অনুগল্প: ইঙ্গিত- মোছা:নুসরাত জাহান



কিছুদিন পরেই বিয়ের একবছর পূর্ণ হতে চলেছে। কিন্তু ইতোমধ্যেই সংসার, শ্বশুরবাড়ির প্রতি মহাবিরক্ত মোহনা। গ্রামে বড় হলেও মুক্ত পরিবেশ পেয়েছিল সে। প্রচলিত রিচুয়ালগুলো কুসংস্কার বলেই উড়িয়ে দিয়েছে সবসময়। কিন্তু কে জানত শহুরে শাশুড়িও অতিরক্ষণশীল মানসিকতার মানুষ হবেন।


এইতো সেদিন শোভন বাজারে যাচ্ছিলো। কিছু একটা আনতে বলবে জন্য ডাক দিয়েছে মোহনা, অমনি পিছুডাক দেওয়ার জন্য তুলকালাম বাধিয়ে ফেলে শাশুড়ি। আবার কিছুদিন আগে ভোরবেলা উঠান ঝাড়ু দিচ্ছিলো, এমন সময় ফোনটা বেজে ওঠে। ঝাড়ু রেখে ফোন রিসিভ করতে রুমে যাওয়া মাত্রই শাশুড়ির চিৎকার। সকালবেলা উঠেই চোখের সামনে ঝাড়ু! কেমন বউ যে রুমের একেবারে সামনেই ঝাড়ু রেখে দিয়েছে। সন্ধ্যার পর চুল আঁচড়ানো যাবে না, এছাড়াও কড়াইতে তেল আগে দিবে নাকি লংকা আগে দিবে এমন ছোটখাটো বিষয়গুলোতেও নাজেহাল অবস্থা। এই কিছুদিনের সংসার জীবনেই হাঁপিয়ে উঠেছে মোহনা।


সেদিন সন্ধ্যাবেলা শ্বশুর মশায়ের সামনে ঠক করে চায়ের কাপটা রেখে রান্নাঘরের দিকে পা বাড়ায় মোহনা। শ্বশুর মশাই আন্দাজ করতে পারেন অবস্থাটা। কারণ কিছুক্ষণ আগে রান্নাঘর থেকে শাশুড়ি-বৌয়ের ঝাঁঝালো আওয়াজ কানে এসেছে। তিনি মোহনাকে ডাকেন, "অনেক তো হলো, এবার নিজের সার্টিফিকেট গুলোকে কাজে লাগাবার চেষ্টা কর দেখি। নাহলে তুইও একদিন তোর শাশুড়ির মতো কুটনি বুড়ি হয়ে যাবি।" কথাগুলো বলে মুচকি হাসি দিয়ে চায়ের কাপ হাতে তুলে নেন তিনি।   

ঘটনার আকস্মিকতায় অবাক মোহনা। চোখে জল চলে আসে। অগাধ স্নেহের প্রশ্রয়ে তার সামনে দেখা দেয় উজ্জ্বল ভবিষ্যতের ইঙ্গিত। 



আরো পড়ুন -->>

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