589PUI5DxFzX7KmmIxx9aVfUFr6ejdUbSNGh57CSSl0uJyDlYCISQ3qM3xML0Pt4qSK1ufHxXAau8v9rNIacLvWzyJm1yLnkfTFOClHOwVZV9v3pj3_31n4vQGkSfrfPWpxZwWhmp7C2Orisfxfu65u_KkKNiiesHaP8-t1QcvAyCmFE9GCe/s1800/1599495982155.png" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img border="0" data-original-height="960" data-original-width="1800" height="171" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgIt7hw589PUI5DxFzX7KmmIxx9aVfUFr6ejdUbSNGh57CSSl0uJyDlYCISQ3qM3xML0Pt4qSK1ufHxXAau8v9rNIacLvWzyJm1yLnkfTFOClHOwVZV9v3pj3_31n4vQGkSfrfPWpxZwWhmp7C2Orisfxfu65u_KkKNiiesHaP8-t1QcvAyCmFE9GCe/s320/1599495982155.png" width="320" /></a></div><br /><p>গরিবে গরিবে বন্ধুত্ব বেশ জমকালো হয়।</p><p>কিন্তু দুজন গরিব বন্ধুর মধ্যে একজন যদি হুট করে তথাকথিত বড়লোক হয়, সেই আগের মত বন্ধুত্ব আর থাকে না।</p><p>আগের মাখামাখি,মারামারির সম্পর্কগুলোতে আত্মসম্মান জেঁকে বসে।</p><p>হঠাৎ বড়লোক হাওয়া বন্ধুটা নানা কাজে ব্যস্ত থাকে।থাকুক ব্যস্ত, দেখা হলে কথা হলে খোঁচা দিয়ে কথা বলা,কিংবা নিজের অবস্থানটা বারবার অন্যজনকে বোঝানো,তাকে সম্মান, শ্রদ্ধার পাত্র মনে করে চলতে হবে এবং দূরত্ব সৃষ্টি করে তাচ্ছিল্যের দৃষ্টিতে দেখা নতুন কোন গল্প না।</p><p>বড়লোক বন্ধুর প্রতি গরিব বন্ধুর কোন অধিকার থাকে না।যাকে ইচ্ছেমত ভেঙেচুরে নিজের কাছে জমা করে যেত সে কাছে থাকলেও শত শত মাইল দূরে।কারন তার অবস্থার পরিবর্তন।</p><p>সে পাহাড় সমান অপরাধ করলেও আপনাকে বলতে হবে ইট’স ওকে।</p><p>আর আপনি চুল পরিমান অপরাধ করলে তার ক্ষমা নাই।</p><p>কোন এক বিপদে আপনার সাহায্য তার লাগবে।আপনি জীবন বিপন্ন করে তাকে হেল্প করেন,দেখেন আপনার হেল্পটা তার কাছে কতটা তুচ্ছ মনে হয়।</p><p>তাই,বন্ধু কবে, কখন দূরত্ব সৃষ্টি করবে সেই আশায় থাকবেন না।সে যদি একহাত পিছায়, আপনি দশ হাত পিছাবেন।</p><div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><span style="text-align: left;"><br /></span></div><div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><span style="text-align: left;"><br /></span></div><br /><p></p><div><br /></div><div><br /></div>Unknownnoreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-462762004599772458.post-60128924703089104252022-08-31T21:54:00.002+06:002022-09-01T11:00:12.578+06:00রাঙ্গা বালি- আকরাম হোসেন<div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEj_zz3-EmlMnro5K_Cr-dAYauPJUO_psF4lHjykRjouinwjtnCGxIxV2OGwhCwMBuqMqbt9veq23b3o8kY7uckbCLpjH70wITcpSRi0k36AdBXD8VV6ZTGxDTB8c_Sl4mqjexW5CLlQR4wf9vpuXnkAG7y_sVCGIvXhwr0jTUt8ieL5Y2e5mPgKMs2S/s320/1599496072333.png" imageanchor="1" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img border="0" data-original-height="171" data-original-width="320" height="171" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEj_zz3-EmlMnro5K_Cr-dAYauPJUO_psF4lHjykRjouinwjtnCGxIxV2OGwhCwMBuqMqbt9veq23b3o8kY7uckbCLpjH70wITcpSRi0k36AdBXD8VV6ZTGxDTB8c_Sl4mqjexW5CLlQR4wf9vpuXnkAG7y_sVCGIvXhwr0jTUt8ieL5Y2e5mPgKMs2S/s320/1599496072333.png" width="320" /></a></div><br /><p><br /> </p><p> </p><p>সাইবেরিয়ান বালি আমি ভাই</p><div>নীল আসমানের গভিরে উড়ে বেড়াই</div><div>তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে দেখি</div><div>আসমানে আসমান নাই!</div><div>জমিনেই আসমান,খাদ্য কি পাই?</div><div>চর্তুর আমি,ধুর্ত আমি বালি</div><div>দিনের আলোয় চাঁদ আমি</div><div>সুন্দরের জ্বালা</div><div>এলে তব পাবে ধরা।</div><div>গভীর আসমান হবে নীল</div><div>ভাসাবো তারে জমিন পার</div><div>ডুবসাঁতারে ধরবো আমি</div><div>গভিরের চালাক মানবে হার।</div><div>অতিথি বালি আমি</div><div>ধুসর রঙ্গা,পেটুক রাঙ্গা</div><div>আহার আমার চাই</div><div>আসমান হোক,জমিন হোক</div><div>আমি বালি গভির আসমানে যে যাই।।</div>Unknownnoreply@blogger.com1tag:blogger.com,1999:blog-462762004599772458.post-61599910096878817292022-08-31T21:37:00.003+06:002022-09-01T11:18:43.153+06:00 অনুগল্প: ইঙ্গিত- মোছা:নুসরাত জাহান<div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEidHICkSRuZcnWcKkpKteypyS5gBTFlIS-nuqDiknJTkNYq0YRnKIxSD0Bd-eRhpANstr-4U0nKSHr2tPKD7oDvhhCM5cvMBRWOJGIqtvePi8Z8Qf4ws209Lke53DPeu4a_-1Xe1EXL_gNG8SF7CTzn5iZsMTKHb_rcXm5q2QyQejYPXCCSSqdSiwxd/s1800/1599495982155.png" imageanchor="1" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img border="0" data-original-height="960" data-original-width="1800" height="171" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEidHICkSRuZcnWcKkpKteypyS5gBTFlIS-nuqDiknJTkNYq0YRnKIxSD0Bd-eRhpANstr-4U0nKSHr2tPKD7oDvhhCM5cvMBRWOJGIqtvePi8Z8Qf4ws209Lke53DPeu4a_-1Xe1EXL_gNG8SF7CTzn5iZsMTKHb_rcXm5q2QyQejYPXCCSSqdSiwxd/s320/1599495982155.png" width="320" /></a></div><br /><div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><br /></div><p>কিছুদিন পরেই বিয়ের একবছর পূর্ণ হতে চলেছে। কিন্তু ইতোমধ্যেই সংসার, শ্বশুরবাড়ির প্রতি মহাবিরক্ত মোহনা। গ্রামে বড় হলেও মুক্ত পরিবেশ পেয়েছিল সে। প্রচলিত রিচুয়ালগুলো কুসংস্কার বলেই উড়িয়ে দিয়েছে সবসময়। কিন্তু কে জানত শহুরে শাশুড়িও অতিরক্ষণশীল মানসিকতার মানুষ হবেন।