মার্কস যদি জানতেন
কবি- সাম্য রাইয়ান
রিভিউ- অমিতাভ অরণ্য
অনন্ত ঘুমের ভেতরে আমি ঢুকে গেলাম,অসামান্য প্রেমের চোরাস্রোতে;বিলুপ্ত জীবাশ্মের বুকের পরে বসে,ধুসর অন্ধকারে দেখা হলো তোমার সাথে…
‘মৃত্যুপূর্ব গান’ ভারী হয়ে আসে নিপুণ শব্দখেলায় সাজানো উপক্রমণিকায়। তারপর ইতস্তত ভেসে বেড়ায় কিছু বিক্ষিপ্ত দৃশ্য। যে দৃশ্য উঠে আসে চেতনার অতীত থেকে, যে দৃশ্য ডিল্যুসিভ দ্যোতনায় দুলিয়ে দেয় মনকে। কি বলতে চাইছেন কবি? কি বুঝছেন পাঠক? খানিক দ্বন্দ্বে ভুগি— তারপর হাঁটি স্বতন্ত্র পাঠে। তখন কবিতা হয়ে ওঠে নিজস্ব।
বলছিলাম কবি সাম্য রাইয়ানের ‘মার্কস যদি জানতেন’ কাব্যগ্রন্থটির কথা। চোদ্দটি কবিতায় গোছানো বাঙ্ময় থেকে প্রকাশিত ষোল পৃষ্ঠার বইটির আনাচ-কানাচে কি যেন এক অবগুণ্ঠিত সুর গুনগুন করছে; অনভ্যস্ত কানে কিছুটা গুঞ্জরিত হয়— বাকিটা অব্যক্ত। তবু মোহময় আকর্ষণে ছুটতে থাকি আরো সামনে- কালো অক্ষর ভেদ করে।
কোনো চিহ্ন রাখবেন না ম্যাডামএটা দাস ক্যাপিটালের যুগঘরে ঘরে মার্ক্স ঢুকে যাবে…
‘ম্যাডামের দেশে’ শীর্ষক কবিতায় সতর্কবাণী জারি করেন কবি। মার্কস আসার আগেই যেন প্রতিশ্রুতির ডালিতে পূর্ণ হয়ে যায় জনতার জীবন। অথবা ম্যাডামের দেশে হয়তো প্রতিনিয়ত এমনটাই হচ্ছে। পড়তে পড়তে ম্যাডামকে কি বড্ড চেনা চেনা লাগে?
এই যে চায়ের দোকান। খুব পরিচিতদেখা হলে কথা হয়। চলে গেলে ওইচেয়ারে টেবিলে অন্য কুটুম বসে।
মার্কস যদি জানতেন প্রচ্ছদ: রাজীব দত্ত |
শুকনো পাতারা ঝরে পড়ার কালে মাঝপথে হাওয়া লেগে আবারো উড়ে গ্যাছে অন্য পথে, ভিন্ন গতিতে;মৃত্যুর মতো বদলে গেছে তারা প্রভিন্ন আঙ্গিকে…
পড়তে পড়তে চোখের সামনে ভেসে ওঠে দৃশ্যপট; কবির কনটেক্সট আর পাঠকের কনটেক্সট কি সর্বদা এক হয়? কবি যে ছবি আঁকেন, পাঠকের অন্তর হয়তো খুঁজে নেয় তার চেয়ে ভিন্ন কিছু।
সাম্য রাইয়ানের পঙক্তিগুলোও এমন বিভ্রান্তিময়- কখনো সংশয়-পাখি উড়ে যায় আকাশ-সীমান্তে, কখনো ভেসে আসে সিরাজ শিকদারের ক্ষীণ স্পষ্ট আওয়াজ, কখনো বা আত্মপরিচয়ের খোজে নামেন কবি। তিনি কি মানুষ? নাকি না-মানুষ? বিভ্রান্তির দোলাচলে কবি ঘোষণা দেন-
কে বললো আমি মানুষ! আমি তো মানুষ নই। কেবল মানুষের মতো দেখতে।
অসংখ্য আপাত বিসদৃশ দৃশ্যপট জোড়া দেওয়া; হয়তো তার অন্তর্নিহিত অন্য কোনো অর্থ আছে, হয়তো নেই... কখনো তা দুর্বোধ্য, কখনো বা অগম্যও। ঠোকর খেয়ে ফিরে আসতে হয় দরজা থেকে।
আধুনিক কাব্যজগতে মনে হয় কবির দায়িত্ব ‘লেখা’ পর্যন্তই; অধিকাংশ ক্ষেত্রে তারা কবিতা-বান্ধব, পাঠক-বান্ধব নয়। কবিতা পড়তে গেলে মস্তিষ্কের ব্যবহার অত্যাবশ্যক। কিন্তু প্রতিটা কবিতা পড়তে গেলে যদি আলাদা থিসিস করে নিতে হয় তার উপর, তাহলে পাঠক কাব্য বিমুখ হবেই।
সাম্য রাইয়ানের কবিতা সে দায় থেকে মুক্ত না হলেও, তার কবিতায় মুক্ত আকাশ নেহাত কম নয়। তাই হাঁপিয়ে গেলে সেখানে ডানা মেলে দেওয়া যায়। তার কবিতা তাই পাঠক নিজের মনে দৃশ্যায়িত করে নেয়। সাম্য রাইয়ানের কবিতা পাঠকের মস্তিষ্কে উসকে দেয় কোনো এক একান্ত অনুভূতি।
- মার্কস যদি জানতেন
- এক ফর্মার কবিতার বই
- বইটি গণঅর্থায়নে বাঙ্ময় থেকে প্রকাশিত
- বিনিময় তিরিশ টাকা
আরো পড়ুন -->>
3 মন্তব্যসমূহ
এ! এইটা কুন কবিতা হইল। এমনে কবিতা আমরাও লিখবার পারি।
উত্তরমুছুনমার্কস যদি জানতেন, তিনি যদি বুঝতেন, লাল চা কি খাইতেন, কি যে তিনি কইতেন?
আর শুকনো পাতায় তো নুপুর বাজে, অন্য কিছু কইলেই হইল নাকি? ধুর! নিম্ন কবির নিম্নমানের কবিতা। একজন লেখছে আর সম্পাদকও যেমন, ছাপাই দিছে।
আমিও লিখলাম - মাকস যদি জানতেন, পানগুযা খাইতেন, আমারে কি চিনতেন, কি কথা সে কইতেন৷
মুছুনপরী তুমি আর লুঙ্গি ড্যান্স দিও না
মুছুনঅনাকাঙ্ক্ষিত মন্তব্যের দায় মন্তব্যকারীর, সম্পাদকের নয়।