“মার্কস যদি জানতেন”
আদিবা আমাকে মাঝে মাঝেই প্রশ্ন করে, 'ভালো মানুষ মরে গেলে বৃষ্টি হয় কেনো?'
ওকে বলি, 'মানুষ প্রকৃতির সেরা সন্তান- সেরা কিছু হারালে তাই প্রকৃতি কাঁদে, এপিটাফে রঙধনু এঁকে দেয়।'
কাঠেরপুল মোড়ে দাঁড়িয়ে মাগরিবের আজান শুনছি- গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। এই শহর থেকে নিয়ন বাতিগুলো মুছে যাচ্ছে- আমার কষ্ট হয়।
- মাফ করবেন, আমি কি একটু সাহায্য পেতে পারি?
ভাঙা ভাঙা ঘরঘরে গলায় ভীষণ দ্বিধা নিয়ে যিনি প্রশ্নকর্তা- তাঁর তামাকের পাইপটা নিভে গেছে। এবং আমার মনে হচ্ছিল, তিনি তবুও টানছেন। বেশ উস্কোখুস্কো কাঁচাপাকা দাড়ি।
- নকশালের দিন আর স্টাইল বহু আগেই চলে গেছে- তবুও আপনি এভাবে কম্বল টাইপ চাদর মুড়ি দিয়ে আছেন কেন? ওটা থেকে বোঁটকা গন্ধ আসছে।
- মাফ করবেন, আমি কি একটু সাহায্য পেতে পারি?
লোকটা ত্যাঁদড় আছে! তাঁর বিদিক চাদরের নীচের দিকে ওভারকোটের অংশ দেখা যাচ্ছে। বাংলাদেশে সাধারণত কেউ ওভারকোট পরে না।
দু'কাঁধ কিছুটা ঝাঁকিয়ে বললাম, 'বই প্রকাশ করবেন? পাণ্ডুলিপি রেডি? গল্প, উপন্যাস না কবিতা? কত ফর্মা করতে চাচ্ছেন? শুনুন, প্রচ্ছদে কিন্তু আমি ছাড় দেবো না।'
এবার ভদ্রলোকের দাড়ির ফাঁকে স্মিত হাসি দেখা গেলো, 'আপনার কাছে সবাই কি বই করতেই আসে? আমার কিছু ভাঙতি দরকার- কোথাও পাচ্ছি না।'
- হ্যালো কার্ল, আপনি জানেন জারের আমল চলে গেছে- এমনকি লেনিন, স্ট্যালিনও। আপনার মুদ্রা বিনিময়যোগ্য নহে।
উনি চোখ দুটো প্রায় দু'হাতে নিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে রইলেন। আদি-অন্ত ভাবমার্কা লুক নিয়ে বললাম, 'সমস্যা নেই, আর কেউ জানে না।'
- তু...তু...তুমি... আপনি...
- গ্যাব্রিয়েল, এসেছিল। বলল কিছুক্ষণ পর আপনি এই কিম্ভুত প্যাটার্ন নিয়ে আসবেন। এজন্যই দাঁড়িয়ে ছিলাম। ইউ নো বস, আমি জানতাম! আমাকে তুমি করেই বলুন।
- গ্যাব্রিয়েলের সাথে তোমার ভালো সম্পর্ক?
- তাঁকে আমি ভালোবাসি, সে'ও।
আমরা পরস্পর তখন সহজে হাসছি। বিন্দু বিন্দু করে জমে জল- আমরা আলাপ বাড়াই। কে কেমন আছেন- আইনস্টাইন অথবা রবীন্দ্রনাথ। "রাত বাড়ছে, হাজার বছরের পুরনো সেই রাত"। মন্তু আর টুনির জন্য আমার কষ্ট হয়।
- তোমাকে বিব্রত করার জন্য দুঃখিত। আদতে আমার ভাঙতির প্রয়োজন নেই। বিষণ্ণ "লোকাল ট্রেনের জার্নাল" ধরে হেঁটে যেতে পারব আমি। জানো তো, মৃতদের ক্ষুধা, অবসন্নতা থাকে না! তোমাকে দেখতে চেয়েছিলাম, নন্দিত অথবা নিন্দিত মাহাদী আনাম।
- কার্ল, আপনি মৃত?