</p><p><br /></p><p>এইতো সেদিন শোভন বাজারে যাচ্ছিলো। কিছু একটা আনতে বলবে জন্য ডাক দিয়েছে মোহনা, অমনি পিছুডাক দেওয়ার জন্য তুলকালাম বাধিয়ে ফেলে শাশুড়ি। আবার কিছুদিন আগে ভোরবেলা উঠান ঝাড়ু দিচ্ছিলো, এমন সময় ফোনটা বেজে ওঠে। ঝাড়ু রেখে ফোন রিসিভ করতে রুমে যাওয়া মাত্রই শাশুড়ির চিৎকার। সকালবেলা উঠেই চোখের সামনে ঝাড়ু! কেমন বউ যে রুমের একেবারে সামনেই ঝাড়ু রেখে দিয়েছে। সন্ধ্যার পর চুল আঁচড়ানো যাবে না, এছাড়াও কড়াইতে তেল আগে দিবে নাকি লংকা আগে দিবে এমন ছোটখাটো বিষয়গুলোতেও নাজেহাল অবস্থা। এই কিছুদিনের সংসার জীবনেই হাঁপিয়ে উঠেছে মোহনা।</p><p><br /></p><p>সেদিন সন্ধ্যাবেলা শ্বশুর মশায়ের সামনে ঠক করে চায়ের কাপটা রেখে রান্নাঘরের দিকে পা বাড়ায় মোহনা। শ্বশুর মশাই আন্দাজ করতে পারেন অবস্থাটা। কারণ কিছুক্ষণ আগে রান্নাঘর থেকে শাশুড়ি-বৌয়ের ঝাঁঝালো আওয়াজ কানে এসেছে। তিনি মোহনাকে ডাকেন, "অনেক তো হলো, এবার নিজের সার্টিফিকেট গুলোকে কাজে লাগাবার চেষ্টা কর দেখি। নাহলে তুইও একদিন তোর শাশুড়ির মতো কুটনি বুড়ি হয়ে যাবি।" কথাগুলো বলে মুচকি হাসি দিয়ে চায়ের কাপ হাতে তুলে নেন তিনি। </p><p>ঘটনার আকস্মিকতায় অবাক মোহনা। চোখে জল চলে আসে। অগাধ স্নেহের প্রশ্রয়ে তার সামনে দেখা দেয় উজ্জ্বল ভবিষ্যতের ইঙ্গিত। </p><p><br /></p><p><br /></p>Unknownnoreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-462762004599772458.post-26735939937684272692022-08-30T13:04:00.003+06:002022-09-01T13:35:48.938+06:00আমরা নারী -মনিকা রায়<div style="text-align: left;"><br /></div><div style="text-align: left;"><br /></div><div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEi2ZjeJ55fQLS4hFZ2VpArf9RhisCWfwUdC0dU7rn1ySsWWkLnu7F1Rc9zoscv9J8A7oirGsiR24L6GYjEVC18Yfzk8BdNmqa0i9pd1hAoyENGO44cEES5agkh138MOUHFpDqKLg15YkXF2L1YEQ-Syc7XKb2rEqW8wg-JU_6z45QTObNEHCF4N1AqD/s320/1599391663796.png" imageanchor="1" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img border="0" data-original-height="169" data-original-width="320" height="169" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEi2ZjeJ55fQLS4hFZ2VpArf9RhisCWfwUdC0dU7rn1ySsWWkLnu7F1Rc9zoscv9J8A7oirGsiR24L6GYjEVC18Yfzk8BdNmqa0i9pd1hAoyENGO44cEES5agkh138MOUHFpDqKLg15YkXF2L1YEQ-Syc7XKb2rEqW8wg-JU_6z45QTObNEHCF4N1AqD/s1600/1599391663796.png" width="320" /></a></div><div style="text-align: left;"><br /></div><div style="text-align: left;"><div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"></div><br />কতো দুঃখ কষ্ট করিয়া করেছে বড় মোদের</div><div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"></div><br /><div style="text-align: left;">শুধু নারী বলে আজকের সমাজ কেন বলে,</div><div style="text-align: left;"> থাকো ঐ দূরে।</div><div style="text-align: left;">সাধনার সিঁড়িতে উঠতে যদি চাই</div><div style="text-align: left;">প্রথম এক পা বাড়াতেই কেন হোচট মোরা খাই</div><div style="text-align: left;">ছাত্রী জীবনে যাতায়াতে যেন লজ্জা লজ্জা লাগে</div><div style="text-align: left;">উলিপুর থেকে কুড়িগ্রাম আসব,</div><div style="text-align: left;">মনের গোপনে যেন একটা অজানা ভয় লুকিয়ে থাকে</div><div style="text-align: left;">কতো লোকের কতো কথায় জীবন লাগে অতি তুচ্ছ</div><div style="text-align: left;">প্রতিটা মুহুতেই মোদের জীবন</div><div style="text-align: left;"> ইতিহাসের পাতায় লেখা একটা গল্পগুচ্ছ।</div><div style="text-align: left;">স্বাধীন দেশের স্বাধীন বাঙালি মোরা</div><div style="text-align: left;">তবুও নারীরা মোরা কেন অস্বাধীন </div><div style="text-align: left;"> দুর্নীতি সমাজে মাঝে মাঝে হয়ে যায় আশাহীন </div><div style="text-align: left;">পাসের লোকে পিছু টানে বিপদের মোরা সম্মুখীন</div><div style="text-align: left;">জীবনের মূল্য বোঝাব মোরা,</div><div style="text-align: left;"> আসবে সেই দিন।