যেভাবে লেখা হলো সাম্য রাইয়ানের দুইটি কবিতা: ‘গভীর স্বপ্নের ভেতর’ ও ‘বোধিদ্রুম’


  • গভীর স্বপ্নের ভেতর
    কবি সাম্য রাইয়ানের ছবি

কবিতাগুলো কি আসলে একটা ঘোরের মধ্যে লেখা হয়ে যায়? লেখাটা শেষ না হওয়া পর্যন্ত ঘোরটা থাকেই! তাহলে কি একটা ঘোর কেটে গেল মানে একটা কবিতা শেষ হল?

আমার মনে হয় এরকমই বিষয়গুলো ৷ দুই হাজার তের সাল প্রায় পুরোটাই একটা কবিতা আমাকে অদ্ভূত ঘোরগ্রস্ত করে ফেলেছিল ৷ প্রায় পুরো একটা বছর আমি টুকটুক করে একটা কবিতাই লিখেছি, ঘষামাজা করেছি ৷ কবিতাটা ‘ফ্রেশ এন্ড ফাইনাল' করার পর যে অদ্ভূত আনন্দ আমাকে শিহরিত করেছে, তা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না ৷ লেখাটার শিরোনাম ছিল, ‘গভীর স্বপ্নের ভেতর' ৷ আসলেই একটা গভীর স্বপ্নের ভেতর লেখাটা লিখেছিলাম ৷ প্রারম্ভে ষাটোর্ধ লাইন লেখা হলেও শেষ অব্দি বেয়াল্লিশে ঠেকেছিল ৷

কবিতাটির উৎসর্গে লেখা ছিলোঃ তার কোন নাম নেই৷

মধ্যরাত, ৩ জুলাই ২০১৪ খ্রিস্টাব্দ

  • বোধিদ্রুম
যারা আমার কবিতা ‘গভীর স্বপ্নের ভেতর' পড়েছেন, বিশেষত তাদের জন্য, তবে যারা পড়েননি, হতে পারে তাদের জন্যও, এটা একটা খবর বটে!

সেটা হল, নতুন কবিতা লিখেছি; ‘বোধিদ্রুম’ (দ্বিতীয়বার গভীর স্বপ্নের ভেতর)৷ ‘আপাতত ফ্রেশ এন্ড ফাইনাল' করতে এখনো পর্যন্ত মোট ছয়টা সংস্করণ করেছি৷ যথাসাধ্য সহজপ্রকাশের চেষ্টা এবারও অব্যাহত৷

প্রথমে ভেবেছিলাম এটি বুঝি প্রথমটির মতো দীর্ঘসময় (ঘোরগ্রস্থ প্রায় এক বছর) লাগল না শেষ করতে, মাত্র দেড় মাসেই হয়ে গেল৷ পরে মনে পড়ল এখানে কিছু লাইন, চিন্তাংশ ঢুকে গ্যাছে, যার কোনটা ছয়মাস কোনটা একবছর, আবার এমনকি সম্ভবত দুটো কি তিনটি লাইন সম্ভবত প্রায় এক/দেড়/দুই বছর আগেকার লেখা; হয়ত খাতার এককোনে আনমনে পড়ে ছিল; সেই স-ব জলপ্রবাহের মতো ঢুকে গ্যাছে পাড় টপকে৷

তাহলে বিষয়টা কি এরকম দাঁড়াল না যে আসলে এই কবিতার ভ্রুনটি আমি এক/দেড়/দুই বছর ধরে বহন করে চলেছি! আর ভেতরে ভেতরে এটি নিজেই যথোপযুক্ত অবয়ব গড়ে নিয়েছে, আমার অজান্তেই! আমি বুঝতেই পারিনি! বিচ্ছিন্নভাবে কিছু লাইন, যা আমি বিভিন্ন সময়ে লিখেছিলাম মনের খেয়ালে, তা-ই আশ্চর্যজনকভাবে ঢুকে গেল দ্বিতীয়বার গভীর স্বপ্নের ভেতর৷

‘গভীর স্বপ্নের ভেতর' এর সাথে মিল রেখে এটিকে ‘দ্বিতীয়বার গভীর স্বপ্নের ভেতর’ নামে ডেকে আমুদিত হলেও কোনটিই অপরটির অংশ/ভগ্নাংশ নয়, বরং স্বয়ংসম্পূর্ণ এবং আলাদা ৷ যদিও এভাবে বলছি তারপরও আবার এটাও মনে হয়, কোথাও যেন ভাবের একটা সুক্ষ সাযুজ্য আছে ৷ কী যেন এক গভীর যোগ আছে এ দুটোর মধ্যে; যা এখনো আমার কাছে অনাবিষ্কৃত ৷

মধ্যরাত, ১৮ জুলাই ২০১৪ খ্রিস্টাব্দ

[ফেসবুকে দুইটি স্ট্যাটাস হিসেবে প্রকাশিত৷ সেখান থেকে সংগৃহীত৷]

আরো পড়ুন -->>

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

3 মন্তব্যসমূহ

  1. কবির যাত্রা বোধ ও চিত্তের অনন্য ভিতরকার, সেখান থেকে উৎসারিত স্নায়বিক কোনো আলো সেই কবিতাপথের স্মারক নির্মাণ করে আবার কখনো-বা নির্মাণ করে বিরহবৃত্ত, আলো উপাদেয় সেইখানে, সেই আলোর অপার হাত ছুঁয়ে থাকে বিগতপ্রায় সমস্ত আঁধার আর স্মৃতির শ্লোক, ভালোবাসা হে কবি...

    উত্তরমুছুন
  2. সুন্দর অভিজ্ঞতা, কবির অভিজ্ঞতা তো এমনই হওয়া উচিত। আপনি যদিও কুড়িগ্রামে থাকেন, তবুও মনে করি আপনার জাতীয় পর্যায়ে সম্মানিত হবার যোগ্যতা আছে। আপনার অনুভূতি সকল হৃদয়প্রবণ মানুষের হৃদয়তরঙ্গ।

    উত্তরমুছুন
  3. একটা কবিতা লেখা যে কত কঠিন, তা আমি নিজে জানি। আমার চোখে আপনি যা লেখেন, তা খুবই সুস্বাদু ও আকর্ষণীয়। আপনাকে আমার ভালো লাগে সাম্যদা। আপনি ভালো থাকবেন এই আশা করি।

    উত্তরমুছুন

অনাকাঙ্ক্ষিত মন্তব্যের দায় মন্তব্যকারীর, সম্পাদকের নয়।