- তা নাহলে "বিগত রাইফেলের প্রতি সমবেদনা" কেনো লেখা হলো?
- আমার রাইফেল দারুণ লাগে, উইনচেস্টার রাইফেল। দেখুন, কেউ আপনাকে না বুঝলেও আপনি সত্য। সত্যের কোনো সঙ্গী কিংবা প্রমাণ দরকার হয় না।
তিনি বাচ্চাদের মতো মাথা দোলান- আমি আনন্দ পাই।
- আমি কি আপনাকে কিছুটা এগিয়ে দেবো?
- নাহ, আচ্ছা শেষ প্রশ্ন, তুমি আমাকে দেখতে পাচ্ছ কী করে? তোমার সানগ্লাস?
হো হো করে হেসে উঠলেন, 'কিছুতেই মাথায় আসছিল না- রাতে, বৃষ্টিতে কেনো এটা পরে আছ তুমি! কই পেলে এ বস্তু? গ্যাব্রিয়েল?'
আমার ছাতা নেই। ভিজতে ভিজতে বাসায় ফিরি। আমি একবারও পিছনে তাকাই না। কানে হুইসেল তোলে "কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস"। আমি জানি, সাম্য রাইয়ান কখনও মাথা নীচু করে হাঁটে না।
আরো পড়ুন -->>
12 মন্তব্যসমূহ
অনবদ্য আলোচনা৷ কিন্তু কিসের আলোচনা বুঝলামনা৷
উত্তরমুছুনএটা গল্প
মুছুনদারুণ
উত্তরমুছুনঅসাধারণ
উত্তরমুছুনমাননীয় সম্পাদক মহোদয়, ইহা কী জাতীয় রচনা তা আমি বুঝিতে সক্ষম হইলাম না। উপরে একজন বলিয়াছেন যে ইহা গল্প, কিন্তু আমার নিকট ইহা তেমন করিয়া হৃদয়ঙ্গম হইল না। মনে হইতাছে ইহা কোন উপন্যাসের ভূমিকা, কিংবা অর্থহীন কিছু একটা হিসাবে পরিগণিত হইল। না গল্প, না উপন্যাস, না নাটক, না কবিতা, না ছড়া, না প্রবন্ধ, না আত্মজীবনী কীঈঈঈ যে লিখিত হইয়াছে তাহার দায়ভার জ্ঞানবান সম্পাদক মহোদয়ের করকমলে উপস্থাপন করিলাম।
উত্তরমুছুনএটা অনেক উন্নতমানের লেখা় তুমি বুঝবা না পরী৷ তুমি বোট ক্লাবে যাও৷ এখানে আসছো কেন অশিক্ষিত মেয়ে৷ এটা সাহিত্যিকপাড়া৷ এখানে আমরা থাকবোো৷ তোমার মত নায়িকারা na
মুছুনএই খানে এই রকম মন্তব্য করবেন না
মুছুনলেখা নিয়ে আলোচনা করুন
বই নিয়ে আলোচনা করুন
নয়ন সরখেল
সম্পাদক
অনশীলন।
পরী i love you������
মুছুনইহা একটি
উত্তরমুছুনগল্প
ভালো করে
মনোযোগ দিয়ে পড়ুন
বুঝতে পারবেন
ধন্যবাদ
ভালো থাকবেন
সম্পাদক
অনশীলন।
ধন্যবাদ
উত্তরমুছুনধন্যবাদ
উত্তরমুছুননায়িকা ছারা যে সাহিত্য তার কোন মূল্য আছেনি? এইজন্য তো আপনারা সাহিত্যবোঝেননা, খালি আকাইম্যা ফালাফালি করেন৷ পরিমনি ,আপনে কিছু মনে কইরেননা৷ আই ফান ইউ৷
উত্তরমুছুনঅনাকাঙ্ক্ষিত মন্তব্যের দায় মন্তব্যকারীর, সম্পাদকের নয়।