</div><div style="text-align: left;"> </div><div style="text-align: left;">শ্রেণী: একাদশ</div><div style="text-align: left;"> কুড়িগ্রাম সরকারি মহিলা কলেজ</div><div style="text-align: left;"> </div>Unknownnoreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-462762004599772458.post-27444234619328289302022-08-30T11:35:00.006+06:002022-08-30T12:04:49.950+06:00যুদ্ধের প্রেরণা - হিমা আক্তার<div style="text-align: left;"> <div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEj1c4VSZzjMrJgdV3qXTD-2a-uOHZ6PoY2rqI4kHN__yzMUHNzvv2VBZDS3_-D7g1LoOJAxWnELqit8WqHk4kVAQAVeGRg_IDCIMQ_B5ktMEgny7jELuiYWerzTXqj9Qc-fb1SbF2J-doz3TZf7WCTUL9Cv_L8z96IgNhCxHpFaoOhiAuG4fDIIhABw/s320/1599391663796.png" imageanchor="1" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img border="0" data-original-height="169" data-original-width="320" height="169" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEj1c4VSZzjMrJgdV3qXTD-2a-uOHZ6PoY2rqI4kHN__yzMUHNzvv2VBZDS3_-D7g1LoOJAxWnELqit8WqHk4kVAQAVeGRg_IDCIMQ_B5ktMEgny7jELuiYWerzTXqj9Qc-fb1SbF2J-doz3TZf7WCTUL9Cv_L8z96IgNhCxHpFaoOhiAuG4fDIIhABw/s320/1599391663796.png" width="320" /></a></div><br /></div><div style="text-align: left;"><br /></div><div style="text-align: left;">জীবন যুদ্ধ কঠিন যুদ্ধ </div><p>লড়াই আছে প্রতি মুহূর্ত;</p><p>লড়তে যে চায় </p><p>টিকে সে রয়।</p><p>প্রকৃতির নিয়মের নির্মম বলি </p><p>আমি এক জীবনমৃত বালিকা;</p><p>জীবনের সাথে লড়ছি প্রতিদিন</p><p>নেই আমার কোনো চালিকা।</p><p>অপরুপ এই জগৎ সংসার</p><p>তারি মাঝে জন্ম আমার;</p><p>মায়ের আমি আদরের মেয়ে</p><p>তবে ছিলাম আদরের। </p><p>সব যেন হলো নিমিষেই শেষ;</p><p>কেউ বলেনা এখন, মাগো আসিস তাড়াতাড়ি </p><p>রাস্তায় আবার করিস না যেন দেরি।</p><p>জীবন যুদ্ধ কঠিন যুদ্ধ </p><p>লড়াই যে আছে প্রতি মুহুর্তে</p><p>লড়তে আমি চাই।</p><p><br /></p><p><b>হিমা আক্তার</b> </p><p>শ্রেণী: একাদশ </p>কুড়িগ্রাম সরকারি মহিলা কলেজ<div><p><br /></p><p><br /></p></div>Unknownnoreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-462762004599772458.post-4453371466833684512022-08-29T11:58:00.003+06:002022-08-29T11:58:22.122+06:00পুরুষের আত্মকথা— যা কাউকে বলি না, নিজের ভেতরে কুঁকড়ে যাই<div><br /></div><h3 style="text-align: left;">লিখেছেনঃ ডা: আব্দুর রব</h3><div><br /></div><div>পুরুষ মানুষের মন খারাপের অনেক কারন থাকে। টাকা পয়সা তার একটি। এই জিনিষ টা ছাড়া পুরুষ হয়ে যায় হাঁফ লেডিস। </div><div>ইন্টার্নীতে থাকার সময় যশোর থেকে এক টি বিয়ের প্রস্তাব এসেছিল। পাত্রীর ধনী বাবা আমাদের বাড়ী দেখতে এসে বাড়ির পথ থেকে পালিয়েছিল, ভিতরে আর আসে নি। এই বয়সে বিয়ের কোন আগ্রহ ছিল না আমার, সেটা চাইও নি, পাত্রীকেও চিনি না। তবুও একটা অদ্ভুত কষ্ট হয়েছিল সেদিন। কষ্টটা আমার জন্য নয়। আমাদের গোলপাতার বাড়িটার জন্য।</div><div>....</div><div>এক ব্যাচ সিনিয়র এক ভাইয়ের সাথে দেখা হল সেদিন। চেহারা শুকিয়ে গেছে, চোখ কোটরে ঢুকেছে। ভালবেসে বিয়ে করেছিল, কোর্ট ম্যারেজ। পরিবার মেনেও নিয়েছিল। নবম মাসের মাথায় ডিভোর্স দিয়েছে। ডিভোর্স হয়েছে উনি নিজেও জানতেন না। খবর টা শুনেছে অন্যের কাছে। একটা বিশাল অপরাধ করেছিলেন উনি::: জুলাইতে এফসিপিএস চান্স হয় নাই, বিসিএস প্রিলি হয় নাই। </div><div>বিসিএস রিটেন দেওয়া রংপুর মেডিকেলের এক ছেলের সাথে নতুন করে শুরু করেছে মেয়েটা। </div><div><br /></div><div>কারো চাই টাকা, আর কারো চাই স্ট্যাটাস। ভালবাসা এখানে শ্বান্ত্বনা ।</div><div>ভাইটাও এখন শ্বান্তনা পায়। মেয়েটির উপর তার কোন অভিযোগ নেই। " ও ভেবেছিল আমি ভাল মেডিকেলে পড়ি, অনেক ব্রিলিয়ান্ট কেউ। আমি যে গড় পড়তামানের স্টুডেন্ট পরে বুঝেছে । বোঝার পর চলে গেছে। ওর কোন দোষ নেই।" এভাবেই বলেছিলেন উনি। </div><div>.....</div><div>আপনি পুরুষ মানুষ হয়েছেন, আর আপনার বিসিএস নাই, এফসিপিএস নাই আবার টাকাও নাই। ভুলেও নিজেকে পুরুষ ভাববেন না। যেদিন বউ চলে যাবে সেদিন ই বুঝবেন নিজেকে ভুল জেনেছেন। 'ভালবাসার সাথে টাকার সম্পর্ক নেই' এই কথা যে বলে তার দুই গালে কষে থাপ্পড় দিন। নিকৃষ্টতম মিথ্যাটি সে আপনাকে বলেছে।</div><div>....</div><div>টাকা সবারই লাগে। অথচ বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এটি থাকে পুরুষের পকেটে। এর ওজন ও ব্যাথা প্রতিটা পুরুষকে বইতে হয়। টাকা না থাকলে কোন মেয়ে অমানুষ হয়ে যায় না, কিন্তু একটি পুরুষ মহিলা হয়ে যায়।</div><div>টাকা আসে, আবার চলে যায়। মাঝ থেকে ভালবাসাটা নিয়ে গেলে আর কষ্টের সীমা থাকে না।</div><div>....</div><div>গতকাল ওয়ার্ডে দুই জন রুগী খারাপ ছিল। 27 বছরের এক মেয়ে , Sub Arachnoid haemorrhage ... ICU এর জন্য. councelling. করেছিলাম। টাকা দিয়ে হয়ত সুখ কেনা যায়, জীবন তো আর কেনা যায় না। তবুও আমাদের টাকাই সব।</div><div>..</div><div>যতবার বিয়ের কথা উঠেছে, ততবার ই আমি ভয় পেয়েছি। টাকা আমাকে আজীবন তাড়িয়ে বেড়িয়েছে। তাই বিয়ে - ভালবাসার কথা শুনলে ভয় পাই। ফার্স্ট ইয়ারে কেরানীগঞ্জ এর ওপারে যখন দেড় হাজার টাকার টিউশুনি করতাম, নদী পার হওয়ার ছয় টাকা আমার থাকত না। আধা কিলোমিটার হেটে ব্রিজ পার হতাম। আর আজ হাজার হাজার টাকা আয় করেও দেখি ঈদে বাড়ি যাওয়ার টাকা থাকে না। জীবন আসলে একই থাকে, শুধু সময় আর চক্র টা বদলায়। </div><div>... </div><div>একজন বিখ্যাত প্রফেসরের সাথে কথা বলতেছিলাম। উনি যখন ইন্টার্নীতে পাঁচ হাজার টাকা বেতন পেতেন তখন দুই হাজার টাকা ঘাটতি থাকত। এখন বিশ লাখ টাকা আয় করেও দুই লাখ টাকা ঘাটতি থাকে। কাকে কি বলব??