সুশান্ত শাহীনের কবিতা ‘অনুভবে’

উৎসর্গঃ কামাল, আশীস (বলো), আসাদ, সমির

ভয়াল শব্দ, তীব্র চিৎকার
গগণ বিদারী আওয়াজ, বোমা বারুদের তীব্র শব্দে দিক বিদিক ছোটাছুটি
সহোদরের রক্তে ভেজা লাশ ।
বেঁচে থাকার সহজাত লড়াই ।
লাশের সৎকার অথবা দুঃখ প্রকাশ
নির্মম বিলাসিতা ---
ধর্ষিতার বুক ফাটা আর্তনাদ
সব ছাপিয়ে শুধু বাঁচার লড়াই ।

পুরে গেছে বাসস্থান, খাবার, পোশাক
পুরে গেছে ফসল, গবাদি
তার ও আগে পুরে গেছে মানুষের মন ।

বৃদ্ধ বাবা মা বোন সহ পদযাত্রা ।
গন্তব্য বাংলাদেশ ।

ওখানে মানুষ থাকে
মিলবে খাবার, পোশাক
মিলবে জিবনের নিশ্চয়তা ।

পথেই ধর্ষিতা মা বোন ।

অভিমান ক্ষোভ হতাশা ঘৃণা
অপাংতেয় সব ।
ইচ্ছে করেই ভুলে যাওয়া
ভুলে যেতে হয়
জিবনের তরে অথবা বেঁচে থাকার তাগিদে।
স্থল মাইনে আহত যুবক যুবতি
বৃদ্ধা অথবা শিশু অথবা সলীল সমাধি।
অথবা সাগরের অস্বীকারে ভেসে ওঠা লাশ
বৃদ্ধ যুবক শিশুদের লাশ ।
মানবতাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে বাতাসে গর্জন তোলে
পোড়া অথবা পচা লাশের গন্ধ  ।
কুকুরে কুকুরে যুদ্ধের দামামা  লাশের অধিকারে ।

জল স্থল পাহার পেরিয়ে
নির্ঘুম রাত নির্ঘুম দিন শেষে
বাংলাদেশ।
অনাহার অর্ধাহার পিপাশা রোগ শোক
এভাবেই টিকে থাকে সমাজ সভ্যতা দেশ।

কৃষকের রক্তে বাবার রক্তে তৈরি হয় সংবিধান ।
তৈরি হয় মানুষ হত্যার নিয়ম ।
শোষণ আর ধর্ষণের নিয়ম
তৈরি হয় এক একটি হালাকু
এক একটি চেঙ্গিস ।

তৈরি হয় ইয়াহিয়া, মীরজাফর, মোস্তাক।

অভুক্ত দুই দিন দুই রাত
অভুক্ত বাংলাদেশ ,অভুক্ত পৃথিবী,
পুরো মানব সভ্যতা ।
অন্ন বস্ত্র বাসস্থান হাহাকার সব ।
এখানে পানি নেই শিশুর দুধ নেই
বৃদ্ধার ওষুধ নেই ।

একটু তাকাও না আমার দিকে
আমাদের দিকে ।
সেলফি একটু পরেই তোল ।
ডাইরিয়া নিউমনিয়া ,প্রতিদিন খালি হচ্ছে মায়ের বুক ।

তীব্র চিৎকার ধনিত হচ্ছে আকাশে বাতাশে
অন্ন দাও বস্ত্র দাও বাসস্থান দাও ।
ভালোবাসো আমাকে ।
কিছু সময় থাক বৃষ্টি ভেজা রাতে ।
আমিত তোমারি সন্তান বাবা অথবা ভাই
বিপন্ন মানবতাই মেলে ধর মানবতা।

ভালবেসে নিঃস্ব হও রিক্ত হও ।
কুকুর অথবা পোষা বিড়ালের খাবার ই দাও
সুন্দর ঘর নাইবা দিলে একটি আশ্রয় দাও।
বন্ধ কর পারফিউম অথবা ডিনার
বেঁচে যাবে কত জীবন।

বন্ধ কর বানসন অথবা বারের উদ্দাম নৃত্য ।

কেন দাঁড়াবেনা আমার পাশে
ভু রাজনীতি অথবা অর্থনীতি -

তোমার সম্পদে আছে আমার ও অধিকার ।
আমি ও বাঁচতে চাই খেতে চাই
মানুষ হতে চাই
ফিরে এসো বন্ধুরা
সমবেত হও
হাতে রাখ হাত
রাজপথে নাম স্লোগান তোল
সুতীব্র চিৎকারে পৃথিবীকে জানাও
আমি নিরন্ন মানুষের দলে বঞ্ছিত এর দলে শোষিত এর দলে ।

ফিরে এসো কসিগিন
ফিরে এসো ইন্দিরা,মারকেল
দেখে যাও কি নিদারুন বাস্তবতা আর বেঁচে থাকা ।

ফিরে এসো রবি,হারিসন,লিয়ন
সুরের ঝঙ্কার তোল
কাপাও বিশ্ব বিবেক ।

জানো ইন্দিরা
তোমার পাশে দাঁড়ানো বৃদ্ধা দুই দিন অভুক্ত।
লজ্জায় আড়ষ্টতাই নিসচুপ নিস্তব্ধ

ও জানে না
ক্ষুধার্তের লজ্জা নেই দেশ নেই ।
আস্ত্রিতের কোন সম্মান নেই অধিকার নেই ।
মান অভিমান সব পুতিন ট্র্যাম্পের দখলে ।

জানো ইন্দিরা
বিপন্ন মানুষের পাশে শেখ হাসিনা
সীমাহীন ভালবাসায় অতিক্রান্ত সীমানা
যেভাবে অর্ধ শতাব্দী আগে তুমি ছিলে মানুষের পাশে
বুকফাটা  সাহসী উচ্চারণ " যদি বাংলার মানুষ খায় তবে তোমরা ও খাবে "

দেশকাল তোমায় ছুঁতে পারে নি
ছুঁয়েছে মানবতা, বিশ্ব ভ্রাতৃত্ব
নোবেল, পদ্মশ্রী, প্রেসিডেন্ট কোন পুরস্কারেই সীমিত নও তোমারা
বরং তোমায় ছাড়া শ্রীহীন নোবেল ।
আরো পড়ুন -->>

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