এতদসঙ্গে আরও জানিবা যে, যে হৃদয় নিয়া
প্রেম ও কাব্য করতেছিলো কবিজন,
হৃদ-স্পন্দনের আড়ালে বসিয়া মহাজন
কিন্তু দেখতেছিলেন দূরে, বহুদূরে সাত-সমুদ্রের ওপাড়ে নীল হাওয়া;
দেখতেছিলেন, হাওয়ায় পাল উড়ায়ে সপ্তডিঙ্গায়
চেপে শ্বেত বর্ণবাহক বণিকেরা হৃদয়ের বিকাশ ঘটাইতে
নদী ও খাল দিয়া ভাসতে ভাসতে
ঢুকে পড়তেছে দেশে দেশে, পশু-বিচরিত তামাটে ডাঙ্গায়।
ঢুকে পড়তেছে এই ভাটি দেশেও। অথচ তথ্য উৎপাদন
করে যারা নদীঘাটে, তারা নাকি দেখতেছিলো রবি-শস্যের ক্ষেত।
ফলে অবেলায় আজও পণ্যের বৃত্তান্ত সমেত
গভীর জলের নীচ থেকে উঠে আসতেছে কতো ভয়াবহ সব বিজ্ঞাপন।
তোমার জননী কিন্তু তখন বণিকদের সপ্তডিঙ্গা দেখি
ভাবতে ছিলেন ফিরে আসতেছে বুঝি চাঁদ বেনে।
অচিরাৎ তিনি বুঝতে পারেন তাঁর ভুল, চোখ বুজে অহেতুক টেনে
আনতে ছিলেন অভিশাপরহিত দিন মনসা-কাল থাকি।
ওহ্! এরপরে ভয়ানক এক দুষ্কাল দেখছিলেন তিনি? জলের নিচেই
পুত্র ও কন্যারা তাঁর মৎস্য-আকৃতির
প্রাণী হয়ে জং ধরা ঢেউয়ে গা ঘষে ঘষে শ্যামল মাটির
গন্ধ তুলে ফেলতেছে। তাই দেখি জননী মূর্ছা যান নদীপাড়েই।
পুনশ্চঃ এ মর্ম বেদনার কথা কিছুমাত্র বোধগম্য হয় যদি, যদি পত্রপাঠে
কিছু অনুতাপ জাগে, ফিরিয়া আইসো তবে জননীর কাছে। শুশ্রুষায়
আর ভালবাসায় তাঁকে ব্যাধিমুক্ত করো যদি, তবেই ঘুচবে জলের তলায়
পুত্র-কন্যাদের মৎস্য দশা, হরিৎ-বংশের দিন প্রণয় ছড়াবে বিধবা মাঠে।
ঢাকা
১০ সেপ্টেম্বর, ২০২০ খ্রিস্টাব্দ।
আরো পড়ুন -->>
1 মন্তব্যসমূহ
সুখপাঠ্য কবিতা। মর্ম ছুঁয়ে গেল। সম্পাদকের কাছে এই কবির আরও কবিতা প্রকাশ করার আহ্বান জানাই। এরকম আরও কবিতা পড়তে চাই।
উত্তরমুছুনঅনাকাঙ্ক্ষিত মন্তব্যের দায় মন্তব্যকারীর, সম্পাদকের নয়।