</div><div>...</div><div>সতের শ টাকায় যখন মাস চলত। তখনও পকেটে একটা টি শার্ট কেনার মত টাকা থাকত না। আর আজ নিজের খরচই হয় ষোল হাজার টাকা। আজও টি শার্ট কেনার টাকা নাই। </div><div>...</div><div>আমি এই হিসেব বুঝি না।</div><div><br /></div>Unknownnoreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-462762004599772458.post-73598904404740504382022-08-22T14:09:00.003+06:002022-08-22T14:56:01.379+06:00শহীদ সঞ্জয় তলাপাত্রঃ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের প্রমিথিউস<div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgQ8pOnGSGlNhtD4kvtmJwPKnyj6Bh-zFOc-KOuSHoB9dRCkMjeyXRhqJI5E5HAXkZqTV2rPoSf_r3dMdVFeOTkIKk9K8osrg-vN9ZDCUqPrpvfxERKq35qxd7Lst5HJe0NA4MuzbTr1LhAB7IP_3B16YZml2HcX_KzoOa7zSThwHBA6KVaZ_nWPyR0/s434/%E0%A6%B6%E0%A6%B9%E0%A7%80%E0%A6%A6-%E0%A6%B8%E0%A6%9E%E0%A7%8D%E0%A6%9C%E0%A7%9F-%E0%A6%A4%E0%A6%B2%E0%A6%BE%E0%A6%AA%E0%A6%BE%E0%A6%A4%E0%A7%8D%E0%A6%B0.jpg" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img alt="শহীদ সঞ্জয় তলাপাত্র" border="0" data-original-height="434" data-original-width="310" height="320" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgQ8pOnGSGlNhtD4kvtmJwPKnyj6Bh-zFOc-KOuSHoB9dRCkMjeyXRhqJI5E5HAXkZqTV2rPoSf_r3dMdVFeOTkIKk9K8osrg-vN9ZDCUqPrpvfxERKq35qxd7Lst5HJe0NA4MuzbTr1LhAB7IP_3B16YZml2HcX_KzoOa7zSThwHBA6KVaZ_nWPyR0/w229-h320/%E0%A6%B6%E0%A6%B9%E0%A7%80%E0%A6%A6-%E0%A6%B8%E0%A6%9E%E0%A7%8D%E0%A6%9C%E0%A7%9F-%E0%A6%A4%E0%A6%B2%E0%A6%BE%E0%A6%AA%E0%A6%BE%E0%A6%A4%E0%A7%8D%E0%A6%B0.jpg" title="শহীদ সঞ্জয় তলাপাত্র" width="229" /></a></div><br /><h3 style="text-align: left;">লিখেছেনঃ মন্টি বৈষ্ণব</h3><p style="text-align: left;"><br />শহীদ সঞ্জয় তলাপাত্র, ক্যাম্পাসের প্রমিথিউস।<br /></p><p style="text-align: justify;">শহীদ সঞ্জয় তলাপাত্র সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী সংগ্রামের এক অবিস্মরণীয় নাম।</p><p style="text-align: justify;">সঞ্জয়রা কোন দিন হারিয়ে যায় না। তাদের স্মৃতি বেঁচে থাকে অনন্তকাল। সঞ্জয় তলাপাত্র একমাত্র নিজের ইচ্ছায় স্বপ্ন নিয়ে ভর্তি হয়েছিল চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগে। পাশাপাশি সমাজ বদলের স্বপ্ন নিয়ে যুক্ত হয়েছিল বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নে।</p><p style="text-align: justify;">১৯৯৮-এর আগস্টের আগেই চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে গড়ে উঠে সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী আন্দোলন। ফলে সেই সময়ে প্রায় প্রতিদিন ক্যাম্পাসে মিছিল-সমাবেশ অনুষ্ঠিত হত। ২০ আগস্ট। সেদিন সকালে বটতলী স্টেশনে মিছিলের কোন কর্মসূচি ছিল না। কিন্তু ট্রেন ছাড়ার আগে শিবির কর্মীরা রড, লাঠি আর বাঁশ নিয়ে হামলা করে সাধারণ শিক্ষার্থীদে। আহত হয় অনেক শিক্ষার্থী। ঘটনার প্রতিবাদে তাৎক্ষণিকভাবে বটতলী স্টেশনে বিশাল মিছিল বের হয় এবং ক্যাম্পাসে বড় মিছিল বের করার সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু সেদিনের হামলার সবচেয়ে বড় দুঃসংবাদ ছিল স্টেশনে মৌলবাদী ঘাতকদের দ্বারা সঞ্জয়ের মারাত্মক আহত হওয়া।</p><p style="text-align: justify;">প্রতিদিনের মতো সেদিনও সঞ্জয় খাতা আর তুলির ব্যাগ কাঁধে নিয়ে সকালের শাটল ট্রেনে যেতে চেয়েছিল তার প্রিয় ক্যাম্পাসে। কিন্তু মৌলবাদী চক্রের নির্মম লাঠি আর রডের আঘাতে তাকে আর ক্যাম্পাসে পৌঁছতে দেয়া হয়নি। পৌঁছে দিয়েছিল হাসপাতালে। তারপর দীর্ঘ ৪৮ ঘন্টা ডাক্তারদের আপ্রাণ চেষ্টা ব্যর্থ করে মৃত্যুর সাথে লড়াই করে ২২ আগস্ট সকাল সাড়ে ৮টার দিকে মস্তিষ্কের রক্ত ক্ষরণ জনিত কারনে সঞ্জয় চিরতরে চলে যায়। থেমে যায় একটি প্রাণবন্ত জীবন। সেদিন ২২ আগস্ট ছিল তার ২৪ তম জন্মদিন।</p><p style="text-align: justify;">ক্যাম্পাসে সঞ্জয়ের মৃত্যুর সংবাদ পৌঁছলে ১৪ হাজার ছাত্র-ছাত্রী ক্ষোভে, ঘৃণায়, প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে আসে আর আকাশ-বাতাস প্রকম্পিত করে করে বলেছে ‘মাগো তোমায় কথা দিলাম, সঞ্জয় হত্যার বদলা নেব।’ সঞ্জয়ের ক্যাম্পাসে খুনী শিবিরের ঠাঁই নেই। সঞ্জয়ের আত্মত্যাগ সেদিন সকলকে ঘুরে দাঁড়ানোর সাহস শিখিয়েছিল। কারণ দীর্ঘ ১২ বছরের অবরুদ্ধ ক্যাম্পাসকে সেদিন মুক্ত করার শক্তি যোগায় সঞ্জয়ের সেই আত্মত্যাগ। ১৪ হাজার ছাত্র-ছাত্রীর সম্মিলিত প্রতিরোধে সঞ্জয়ের হত্যাকারী ঘাতকরা সেদিন ক্যাম্পাস থেকে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়।