কবিতা : শূন্য হাওয়ার সঙ্গী
আমি বিলের জলে ডুব দিতে উদ্যত
এক পানকৌড়ির জলজ সময়ের মত; আর
শক্ত কাঠে বারংবার ঠোকরাতে ঠোকরাতে
ঠোঁটব্যথা এক কাঠঠোকরার মত একা।
আমার কোনো প্রচার সম্পাদক নেই,
একদল মোসাহেব আমার নামে চাটুগান গায় না,
কারণ,চাটুভাষীরা আমার কাছে,ক্রমাগত মিসকোট করতে থাকা
নিন্দুকের চেয়েও নিম্নস্তরে অবস্হান করে।
যেহেতু আমি সবার বন্ধু,
আমার কারও শত্রু হওয়ার নিয়ম নেই;
তাই আমার আবির্ভাবের পর
ধরণী একুশ বার রবিকে চক্কর মারলেও
আমার ঘনিষ্ঠ বলতে কোনো বন্ধু নেই।
আমার কোনো শিক্ষাগুরু নেই,
আমি জাতির বিবেকের ছদ্মবেশে
ভং ধরে থাকা ভণ্ডদের
মুখোশের আড়ালের মুখটি প্রত্যক্ষ করেছি।
এমনকি আমার শুভাকাঙ্ক্ষীরা
আমাকে ক্রমান্বয়ে
গুটিয়ে যেতে বলে,
লুকিয়ে যেতে বলে!
আমি অবাক হই,বিস্ময়ে হতবাক হই,
আমি অবিরত,অনর্গল লাগামহীন সত্য বলবই।
না,আমি ভয় পাই না,এক বিন্দুও না -
যেহেতু দেখেছি ভারী ভারী জ্যান্ত লাশকে নিঃশব্দে ডুবে যেতে
নিঃশেষ হয়ে যেতে,নিমিষেই ক্ষয়ে যেতে।
আর দেখেছি প্রায় ভরহীন শাপলাকে
অভিকর্ষ বলকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে
পানির আণবিক আবদ্ধতাকে ভেদ করে
মেরুদণ্ড সোজা করে সৌন্দর্য ছড়াতে।
যখন জেনেছি স্বয়ং আল্লাহ
ন্যায়ের পথে থাকতে বলেছেন,
সত্যের রথে চড়তে বলেছেন;
তখন আর ভয় বলতে কিছু নেই।
হোক না আমার চলার সঙ্গী শূন্য হাওয়া,
লোকের মত করবে না সে ছক বদলের আসা-যাওয়া।
কবিতা : পরিবেদনা
বহু বৎসর বয়ে গেল
ভালোবাসার উচ্চারণ শুনি না,
প্রায় বিস্মৃত এক চারণ কবি
ঘোর লাগা প্রহরে রচেছিলেন কিছু গান,
সেগুলোই কেউ সুর তুলছে,
তাই নিয়ে করছে দিন গুজরান।
শহুরে ডাস্টবিনের তাবৎ খাবার
কুড়ানিরা সাবাড় করে দিলেও
মড়কের প্রাকমুহূর্তের আতঙ্কে
ক্ষুধাতুর কাকের পরিবেদনা গলায় আটকে যাচ্ছে।
মানুষ কি তবে ভুল পথে এগোলো?
সময় তো আর তৈলাক্ত বাঁশ নয়
যে কিছুদূর গিয়ে আবার পূর্বকালে আসা যাবে।
যুদ্ধ রাঙাতে সৃষ্ট জীবাণু যদিওবা ভুলক্রমে
প্রাণ পেয়ে যায়,বেঁচে ফেরা যায় কি কোনোক্রমে?
আত্মীয়ের মুখ না চিনবার খেসারতই
মানুষ যুগ যুগ ধরে দিচ্ছে,
আত্নীয়ের জন্য জীবাণু রান্নার খেসারত
কীভাবে ভোগাবে মানুষকে?
তবে কি ভুল পথে এগোলো মানুষ?
কবিতা : চিঠি
যদিও মেঘের রাত,
যদিও কোথাও লুকিয়ে আছে চাঁদ,
তবু খুঁজে পাবে আমায়
মুছে যাবে সকল ব্যথা-অবসাদ;
যেমন মুছে যায় জিহ্বা হতে
আনকোরা হাতের রান্নার বিস্বাদ।
হয়তো কোনো কোণে
লোকচক্ষুর গোপনে
জোনাকির মত জ্বলব মিটিমিটি,
দেখা না গেলেও লেখা পাঠিয়ো
পাঠিয়ো মেঘপিয়নের কাছে চিঠি।
যদিও পথ আঁধারিয়া
বিজলি উঠিলে চমকিয়া
পায়ে পায়ে হাঁটব গুটিগুটি,
শোনা না গেলেও কথা পাঠিয়ো
পাঠিয়ো মেঘপিয়নের কাছে চিঠি।
আরো পড়ুন -->>
0 মন্তব্যসমূহ
অনাকাঙ্ক্ষিত মন্তব্যের দায় মন্তব্যকারীর, সম্পাদকের নয়।