</p><p style="text-align: justify;">এখনো, সঞ্জয় হত্যার কোনো বিচার হয়নি। কি অপরাধ ছিল সঞ্জয়ের? অন্যায়ের প্রতিবাদ? হত্যাকরীরা এখনো প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ায়। এই খুনী শিবিরের বিরুদ্ধে আমরা কি বা করতে পেরেছি? সঞ্জয়ের মা এখনো জন্মদিনে ছেলের জন্য পায়েস তৈরি করেন। ছোট বোন শান্তা তলাপাত্র নিঃশব্দে কাঁদে প্রিয় ভাইটির জন্য। আর বাবা সঞ্জয়ের রেখে যাওয়া সমান্য স্মৃতি নিয়ে বেঁচে আছেন।বার বার ভুলে যেতে চান সঞ্জয় নেই।</p><p style="text-align: justify;">সঞ্জয় একটি অসাম্প্রদায়িক, সন্ত্রাসমুক্ত, শোষণহীন সমাজ চেয়েছিল। চেয়েছিল তার প্রিয় ক্যাম্পাসে যেন না থাকে কোন দখলদারিত্বের রাজনীতি। কিন্তু শিবিরের ঘাতকরা ভয় পেয়ে সঞ্জয় হত্যা করে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে সঞ্জয়ের আত্মদানে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ১৪ হাজার ছাত্র-ছাত্রী মুক্ত করেছিল একযুগের অবরুদ্ধ ক্যাম্পাসকে।</p><p style="text-align: justify;">২২শে আগস্ট, শহীদ সঞ্জয় তলাপাত্র দিবস। লাল সালাম কমরেড সঞ্জয়।<br /></p><div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEiiHc5hitfJMCA4Xik0FmQ95Ccn7lMsCj9TkG_37wEI45I3ToG7Z8PBlX9lf02Y6njuA2dBqZy-H7YYdRzsezMcwQOSqJtRota1JIynKpdZ9atVqM0f-4-zTf8IcosDeedFMlSc-cDr4y6NQDgsOqO75szb_z72EhtiXkthsiRwiDrzbRpDpSDczSSE/s720/%E0%A6%B6%E0%A6%B9%E0%A7%80%E0%A6%A6-%E0%A6%B8%E0%A6%9E%E0%A7%8D%E0%A6%9C%E0%A7%9F-%E0%A6%A4%E0%A6%B2%E0%A6%BE%E0%A6%AA%E0%A6%BE%E0%A6%A4%E0%A7%8D%E0%A6%B0-%E0%A6%A6%E0%A7%87%E0%A7%9F%E0%A6%BE%E0%A6%B2%E0%A6%B2%E0%A6%BF%E0%A6%96%E0%A6%A8.jpg" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img border="0" data-original-height="540" data-original-width="720" height="240" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEiiHc5hitfJMCA4Xik0FmQ95Ccn7lMsCj9TkG_37wEI45I3ToG7Z8PBlX9lf02Y6njuA2dBqZy-H7YYdRzsezMcwQOSqJtRota1JIynKpdZ9atVqM0f-4-zTf8IcosDeedFMlSc-cDr4y6NQDgsOqO75szb_z72EhtiXkthsiRwiDrzbRpDpSDczSSE/s320/%E0%A6%B6%E0%A6%B9%E0%A7%80%E0%A6%A6-%E0%A6%B8%E0%A6%9E%E0%A7%8D%E0%A6%9C%E0%A7%9F-%E0%A6%A4%E0%A6%B2%E0%A6%BE%E0%A6%AA%E0%A6%BE%E0%A6%A4%E0%A7%8D%E0%A6%B0-%E0%A6%A6%E0%A7%87%E0%A7%9F%E0%A6%BE%E0%A6%B2%E0%A6%B2%E0%A6%BF%E0%A6%96%E0%A6%A8.jpg" width="320" /></a></div><br /><br /><br />Unknownnoreply@blogger.com1tag:blogger.com,1999:blog-462762004599772458.post-9344482369890370702022-08-18T14:10:00.006+06:002022-08-18T14:15:46.063+06:00নানকার বিদ্রোহঃ সিলেট অঞ্চলের মহান কৃষক-আন্দোলন<div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEjm4qTpEmNCfrLctZhV8kvCk8u9-E4LEjdPcqgdFTGbvNWvVDCeb9HKO1bNA7d_9D1uvXpscn34lk1Hs7YD-roIWdt5_IrKPslRzaarE_3H5sTrltrTWazu5LrmXpO94GKWm6svwZnR8b3rpNkFbj6OWlD1S2ApI1IsuWFe4W9m10Wy2oqpKFE1e6GW/s726/%E0%A6%A8%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%B0-%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%A6%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A7%8B%E0%A6%B9.jpg" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img border="0" data-original-height="726" data-original-width="720" height="320" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEjm4qTpEmNCfrLctZhV8kvCk8u9-E4LEjdPcqgdFTGbvNWvVDCeb9HKO1bNA7d_9D1uvXpscn34lk1Hs7YD-roIWdt5_IrKPslRzaarE_3H5sTrltrTWazu5LrmXpO94GKWm6svwZnR8b3rpNkFbj6OWlD1S2ApI1IsuWFe4W9m10Wy2oqpKFE1e6GW/s320/%E0%A6%A8%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%B0-%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%A6%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A7%8B%E0%A6%B9.jpg" width="317" /></a><br /></div><p style="text-align: left;"></p><div style="text-align: justify;">ব্রিটিশ আমলে সামন্তবাদী ব্যবস্থার সবচেয়ে নিকৃষ্ট শোষণ পদ্ধতি ছিল নানকার প্রথা। নানকার প্রজারা জমিদারের দেয়া বাড়ি ও সামান্য কৃষি জমি ভোগ করতেন, কিন্তু ওই জমি বা বাড়ির উপর তাদের মালিকানা ছিল না। তারা বিনা মজুরিতে জমিদার বাড়িতে বেগার খাটতো। চুন থেকে পান খসলেই তাদের উপর চলতো অমানুষিক নির্যাতন। নানকার আন্দোলনের সংগঠক কমরেড অজয় ভট্টচার্যের দেয়া তথ্যমতে, সে সময় বৃহত্তর সিলেটের ৩০ লাখ জনসংখ্যার ১০ ভাগ ছিল নানকার এবং নানকার প্রথা মূলত বাংলাদেশের উত্তর পূর্বাঞ্চলে অর্থাৎ বৃহত্তর সিলেট জেলায় চালু ছিল। ১৯২২ সাল থেকে ১৯৪৯ সাল পর্যন্ত কমিউনিস্ট পার্টি ও কৃষক সমিতির সহযোগিতায় বিয়ানীবাজার, গোলাপগঞ্জ, বড়লেখা, কুলাউড়া, বালাগঞ্জ, ধর্মপাশা থানায় নানকার আন্দোলন গড়ে ওঠে। ঐতিহাসিক নানকার বিদ্রোহের সুতিকাগার ছিল বিয়ানীবাজার উপজেলা। সামন্তবাদী শোষণ ব্যবস্থার বিরুদ্ধে বিয়ানীবাজার অঞ্চলের নানকার কৃষকরা সর্বপ্রথম বীরত্বপূর্ণ সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ে।</div><br /><p></p><h3 style="text-align: left;">নানকার বিদ্রোহ কী?</h3><p style="text-align: left;"></p><div style="text-align: justify;">নানকার বিদ্রোহ সিলেট অঞ্চলের একটি কৃষক-আন্দোলন, যা ১৮ আগস্ট ১৯৪৯ সালে সংগঠিত হয়। জমিদারের ভূমিদাসদের একটি প্রথাকে "নানকার প্রথা" বলা হতো। বিংশ শতাব্দীর ২০-এর দশকে শুরু হওয়া এই আন্দোলন ১৯৫০ সালে জমিদার প্রথা বিলুপ্ত করার মাধ্যমে সমাপ্ত হয়।</div><br /><div style="text-align: justify;">‘নান’ ফার্সি শব্দ, এর অর্থ রুটি এবং 'কার' অর্থ যোগান বা কাজ করা; অর্থাৎ 'নানকার' শব্দটি দ্বারা বোঝানো হয় সেসব কর্মীদের যারা খাবারের বিনিময়ে কায়িক শ্রম দান করে।</div><br /><div style="text-align: justify;">কেবল খাবারের বিনিময়ে যে জমির ভোগস্বত্ব প্রজাদেরকে দেওয়া হতো সে জমিকেই নানকার জমি বলা হতো। এই নানকার প্রজারা ছিলো ভূমির মালিকের হুকুমদাস; প্রজাই নয় তাদের স্ত্রী-সন্তানরাও বংশানুক্রমে ভূমি মালিকের দাস হতো। সাধারণতঃ নিম্নবর্ণের হিন্দুরাই; যেমন: কিরান, নম-শূদ্র, মালি, ঢুলি, নাপিত, পাটনি প্রভৃতি শ্রেণীর লোকেরাই নানকার শ্রণীর প্রজা ছিল।</div><br /><p></p><h3 style="text-align: left;">ইতিহাসঃ</h3><p style="text-align: left;"></p><div style="text-align: justify;">নানকার একটি বর্বর শ্রম শোষণের প্রথা, অনেকটা মধ্যযুগীয় দাস প্রথার সঙ্গে তুলনীয়। প্রধানত সিলেটের বিয়ানীবাজার, গোলাপগঞ্জ অঞ্চলে এই সামন্ত প্রথাটি প্রচলিত ছিল। সামন্ত ভূ-মালিকদের সিলেট অঞ্চলে মিরাশদার এবং বড় মিরাশদারকে জমিদার বলা হতো। জমিদার বা মিরাশদারবাড়ির নিকটবর্তী স্থানে কিছু প্রজার বসবাসের ব্যবস্থা করা হতো, তারাই ছিলেন নানকার প্রজা। জমিদারবাড়ির সার্বক্ষণিক গৃহস্থালি কাজে নিয়োজিত থাকতে হতো তাদের। এমনকি গভীর রাতেও নারী-পুরুষ নির্বিশেষে জমিদারবাড়ির ডাকে ত্বরিত সাড়া না দিলে নেমে আসত অসহনীয় নির্যাতন।</div><br /><div style="text-align: justify;">ব্রিটিশ আমলে সামন্তবাদী ব্যবস্থার সবচেয়ে নিকৃষ্ট শোষণ পদ্ধতি ছিল নানকার প্রথা। নানকার প্রজারা জমিদারের দেয়া বাড়ি ও সামান্য কৃষি জমি ভোগ করতেন, কিন্তু ওই জমি বা বাড়ির উপর তাদের মালিকানা ছিল না। তারা বিনা মজুরিতে জমিদার বাড়িতে বেগার খাটতো। চুন থেকে পান খসলেই তাদের উপর চলতো অমানুষিক নির্যাতন। নানকার আন্দোলনের সংগঠক কমরেড অজয় ভট্টচার্যের দেয়া তথ্যমতে, সে সময় বৃহত্তর সিলেটের ৩০ লাখ জনসংখ্যার ১০ ভাগ ছিল নানকার এবং নানকার প্রথা মূলত বাংলাদেশের উত্তর পূর্বাঞ্চলে অর্থাৎ বৃহত্তর সিলেট জেলায় চালু ছিল। ১৯২২ সাল থেকে ১৯৪৯ সাল পর্যন্ত কমিউনিস্ট পার্টি ও কৃষক সমিতির সহযোগিতায় বিয়ানীবাজার, গোলাপগঞ্জ, বড়লেখা, কুলাউড়া, বালাগঞ্জ, ধর্মপাশা থানায় নানকার আন্দোলন গড়ে ওঠে। ঐতিহাসিক নানকার বিদ্রোহের সুতিকাগার ছিল বিয়ানীবাজার উপজেলা। সামন্তবাদী শোষণ ব্যবস্থার বিরুদ্ধে বিয়ানীবাজার অঞ্চলের নানকার কৃষকরা সর্বপ্রথম বীরত্বপূর্ণ সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ে।</div><br /><div style="text-align: justify;">লাউতা বাহাদুরপুর অঞ্চলের জমিদাররা ছিল অতিমাত্রায় অত্যাচারী। তাদের অত্যাচারে নানকার, কৃষক সবাই ছিল অতিষ্ঠ। লোক মুখে শোনা যায়, বাহাদুরপূর জমিদার বাড়ির সামনে রাস্থায় সেন্ডেল বা জুতা পায়ে হাঁটা যেত না। ছাতা টাঙ্গিয়ে চলা ও ঘোড়ায় চড়াও ছিল অপরাধমূলক কাজ। যদি কেউ এর ব্যতিক্রম করতো তবে তাকে কঠোর শাস্তি দেওয়া হতো। জমিদারদের এহেন অত্যাচারে অতিষ্ঠ হলেও তার শক্তির সামনে দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ করার সাহস কারোরই ছিল না। শোনা যায় নিজের ঘরের দরজা বন্ধ করেও কেউ জমিদারদের বিরুদ্ধে কথা বলতে সাহস পেত না। দিনে দিনে জমিদারদের অত্যাচার বাড়ত থাকে সেই সাথে বাড়তে থাকে মানুষের মনের ক্ষোভ, এই অনাচারের প্রতিকার চায় সবাই। তাই গোপনে গোপনে চলে শলাপরামর্শ। কেউ কেউ আবার সাহস সঞ্চার করে এ সময় নানকার ও কৃষকদের সংগঠিত করতে কষক সমিতি ও কমিউনিস্ট পার্টি সক্রিয় হয়।</div><br /><div style="text-align: justify;">কমরেড অজয় ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে চলতে থাকে নানকার কৃষকসহ সকল নির্যাতিত জনগনকে সংগঠিত করার কাজ। ১৯৪৭-এর আগেই অজয় ভট্টাচার্য আত্মনিয়োগ করেন নানকার প্রজাদের সংগঠিত করতে এবং একাধিকবার গ্রেপ্তার হন ব্রিটিশ ভারতের নিরাপত্তা আইনে। দেশ বিভক্তির আগে ও পরে দুই ভাগে সংঘটিত হয় রক্তক্ষয়ী ঐতিহাসিক নানকার বিদ্রোহ, যার অন্যতম রূপকার হলেন কমরেড অজয় ভট্টাচার্য। নিপীড়িত মানুষকে সংগঠিত করতে সে সময় অজয় ভিট্টাচার্যের সাথে কাজ করেছেন শিশির ভট্টাচার্য (লাউতা), ললিতপাল (লাউতা), জোয়াদ উল্ল্যা (নন্দিরপল), আব্দুস সোবহান (দক্ষিণ পট্টি) ও শৈলেন্দ্র ভট্টাচার্য (লাউতা) সহ আরও কয়েকজন। তাদের নেতৃত্বে নানকার কৃষক ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রকাশ্য বিদ্রোহ করে জমিদারের বিরুদ্ধে। বন্ধ হয়ে যায় খাজনা দেওয়া এমনকি জমিদারদের হাট-বাজারের কেনাকাটা পর্যন্ত বন্ধ করে দেয়া হয়। বিভিন্ন জায়গায় জমিদার ও তার লোকজানকে ধাওয়া করে তাড়িয়ে দেয়ার ঘটনাও ঘটে। এতে ভীত সন্ত্রস্থ জমিদাররা তৎকালীন পাকিস্তান সরকারের শরণাপন্ন হয়ে এ অঞ্চলের নানকার কৃষকদেরকে বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার আবেদন করে। জমিদারদের প্ররোচনায় পাকিস্তান সরকার বিদ্রোহ দমনের সিদ্ধান্ত নেয়।</div><br /><div style="text-align: justify;">১৭ আগস্ট ছিল হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের শ্রাবণী সংক্রান্তি। প্রথম দিনের উৎসব আরাধনা শেষে আগামী দিন মনসা পূজার সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করে গভীর রাতে বিছানার গা এলিয়েছেন সানেশ্বর উলুউরির মানুষ। ভোরে উঠে পূজা আর্চনা, আনন্দ উৎসব আরও কত কি ভাবতে ভাবতে গভীর ঘুমে ঢলে পড়ে সবাই। কিন্তু ভোরের সূর্য ওঠার সাথে সাথে পেটোয়া বাহিনী আক্রমণ করে সানেশ্বরে। ঘুমন্ত মানুষ ভীতসন্তস্ত্র হয়ে ঘুম ভেঙ্গে দিগবিদিক পালাতে তাকে। সানেশ্বর গ্রামের লোকজন পালিয়ে পার্শ্ববর্তী উলুউরিতে আশ্রয় নেয়। উলুউরি গ্রামে পূর্ব থেকেই অবস্থান করছিলেন নানকার আন্দোলনের নেত্রী অপর্ণা পাল, সুষমা দে, অসিতা পাল ও সুরথ পাল।</div><br /><div style="text-align: justify;">তাদের নেতৃত্বে উলুউরিও সানেশ্বর গ্রামের কৃষক, নারী-পুরুষ সরকারী বাহিনীর মুখোমুখি দাঁড়াবার প্রস্তুতি নেয় এবং লাটিসোটা, হুজা, ঝাটা ইত্যাতি নিয়ে মরণ ভয় তুচ্ছ করে সানেশ্বর ও উলুউরি গ্রামের মধ্যবর্ত্তী সুনাই নদীর তীরে সম্মুখ যুদ্ধে লিপ্ত হয় সরকারি ও জমিদার বাহিনীর সাথে। কিন্তু ইপিআরের আগ্নেয়াস্ত্রের সামনে লাটিসোটা নিয়ে বেশিক্ষণ টিকতে পারেনি কৃষকরা। ঘটনা স্থলেই ঝরে পড়ে ৬টি তাজা প্রাণ।</div><br /><div style="text-align: justify;">অজয় ভট্টাচার্য সিলেটের ঐতিহাসিক নানকার বিদ্রোহে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী নানকার বিদ্রোহের প্রাণকেন্দ্র ছিল লাউতা বাহাদুরপুর। ১৯৪৮ সালের মে মাসে গ্রেফতারের পূর্ব পর্যন্ত লাউতা বাহাদুরপুর কেন্দ্রিক পঁয়তাল্লিশ সদস্য বিশিষ্ট নানকার আন্দোলন সংগ্রাম পরিচালনা কমিটির সম্পাদক ছিলেন তিনি।</div><p></p><table align="center" cellpadding="0" cellspacing="0" class="tr-caption-container" style="margin-left: auto; margin-right: auto;"><tbody><tr><td style="text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgWFRKInLqmMlqYq1w5NXDR2KELy4nTl3SLrsJKW2ydDDoe0D52V74oz7eg3rXsXNq7jyq_-lm0iTv8gg2S0NIqd4Bd_jF1-nX2mgGf86HlXAz73alQnawOe7sQmcFsnExGgRB4aOywj11LdDeTent0jYNLn-m2Gb2YlaJSrPfpLG3KzdXyakE2YSQi/s700/%E0%A6%A8%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%B0-%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%A6%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A7%8B%E0%A6%B9-%E0%A6%B8%E0%A7%8D%E0%A6%AE%E0%A7%83%E0%A6%A4%E0%A6%BF-%E0%A6%B8%E0%A7%8D%E0%A6%A4%E0%A6%AE%E0%A7%8D%E0%A6%AD.jpeg" style="margin-left: auto; margin-right: auto;"><img border="0" data-original-height="394" data-original-width="700" height="180" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgWFRKInLqmMlqYq1w5NXDR2KELy4nTl3SLrsJKW2ydDDoe0D52V74oz7eg3rXsXNq7jyq_-lm0iTv8gg2S0NIqd4Bd_jF1-nX2mgGf86HlXAz73alQnawOe7sQmcFsnExGgRB4aOywj11LdDeTent0jYNLn-m2Gb2YlaJSrPfpLG3KzdXyakE2YSQi/s320/%E0%A6%A8%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%B0-%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%A6%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A7%8B%E0%A6%B9-%E0%A6%B8%E0%A7%8D%E0%A6%AE%E0%A7%83%E0%A6%A4%E0%A6%BF-%E0%A6%B8%E0%A7%8D%E0%A6%A4%E0%A6%AE%E0%A7%8D%E0%A6%AD.jpeg" width="320" /></a></td></tr><tr><td class="tr-caption" style="text-align: center;">নানকার বিদ্রোহ স্মৃতি স্তম্ভ</td></tr></tbody></table><h3 style="text-align: left;">নানকার দিবসঃ</h3><p style="text-align: left;"></p><div style="text-align: justify;">১৯৪৯ সালের ১৮ আগস্ট নানকারদের উপর পাকিস্তানি মুসলিমলীগ সরকারের ইপিআর, পুলিশ এবং জমিদারদের লাঠিয়াল বাহীনি সংঘবদ্ধ হয়ে সশ্রস্ত্র হামলা চালালে ৬ জন নানকার নিহত হন; তারা হলেন:</div><br /><div style="text-align: justify;">রজনী দাস (৫০) - ১৫ দিন আগে নিহত নদীর তীরে জমিদারের লাঠিয়াল বাহিনীর হাতে নিহত;</div>ব্রজনাথ দাস (৫০);<br />কুটুমনি দাস (৪৭);<br />প্রসন্ন কুমার দাস (৫০);<br />পবিত্র কুমার দাস (৪৫) ও<br /><div style="text-align: justify;">অমূল্য কুমার দাস (১৭) - পরবর্তী সময়ে বন্দী অবস্থান নিহত।</div><div style="text-align: justify;">এসময় পুলিশের অত্যাচারে নানকার নেত্রী অন্তঃসত্ত্বা অপর্না পালচৌধুরীর গর্ভপাত ঘটে ঘটনাস্থলে। বীভৎস অত্যাচারে তিনি পঙ্গু হয়ে যান। শ্রীহট্ট, রাজশাহী ও ঢাকা জেলে তিনি ৫ বছর বন্দী থাকেন৷</div><br /><p></p><h3 style="text-align: left;">প্রথার সমাপ্তিঃ</h3><p style="text-align: left;"></p><div style="text-align: justify;">১৮ আগস্ট, ১৯৪৯ সালে মানব সভ্যতার ইতিহাসে জন্ম নিয়েছিল এক নির্মম ইতিহাস। ১৯৩৭ সালের ঘৃণ্য নানকার প্রথা রদ ও জমিদারি ব্যবস্থার বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে ওইদিন সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার সানেশ্বর উলুউরি গ্রামের সুনাই নদীর তীরে পাকিস্তান ইপিআরের ছোড়া গুলিতে প্রাণ দেন পাঁচজন কৃষক। এর প্রায় ১৫ দিন আগে সানেশ্বরে সুনাই নদীর বুকে জমিদারের লাঠিয়ালদের হাতে শহিদ হন রজনী দাস। এ নিয়ে নানকার আন্দোলনে মোট শহিদের সংখ্যা হয় ছয়জন। আহত হোন হৃদয় রঞ্জন দাস, দীননাথ দাস, অদ্বৈত চরণ দাসসহ অনেকে। বন্দি হোন এই আন্দোলনের নেত্রী অপর্ণা পাল, সুষমা দে, অসিতা পাল ও উলুউরি গ্রামের প্রকাশ চন্দ্র দাস, হিরণ বালা দাস, প্রিয়মণি দাস, প্রমোদ চন্দ্র দাস ও মনা চন্দ্র দাস। এ ঘটনার পরেই আন্দোলনে উত্তাল হয় সারাদেশ। তাদের এই আত্মত্যাগের ফলেই ১৯৫০ সালে তৎকালীন পাকিস্তান সরকার জমিদারি ব্যবস্থা বাতিল ও নানকার প্রথা রদ করে কৃষকদের জমির মালিকানার স্বীকৃতি দিতে বাধ্য হয়। তাই বাঙালি জাতির সংগ্রামের ইতিহাসে, বিশেষ করে অধিকারহীন মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য যে সকল গৌরবান্বিত আন্দোলন বিদ্রোহ সংগঠিত হয়েছিল তাদের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে কৃষক বিদ্রোহ বা নানকার আন্দোলন।</div><br /><div style="text-align: justify;">নানকার বিদ্রোহের সকল শহীদ ও বিদ্রোহীদের জানাই লাল সালাম।</div><p></p><table align="center" cellpadding="0" cellspacing="0" class="tr-caption-container" style="margin-left: auto; margin-right: auto;"><tbody><tr><td style="text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgUq6B-Vvs-xSoXFt8EOUsWa71YYzLQpHUWPcs3XazB7660iRr69UYkKXHwM185ZHgAn0y_0e03FDvKoMfhWyedkCo6eEsxX2sDrBz7-PuMQlbkgDA4QN5boibcBilnHszLS0allV7jcwrDciPXQuXq7CDFdBLOijyKV0H1LXvNi9b8xqHApBrpska9/s640/%E0%A6%A8%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%B0-%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%A6%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A7%8B%E0%A6%B9-%E0%A6%B8%E0%A7%8D%E0%A6%AE%E0%A7%83%E0%A6%A4%E0%A6%BF-%E0%A6%AA%E0%A6%BE%E0%A6%A0%E0%A6%BE%E0%A6%97%E0%A6%BE%E0%A6%B0.jpeg" style="margin-left: auto; margin-right: auto;"><img border="0" data-original-height="480" data-original-width="640" height="240" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgUq6B-Vvs-xSoXFt8EOUsWa71YYzLQpHUWPcs3XazB7660iRr69UYkKXHwM185ZHgAn0y_0e03FDvKoMfhWyedkCo6eEsxX2sDrBz7-PuMQlbkgDA4QN5boibcBilnHszLS0allV7jcwrDciPXQuXq7CDFdBLOijyKV0H1LXvNi9b8xqHApBrpska9/s320/%E0%A6%A8%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%B0-%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%A6%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A7%8B%E0%A6%B9-%E0%A6%B8%E0%A7%8D%E0%A6%AE%E0%A7%83%E0%A6%A4%E0%A6%BF-%E0%A6%AA%E0%A6%BE%E0%A6%A0%E0%A6%BE%E0%A6%97%E0%A6%BE%E0%A6%B0.jpeg" width="320" /></a></td></tr><tr><td class="tr-caption" style="text-align: center;">নানকার বিদ্রোহ স্মৃতি পাঠাগার, সিলেট</td></tr></tbody></table>Unknownnoreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-462762004599772458.post-58107305023723827202022-08-17T15:09:00.005+06:002022-08-17T15:15:58.312+06:00অবহেলিত জীবন / খাদিজা জান্নাত রুপা<p> </p><div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEi3gyFi_6MfknGJ9OTw28Rl3SzvNiazCLLRIPok_zKieGSqoYmr_tDwHAG_iF7OK40Eub9RqwRNe26iT3E9iBbyOGsAFZgNtzqlrxPVLA7FTVO_wr961glN_hnKCC2sc3V76dNAThmRV3IEcxRy9U-0Y2LmvYu8QEFVoyedYQ7Iv1t86uH3uKOrW9sq/s1800/1599391663796.png" imageanchor="1" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img border="0" data-original-height="952" data-original-width="1800" height="169" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEi3gyFi_6MfknGJ9OTw28Rl3SzvNiazCLLRIPok_zKieGSqoYmr_tDwHAG_iF7OK40Eub9RqwRNe26iT3E9iBbyOGsAFZgNtzqlrxPVLA7FTVO_wr961glN_hnKCC2sc3V76dNAThmRV3IEcxRy9U-0Y2LmvYu8QEFVoyedYQ7Iv1t86uH3uKOrW9sq/s320/1599391663796.png" width="320" /></a></div><br />আমি সেই মেয়ে,যার জীবনের কোন মূল্য নেই,<br />এসেছি একা,যেতে হবে একা,জানি কোন একদিন।<br />জীবনের যত চাওয়া,পাওয়া সব দিয়েছি বির্সজন,<br />অপেক্ষায় আছি,সুখের আশায় আসবে কোন একদিন মাহিন্দ্র ক্ষন।<br />সুখ পাবো না,পাবো করি না তার আশা,<br />কর্মের উপর করি আমি একমাত্র ভড়সা।<br />বাঁচিলে মরিতে হয় এই কথাটি যেমন সত্য,<br />অপরিবর্তনীয় বানিটা আমরা সকলেই যেন মানি।<br />বাঁচি আর মরি করবো না কাউকে ভয়<br />অসম্ভব কে সম্ভব করব,এটাই বাঙলার জয়।<br />শ্রেণী:একাদশ<br />কুড়িগ্রাম সরকারি মহিলা কলেজ<p></p>Unknownnoreply@blogger.com0